রাষ্ট্রপুঞ্জে সুষমা স্বরাজ। বৃহস্পতিবার। ছবি- সংগৃহীত।
সরাসরি নাম না করে সন্ত্রাসবাদ নিয়ে পাকিস্তানের অবস্থানের কড়া সমালোচনা করলেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। নিউইয়র্কে, রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে ‘সার্ক’ জোটের দেশগুলির বৈঠকে।
বৃহস্পতিবার সুষমা বলেছেন, ‘‘সন্ত্রাসবাদ দমনে শুধুই সদিচ্ছা দেখালে হবে না। গঠনমূলক কিছু করার ইচ্ছা থাকলে, আগে তা করে দেখাতে হবে। না হলে, শুধু বৈঠকে বসে কোনও কাজের কাজ হবে না।’’
বহু দিন পর এখানেই ভারত ও পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রীদের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা শুরুর প্রস্তাব দিয়েছিলেন নতুন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। দিল্লি প্রথমে তাতে সাড়া দেয়। কিন্তু হালে জম্মু-কাশ্মীরের সোপিয়ানে এক জওয়ান ও তিন পুলিশকর্মীর মৃত্যু ও বছরদু’য়েক আগে সেনাগুলিতে হত জঙ্গি বুরহান ওয়ানির স্মরণে ইসলামাবাদের ডাকটিকিট প্রকাশের উদ্যোগের প্রক্ষিতে ভারত সেই বৈঠক বাতিল করে দেয়।
নিউইয়র্কে গত কাল ‘সার্ক’ দেশগুলির বৈঠকে সুষমা দক্ষিণ এশিয়ায় সন্ত্রাসবাদের বাড়বৃদ্ধিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘‘এই অঞ্চলে সন্ত্রাসের আশঙ্কা ও ঘটনা উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছে। গোটা বিশ্বে তো বটেই, আমাদের এই এলাকা (দক্ষিণ এশিয়া)-তেও শান্তি ও স্থায়ীত্বের পক্ষে সবচেয়ে বেশি বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে সন্ত্রাসবাদ। কোনও বাছবিচার না করে সন্ত্রাসবাদকে সব রকম ভাবে মোকাবিলা করতে হবে আমাদের।’’
আরও পড়ুন- ভারত-পাক বৈঠক ভেস্তে গিয়ে ‘মান’ ও ‘মন’, দুই-ই রইল মোদীর
আরও পড়ুন- এই মারণ রোগের থাবায় এ বছরই মারা যাবেন প্রায় এক কোটি মানুষ!
‘সার্ক’ বৈঠকে তাঁর ভাষণ শেষ হতেই সভা ছেড়ে বেরিয়ে যান ভারতের বিদেশমন্ত্রী। আর তার কিছু ক্ষণ পরেই বলতে ওঠেন পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি। সবাইকে কিছুটা অপ্রস্তুত করে দিয়ে পাক বিদেশমন্ত্রী সরাসরি নাম না করে সুষমার দ্রুত প্রস্থান নিয়ে তির্যক মন্তব্য করেন। কুরেশি বলেন, ‘‘সার্ক দেশগুলির জোটের এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে একটি দেশ (পড়ুন, ভারত)-ই বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ভারতের দিক থেকে গঠনমূলক উদ্যোগ বলতেই আমার মনে আসবে, উনি (পড়ুন, সুষমা স্বরাজ) বৈঠকের মাঝ পথে উঠে গেলেল সভা ছেড়ে। হতে পারে, উনি সুস্থ বোধ করছেন না।’’
কুরেশির ওই মন্তব্যের পর অবশ্য প্রতিক্রিয়া জানাতে দেরি করেনি ভারতের বিদেশমন্ত্রক। মন্ত্রকের এক কর্তা কুরেশির ওই মন্তব্যকে ‘ভিত্তিহীন ও অবাস্তব’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।
পরে বিদেশমন্ত্রকের তরফে পাক বিদেশমন্ত্রীর ওই মন্তব্যকে ‘বিস্ময়কর ও দুর্ভাগ্যজনক’ আখ্যা দিয়ে বলা হয়েছে, ‘‘এ ব্যাপারে সুষমাই প্রথম বা একা নন, যিনি সার্ক বৈঠক শেষ হওয়ার আগেই উঠে এসেছেন। ভারতের বিদেশমন্ত্রীর বেরিয়ে আসার আগেই সভা ছেড়ে উঠে এসেছেন বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের বিদেশমন্ত্রীরা। নিজের ভাষণ শেষ করে বহুপাক্ষিক বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে আসাটা নতুন কিছু নয়। কয়েকটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক ও নিউইয়র্কে ভারতীয় সংগঠনগুলির সঙ্গে বৈঠকের জন্যই বিদেশমন্ত্রীকে তড়িঘড়ি সভা ছেড়ে বেরিয়ে আসতে হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy