Retired living goddess Preeti Shakya and few facts about Kumari Devi of Nepal dgtl
kumari devi
১১ বছর বয়স পর্যন্ত দেবত্ব, রহস্যে ঘেরা নেপালের এই কুমারী দেবীর জীবন
স্বাভাবিক জীবনে ফিরে বন্ধুত্ব করতেও ভয় পেতেন প্রীতি। কারণ ১১ বছর পর্যন্ত মাটিতে পা দিয়েই হাঁটেননি তিনি। গাড়ি দেখলেও থাকতেন আতঙ্কে, কারণ এর আগে পর্যন্ত সবসময় প্রীতি হাঁটতেন লাল কার্পেটের উপরে। খালি মেঝেতে যে দেবী পা রাখতে পারেন না।
সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৯ ১০:১০
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৪
নেপালের জীবন্ত দেবীর কথা শুনেছেন? তাঁর বয়স এখন ২২। দেবতা থেকে এবার সাধারণ মানুষের জীবনে ফিরছেন এক দেবী। এর মানে কী?
০২১৪
তিন বছর বয়সে নেপালের কুমারী দেবী হিসাবে তাঁকে নির্বাচিত করা হয়েছিল।নেপালের কয়েক শতকের প্রথা এটি। দুর্গারই অন্য রূপ এই কুমারী। কিন্তু এই কুমারীদের জীবন ঘিরে রয়েছে রহস্য। সেগুলো কী ?
০৩১৪
প্রথম ঋতুস্রাবের আগে পর্যন্ত প্রীতি শাক্য নামের একটি মেয়েকেও এরকম কাঠমান্ডুর জীবন্ত দেবী কুমারী হতে হয়েছিল। ঋতুস্রাবের পরে তিনি ফিরে যান সাধারণ জীবনে। বাছাই করা হয় নতুন কুমারী।
০৪১৪
কিন্তু কুমারী হতে গেলে মানতে হয় নানা রকম কঠিন প্রথা। তিন বছর বয়সে প্রীতিকে যখন নির্বাচিত করা হয়েছিল তখন তাঁর চোখের রঙ, কণ্ঠস্বর, চুলের রঙ ও হাঁটাচলার মতো ৩২টি বৈশিষ্ট্য বিচার করে কয়েক হাজার শিশুর মধ্যে তাঁকে নির্বাচিত করা হয়েছিল। এতেও রয়েছে রহস্য।
০৫১৪
শুধু তাই নয়, কয়েকশ পশু বলি দেখেও নাকি যে শিশু কাঁদবে না, বিচলিত হবে না, অন্ধকার ঘরে রক্ত কিংবা সাপ দেখে ভয় পাবে না, এমন কিছু নির্ধারিত মাপকাঠিও রয়েছে।
০৬১৪
প্রীতির হাসির জন্যই কুমারী দেবী হিসাবে তাঁর ছবি নেপালের অসংখ্য পর্যটকের কাছে বিক্রিও করা হয়েছে নেপালের সবচেয়ে জনপ্রিয় জীবন্ত দেবী রূপে।
০৭১৪
প্রথম জীবনে বাবা-মায়ের থেকে বিচ্ছিন্ন থাকতে হয়েছিল। চোখে মাসকারা ও লাল-সোনালি পোশাকে ফুল-মালা পরে সারাক্ষণ থাকতে হয়েছে থাকে। ১১ বছর বয়স পর্যন্ত বছরে মাত্র একবার ছাড়া কুমারী ঘর প্রাসাদের বাইরে কোনওদিনও বেরোতে পারেনি সে। পড়াশোনাও সেখানেই। কিন্তু কুমারী ঘরে আর কী রয়েছে, তা জানা যায়নি।
০৮১৪
প্রীতি তিন বছর বয়সে যখন কুমারী দেবী হল, সপ্তাহে এক বার বাবা-মাকে দেখতে পেত সে। তবে মা রীনা সেখানে যেতেন ভক্ত হিসাবে। প্রীতির দিদি এক মাত্র শনিবার খেলার সুযোগ পেতেন।
০৯১৪
সবাই সারাক্ষণ আদর-যত্নে আগলে রাখতেন তাঁকে। প্রথম বার স্কুলে গিয়ে বকা খেয়ে ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন, কারণ দেবী নয়, আসলে যে তিনি মানুষ, তা প্রথম বুঝতে পারলেন প্রীতি।
১০১৪
কয়েক লক্ষ লোক রোজ কুমারীকে এক ঝলক দেখার জন্য ভিড় করতেন। প্রীতি কলেজে পড়েছেন বর্তমানে। তাঁর মা রীনা শাক্য প্রথম দিকে ভয় পেয়েছিলেন। ভেবেছিলেন মেয়ে কী ভাবে স্বাভাবিক জীবনে ফেরত আসবে।
১১১৪
বাবার মতোই থাঙ্কা শিল্পী হতে চান প্রীতি। পরিবারকে পেয়ে তিনি খুশি। তবে কুমারী জীবন একেবারে অন্যরকম বলে প্রীতি জানালেও তা নিয়ে আর কিছু বলতে চাননি তিনি। রহস্যেই রেখে দিয়েছেন।
১২১৪
এক বার কুমারী দেবী থেকে অবসর নিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরলে মাসিক ভাতার বন্দোবস্তও থাকে আজীবন, এই পরিমাণ সঠিক কত জানা না গেলেও ভারতীয় মুদ্রায় বার্ষিক প্রায় কয়েক লক্ষ টাকা। মানবাধিকার কর্মীরা শৈশব কেড়ে নেওয়া হচ্ছে অভিযোগ করে কাঠমান্ডুতে আন্দোলন করেন এ নিয়ে।
১৩১৪
তবে প্রথম কুমারী যিনি স্কুলের পাঠ শেষ করেছেন, চুন্দা বজ্রাচার্য্যা নামের সেই তরুণী বলেন, নেওয়ার সংস্কৃতির অঙ্গ এটি। কারণ এর ফলে সমাজে মর্যাদা অনেকে বেড়ে যায়। কিন্তু কুমারী জীবনের প্রথা সম্পর্কে কিছু বলতেই চাননি তিনি।
১৪১৪
কাঠমান্ডুতে মোট ১২জন কুমারী দেবী থাকলেও রাজপ্রাসাদের কুমারী দেবী সবচেয়ে বেশি পদমর্যাদা পান। তবে মানবাধিকার আন্দোলনের ভক্তনগরের কুমারী সজনীর ক্ষেত্রে স্কুলে পড়তে দেওয়ার ও খেলার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল।