গত তিন ধরে ধরে দু’তরফে হাজার জন করে বন্দি বিনিময় করল রাশিয়া এবং ইউক্রেন। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গত তিন বছরে এটাই সবচেয়ে বড় বন্দি বিনিময় ছিল দু’দেশের মধ্যে। গত ১৬ মে যুদ্ধবিরতি ও শান্তি ফেরানোর লক্ষে ইস্তানবুলে আমেরিকার মধ্যস্থতায় ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে যে আলোচনা হয়, তার জেরেই এই বন্দি বিনিময়ের সিদ্ধান্ত। এই পদক্ষেপকে শান্তির পথে এক ধাপ এগোনো বলেই মনে করছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞেরা। তবে এত কিছুর মধ্যেও যুদ্ধ থামেনি। বন্দি বিনিময়ের সঙ্গে সঙ্গে একে অপরের বিরুদ্ধে হামলা জারি রেখেছে ইউক্রেন ও রাশিয়া।
শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছিল তিন দিনের বন্দি বিনিময় প্রক্রিয়া। দু’তরফে দফায় দফায় হাজার জন করে বন্দি ফেরানো হয়েছে। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রক এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির মতে, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এটাই সবচেয়ে বড় বন্দি বিনিময়। দু’তরফের বন্দিদের মধ্যে আত্মসমপর্ণ করা, ধরা পড়া সেনাকর্মী ছাড়াও ১২০ জন করে সাধারণ নাগরিকও ছিলেন। আজ প্রেসিডেন্ট জ়েলেনস্কি সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, ‘আমাদের সশস্ত্র বাহিনী, জাতীয় সেনা, সীমান্তরক্ষী বাহিনী এবং যোগাযোগ কর্মীদের অনেকে আজ ঘরে ফিরতে পারলেন।’ তবে ইউক্রেনের দাবি, তাদের বন্দিদের সঙ্গে মোটেই ভাল ব্যবহার করেনি রাশিয়া। কিভের গুপ্তচর সংস্থা সূত্রের খবর, আত্মসমপর্ণ করার পরে যুদ্ধবন্দি করার পরিবর্তে ইউক্রেনীয়দের গুলি করে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিল রাশিয়ার উপর মহল। রাষ্ট্রপুঞ্জের স্বাধীন তদন্তকারী সংগঠনের কাছে ধরা পড়া রুশ সেনারা তেমনই জানিয়েছিলেন। রাশিয়ায় যাঁদের বন্দি করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তাঁদেরওঅনেককে গুলি করে হত্যা করা হয়। অত্যাচার ও মারধরে পঙ্গু হয়ে গিয়েছেন অনেকে।
১৬ মে-র শান্তি আলোচনায় দু’দেশের বন্দিরা ঘরে ফিরলেও তা যুদ্ধবিরতি আনতে ব্যর্থ হয়েছে। আমেরিকা, ইউরোপের দেশগুলি এবং ইউক্রেন চেয়েছিল, ৩০ দিনের নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতি। রাশিয়া সেই প্রস্তাবে উৎসাহ দেখালেও শেষ পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি মানেনি। তবে শুক্রবার, রুশ বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেছিলেন, বন্দি বিনিময় শেষ হলেই কিভে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রস্তাবের খসড়া পাঠাবে মস্কো।
কিভের দাবি, গত কাল রাতেও ইউক্রেনের জ়াইটোমার, কিভ, খারকিভ, মিকোলেভ, তেরনোপিল, খেমেলনিটস্কিতে ৩৬৭টি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে রাশিয়া। ২৬৬টি ড্রোন সফল ভাবে নিষ্ক্রিয় করতে পারলেও ৪৫টি ক্ষেপণাস্ত্র গুরুতর ক্ষতি করেছে। কিভের দাবি, রুশ হামলায় ১৩ জন নিহত হয়েছে। তার মধ্যে তিন শিশুও রয়েছে।রাশিয়ার পাল্টা দাবি, চার ঘণ্টার তীব্র আক্রমণে তারা কিভের ৯৫টি ড্রোন নিষ্ক্রিয় করেছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)