Advertisement
E-Paper

Chittagong Fire: দুর্ঘটনা বদলে দিয়েছে গোটা এলাকার ছবি, ‘জতুগৃহ’ সীতাকুণ্ড ছাড়ছেন শ’য়ে শ’য়ে মানুষ

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ওই গুদামে থাকা কয়েকশো কন্টেনারের মধ্যে মাত্র চারটিতে ছিল হাইড্রোজেন পারক্সাইডের মতো ভয়ঙ্কর রাসায়নিক।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০২২ ০৬:২৬
সোমবারেও জ্বলছে আগুন। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে।

সোমবারেও জ্বলছে আগুন। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে। ছবি: বাচ্চু বড়ুয়া

শনিবার থেকে সোমবার— তিন দিনের অভিজ্ঞতায় বদলে গিয়েছে চট্টগ্রামের মাঝারি গঞ্জ শহর সীতাকুণ্ড। একটি কন্টেনার গুদামের অগ্নিকাণ্ড যেন রাতারাতি স্বস্তি কেড়ে নিয়েছে বাসিন্দাদের। বস্তুত এমন গুদাম সীতাকুণ্ডে রয়েছে বেশ কয়েকটি। কয়েক একর জায়গা জুড়ে এক একটি কন্টেনার ডিপোকে এখন এক একটি জতুগৃহ বলে মনে করছেন মানুষ। অনেকে বাড়িঘর ছাড়ছেন। কেউ কেউ সরব জনবহুল এলাকা থেকে এই গুদামগুলি সরানোর দাবিতে।

এই সবের মধ্যেই শনিবার রাতের আগুন কিন্তু সোমবারেও ধিকিধিকি জ্বলেই চলেছে। তবে ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, আর কোনও দেহ হয়তো সেখানে নেই। সোমবার নতুন করে কোনও বিস্ফোরণও ঘটেনি। পুলিশ জানিয়েছে, যে কয়েকশো কন্টেনার এই গুদামে ছিল, তার মধ্যে মাত্র চারটিতে ছিল হাইড্রোজেন পারক্সাইডের মতো রাসায়নিক। কিন্তু গোটা ডিপো ছারখার করে দিতে সেটাই ছিল যথেষ্ট। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে আনা বিভিন্ন দেশের কন্টেনার যেমন এই সব ডিপোয় থাকে, রফতানির উদ্দেশ্যে জাহাজে ওঠার জন্য আসা কন্টেনারও রাখা হয় এখানে। শনিবার আগুন লাগার সময়ে গুদামের মধ্যে কাজের ব্যস্ততা ছিল চরমে। বহু শ্রমিকের সঙ্গে ছিলেন শ’দেড়েক ট্রাকচালক। বেঁচে ফেরা শ্রমিক ইকবাল শেখ জানিয়েছেন, মুহূর্তের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ে বিস্তীর্ণ এলাকা দাউদাউ করে জ্বলতে থাকে। তাঁর চোখের সামনে ঝলসে মারা যান তিন সহকর্মী। তিনি কোনও রকমে সরে গিয়ে প্রাণে বাঁচলেও পিঠ ও হাত ঝলসে যায়। তার পরে একটার পর একটা কন্টেনার বোমার মতো ফাটতে থাকে। কী ভাবে উদ্ধার হয়ে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ পর্যন্ত গিয়েছেন, মনে করতে পারছেন না প্রৌঢ় ইকবাল।

রবিবার রাতে চট্টগ্রাম পুলিশ ও মেডিক্যাল কলেজ মিলে আগুনে পুড়ে মৃতের সংখ্যা ৪৯ বলে জানিয়েছিল। এ দিন পর্যালোচনার পরে মেডিক্যাল কলেজের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামিম আহসান জানান, সরকারি ভাবে মৃতের সংখ্যা ৪১ জন। শব গণনার পরে এই সংখ্যা নির্দিষ্ট করা হয়েছে। পুলিশও এই সংখ্যাই মেনে নিয়েছে। পরিচালক জানান, গুরুতর জখম ১৪ জনকে হেলিকপ্টারে করে ঢাকার বার্ন ইনস্টিটিউটে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। মেডিক্যাল কলেজে মেঝেতেও রোগীদের রাখতে হয়েছে। চট্টগ্রামের কয়েকটি বেসরকারি নার্সিং হোমেও পুড়ে যাওয়া রোগীদের চিকিৎসা হচ্ছে। এই চিকিৎসার খরচ সরকার জোগাবে বলে ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

যে গুদামে অগ্নিকাণ্ডটি ঘটেছে, সেটি অনুমোদন ছাড়াই চলছিল বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের এক কর্তা। তবে গুদাম কর্তৃপক্ষ তা অস্বীকার করে পুলিশের কাছে তাঁদের সব কাগজপত্র দেখিয়েছেন। সোমবার থেকে শুরু হয়েছে নিখোঁজদের স্বজনদের শরীর থেকে ডিএনএ-র নমুনা সংগ্রহের কাজ। পুড়ে আংরা হয়ে যাওয়া দেহগুলির সঙ্গে সেগুলি মিলিয়ে পরিচয় নিশ্চিত করার চেষ্টা হবে। এমনই একটি সাত মাসের শিশু হাসপাতালের বিশেষ শিবিরে এসেছিল ডিএনএ-র নমুনা দিতে। তার বাবা রয়েছে নিখোঁজের তালিকায়। হাসপাতাল চত্বরে সেই সময়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন অনেকে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তেফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ

chittagong Fire Accident
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy