পোশাকি নাম ‘পপুলার ফোর্স’। ইজ়রায়েলি সংবাদমাধ্যম এবং সে দেশের মানুষ চেনে ‘অ্যান্টি টেরর সার্ভিস’ নামে। আদতে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সেনার মদতপুষ্ট ‘হামাস বিরোধী’ সেই প্যালেস্টাইনি সশস্ত্র গোষ্ঠীর শীর্ষনেতা ইয়াসের আবু শবাব এ বার নিহত হলেন দক্ষিণ গাজ়ায়।
হামাসের সামরিক শাখা ইজ় আল-দিন আল-কাসাম ব্রিগেডের ‘এলিট’ কমান্ডো ইউনিট আল-নুখবার ঝটিতি অভিযানে বৃহস্পতিবার ইয়াসেরের মৃত্যু হয়েছে বলে পশ্চিম এশিয়ার কয়েকটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে। ঘটনার জেরে ‘পপুলার ফোর্সে’র যোদ্ধদের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয় হামাসের। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে সংঘর্ষবিরতির মধ্যে হানাচারি চালায় ইজ়রায়েলি সেনাও। দক্ষিণ গাজ়ার রাফার অদুরে একটি সুড়ঙ্গে লুকিয়ে থাকা অন্তত ৪০ জন হামাস যোদ্ধাকে মেরে ফেলা হয়েছে বলে দাবি তেল আভিভের। তাদের দাবি, বেশ কয়েক জন হামাস সদস্য আত্মসমর্পণও করেছেন।
আরও পড়ুন:
সংবাদমাধ্যম আল জাজ়িরা জানাচ্ছে, নিহত ইয়াসের দক্ষিণ গাজায় বসবাসকারী তারাবিন জনজাতির বেদুইন। ৩০ বছরের এই যুবককে বছর দেড়েক আগেও কেউ চিনতেন না। ইজ়রায়েলি ফৌজের গ্রাউন্ড অপারেশনে দক্ষিণ গাজ়া ‘হামাসমুক্ত’ হওয়ার পরে তাদের মদতেই উত্থান ঘটে ‘পপুলার ফোর্স’-এর। শতাধিক সশস্ত্র মিলিশিয়া যোদ্ধার ওই বাহিনীর নেতা ইয়াসেই নিজেদের ‘হামাসের বিকল্প’ বলে প্যালেস্টাইনি নাগরিকদের কাছে দাবি করতেন। প্রসঙ্গত, তারাবিন জনজাতি ঐতিহ্যগত ভাবে প্যালেস্টাইনি স্বাধীনতা আন্দোলনের কিংবদন্তি নেতা, প্রয়াত ইয়াসের আরাফতের গড়া সংগঠন ‘ফাতা’-র নেতৃত্বধীন জোট ‘প্যালেস্তাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন’ (পিএলও)-এর সমর্থক হিসাবে পরিচিত। বর্তমানে পশ্চিম এশিয়ার আর এক প্যালেস্টাইনি ভূখণ্ড ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক পিএলও-র নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত স্বশাসিত প্যালেস্তাইন কর্তৃপক্ষ সেখানকার প্রশাসন পরিচালনা করেন। আদর্শগত ভাবে ‘গণতান্ত্রিক চেতনা’য় আস্থাশীল পিএলও। তারা কট্টরপন্থী প্যালেস্টাইনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের বিরোধী। একদা গাজ়ার নিয়ন্ত্রণও আরাফত অনুগামীদের হাতে ছিল। কিন্তু ২০০৭ সালে ‘গৃহযুদ্ধে’ পিএলও-কে পরাস্ত করে গাজ়ার দখল নিয়েছিল হামাস।