Advertisement
০৫ মে ২০২৪

বছর পার, বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের

তাঁদের দাবি, অন্যায় ভাবে নিজেদের দেশ মায়ানমার থেকে তাড়ানো হয়েছে তাঁদের। রাষ্ট্রপুঞ্জের কাছে গোটা সমস্যার সমাধানও দাবি করেছেন বিক্ষোভকারীরা।

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বিক্ষোভ। ছবি: এএফপি।

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বিক্ষোভ। ছবি: এএফপি।

সংবাদ সংস্থা
কক্স বাজার শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০১৮ ০৩:৩৪
Share: Save:

ঠিক এক বছর আগে মায়ানমার ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন তাঁরা। চলে এসেছিলেন পড়শি দেশ, বাংলাদেশে। তার পর থেকে বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরই তাঁদের ঘর-বাড়ি। সেই ঘটনার বর্ষপূর্তিতে আজ, কক্স বাজারের কতুপালং শরণার্থী শিবিরে বিক্ষোভ দেখালেন প্রায় কয়েক হাজার রোহিঙ্গা। তাঁদের দাবি, অন্যায় ভাবে নিজেদের দেশ মায়ানমার থেকে তাড়ানো হয়েছে তাঁদের। রাষ্ট্রপুঞ্জের কাছে গোটা সমস্যার সমাধানও দাবি করেছেন বিক্ষোভকারীরা।

গত বছর ২৫ অগস্ট। মায়ানামার সেনা আর স্থানীয় বৌদ্ধ গোষ্ঠীর তাড়া খেয়ে বাংলাদেশে ঢোকেন কয়েক লক্ষ রোহিঙ্গা। দিন কয়েকের মধ্যে সংখ্যাটা দাঁড়ায় সাত লক্ষে। অভিযোগ, মায়ানমার সেনা রোহিঙ্গা মহিলাদের উপর ধর্ষণ করে অকথ্য অত্যাচার চালিয়েছে। মেরে ফেলা হয়েছে প্রচুর রোহিঙ্গাকেও। বেসরকারি মতে সংখ্যাটা প্রায় সাত হাজার। বাধ্য হয়ে সে দেশ ছেড়ে পড়শি দেশে আশ্রয় নেন রোহিঙ্গা শরণার্থীরা। মায়ানমার সরকার অবশ্য সেনার উপরে আনা ধর্ষণ, খুন, অত্যাচারের সব অভিযোগ নাকচ করে এসেছে। বরং তাদের দাবি, উগ্রপন্থী রোহিঙ্গা যারা ‘আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি’-র সদস্য, তাদের শুধু বেছে বেছে নিশানা করেছে সেনা। যদিও রাষ্ট্রপুঞ্জ থেকে শুরু করে বিশ্বের অনেক দেশই গোটা ঘটনায় মায়ানমার সরকারের ভূমিকার নিন্দা করেছে। প্রশ্ন উঠেছে নোবেলজয়ী মায়ানমারের গণতান্ত্রিক নেত্রী আউং সান সুচি-র ভূমিকা নিয়েও। সুচি অবশ্য এর মধ্যেই জানিয়েছেন, কত দ্রুত শরণার্থীরা দেশে ফিরবেন, তা একেবারেই নির্ভর করছে বাংলাদেশ সরকারের উপর।

নেত্রীর এই বার্তায় অবশ্য আদৌ আশ্বস্ত নন মহম্মদ হোসেন, আব্দুল মালেকরা। কক্স বাজারের কাছে কতুপালং এখন বিশ্বের সব চেয়ে বড় শরণার্থী শিবিরের আকার নিয়েছে। মাথায় ব্যান্ডানা বেঁধে সেখানেই বিক্ষোভ দেখিয়েছেন রোহিঙ্গা শরণার্থীরা। সেখানে লেখা ‘আমরা বিচার চাই’। আবার কারও হাতে প্ল্যাকার্ড, ‘রোহিঙ্গাদের বাঁচাও’, অথবা ‘আর নয়’। রোহিঙ্গা নেতারা জানাচ্ছেন, তাঁদের পরিবারের উপর হওয়া অত্যাচারের বিচার না মেলা পর্যন্ত মায়ানমারে ঢোকার প্রশ্নই ওঠে না। তাঁদের নিরাপত্তার ব্যবস্থাও
করতে হবে সে দেশের সরকারকে। বছর চল্লিশের মহম্মদ বললেন, ‘‘আমরা বিচার চাই। চাই রোহিঙ্গা হিসেবে আমাদের মেনে নিক মায়ানমারের গণতান্ত্রিক সরকার।’’ তবে বছর সাতাশের আব্দুলের গলায় হতাশার সুর। বললেন, ‘‘এ তো আমাদের কষ্টের শেষ নয়, শুরু। রোহিঙ্গাদের এখনও আরও অনেক দুর্ভোগের মুখে পড়তে হবে। আমাদের পাশে কেউ নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rohingya Protest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE