Advertisement
০৫ ডিসেম্বর ২০২৫
Maya civilization

মায়া সভ্যতায় নরবলির পর ‘আত্মার পাতালপ্রবেশ’! সেই হ্রদ খুঁজে পেলেন বিজ্ঞানীরা

মায়া সভ্যতা নিয়ে অনেক জল্পনা রয়েছে। সম্প্রতি পাতাল প্রবেশের সেই পথেরই সন্ধান দিলেন এক দল বিজ্ঞানী।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৯ ১২:৩৭
Share: Save:
০১ ১৪
কোন পথে ‘পাতালে’ প্রবেশ করে নতুন প্রাণের সৃষ্টিকে স্বাগত জানাত মায়া সভ্যতা? মানুষ বলি দিয়ে কী ভাবে মানব সম্প্রদায়কে বাঁচিয়ে রাখার কথা ভেবেছিল তারা? মায়া সভ্যতার এই সব বিষয়গুলো নিয়ে অনেক জল্পনা রয়েছে। সম্প্রতি পাতাল প্রবেশের সেই পথেরই সন্ধান দিলেন এক দল বিজ্ঞানী।

কোন পথে ‘পাতালে’ প্রবেশ করে নতুন প্রাণের সৃষ্টিকে স্বাগত জানাত মায়া সভ্যতা? মানুষ বলি দিয়ে কী ভাবে মানব সম্প্রদায়কে বাঁচিয়ে রাখার কথা ভেবেছিল তারা? মায়া সভ্যতার এই সব বিষয়গুলো নিয়ে অনেক জল্পনা রয়েছে। সম্প্রতি পাতাল প্রবেশের সেই পথেরই সন্ধান দিলেন এক দল বিজ্ঞানী।

০২ ১৪
মেক্সিকোর ইউকাটান প্রদেশে চিচেন ইৎজা শহর। এই শহরের চুনাপাথরে ঘেরা একটা গুহা-হ্রদেই নাকি রয়েছে পাতালে প্রবেশের এই পথ। তেমনটাই দাবি করছেন এক দল বিজ্ঞানী।

মেক্সিকোর ইউকাটান প্রদেশে চিচেন ইৎজা শহর। এই শহরের চুনাপাথরে ঘেরা একটা গুহা-হ্রদেই নাকি রয়েছে পাতালে প্রবেশের এই পথ। তেমনটাই দাবি করছেন এক দল বিজ্ঞানী।

০৩ ১৪
বেঁচে থাকার জন্য মানুষ বলির প্রথা মায়া সভ্যতার অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল। মায়ানরা বিশ্বাস করতেন, এই বলিদান না হলে চূড়ান্ত অভিশাপ নেমে আসবে তাঁদের উপর। অসুখে জর্জরিত হয়ে, খেতে না পেয়ে মারা যাবেন সবাই। ক্রমে মানুষের অস্তিত্বই লোপ পাবে।

বেঁচে থাকার জন্য মানুষ বলির প্রথা মায়া সভ্যতার অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল। মায়ানরা বিশ্বাস করতেন, এই বলিদান না হলে চূড়ান্ত অভিশাপ নেমে আসবে তাঁদের উপর। অসুখে জর্জরিত হয়ে, খেতে না পেয়ে মারা যাবেন সবাই। ক্রমে মানুষের অস্তিত্বই লোপ পাবে।

০৪ ১৪
বিশ্বাস ছিল, বলি দেওয়ার পর একটি নির্দিষ্ট পথে সেই মৃত মানুষ পাতালে গিয়ে পৌঁছবে আর তার পরিবর্তে নতুন প্রাণের আবির্ভাব হবে পৃথিবীতে। এতদিনে সেই ‘পথ’টাই খুঁজে পেয়েছেন বলে দাবি করছেন প্রত্নতত্ত্ববিদরা। কিন্তু কেন এমন বিশ্বাস ছিল মায়াদের?

বিশ্বাস ছিল, বলি দেওয়ার পর একটি নির্দিষ্ট পথে সেই মৃত মানুষ পাতালে গিয়ে পৌঁছবে আর তার পরিবর্তে নতুন প্রাণের আবির্ভাব হবে পৃথিবীতে। এতদিনে সেই ‘পথ’টাই খুঁজে পেয়েছেন বলে দাবি করছেন প্রত্নতত্ত্ববিদরা। কিন্তু কেন এমন বিশ্বাস ছিল মায়াদের?

০৫ ১৪
মায়া সভ্যতায় মনে করা হত, বিশ্ব তিনটি ভাগে বিভক্ত— স্বর্গ, পৃথিবী এবং পাতাল। এই তিনের মধ্যে তাঁদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল পাতাল। তাঁদের বিশ্বাস ছিল, পাতালেই প্রাণের সৃষ্টি হয়। বিশ্বের এই ভাগের সঙ্গে যদি মানব সম্প্রদায়ের ভারসাম্য নড়ে যায়, তা হলে অসুখ, খরা, খাদ্যাভাব দেখা দেবে সমাজে।

মায়া সভ্যতায় মনে করা হত, বিশ্ব তিনটি ভাগে বিভক্ত— স্বর্গ, পৃথিবী এবং পাতাল। এই তিনের মধ্যে তাঁদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল পাতাল। তাঁদের বিশ্বাস ছিল, পাতালেই প্রাণের সৃষ্টি হয়। বিশ্বের এই ভাগের সঙ্গে যদি মানব সম্প্রদায়ের ভারসাম্য নড়ে যায়, তা হলে অসুখ, খরা, খাদ্যাভাব দেখা দেবে সমাজে।

০৬ ১৪
সে কারণেই বলি দিয়ে দেহ ফেলা হত এই হ্রদে। পাথরের ধারালো অস্ত্র বানিয়ে সেটা দিয়ে বলি দিয়ে সেই রক্ত এবং মৃতদেহ উৎসর্গ করা হত চিচেন ইৎজার গুহা হ্রদে।

সে কারণেই বলি দিয়ে দেহ ফেলা হত এই হ্রদে। পাথরের ধারালো অস্ত্র বানিয়ে সেটা দিয়ে বলি দিয়ে সেই রক্ত এবং মৃতদেহ উৎসর্গ করা হত চিচেন ইৎজার গুহা হ্রদে।

০৭ ১৪
১৬ শতকে মেক্সিকোয় স্প্যানিশদের প্রবেশের আগে পর্যন্ত মায়া সভ্যতাই ছিল পৃথিবীর সবচেয়ে উন্নত। মেক্সিকোর ইউকাটান প্রদেশে ৪ বর্গ মাইল এলাকা জুড়ে চিচেন ইৎজা শহরই ছিল মায়া সভ্যতার সবচেয়ে বড় সাফল্য।

১৬ শতকে মেক্সিকোয় স্প্যানিশদের প্রবেশের আগে পর্যন্ত মায়া সভ্যতাই ছিল পৃথিবীর সবচেয়ে উন্নত। মেক্সিকোর ইউকাটান প্রদেশে ৪ বর্গ মাইল এলাকা জুড়ে চিচেন ইৎজা শহরই ছিল মায়া সভ্যতার সবচেয়ে বড় সাফল্য।

০৮ ১৪
ওই শহরে চারটি গুহা হ্রদ রয়েছে। শহরে মায়া সভ্যতার ধ্বংসস্তূপের উপর এল ক্যাসিলো নামে একটি বড় পিরামিড আকৃতির মন্দির রয়েছে। বছর দুয়েক আগে তার নীচেই গোপন একটি হ্রদের সন্ধান পান প্রত্নতত্ত্ববিদেরা।

ওই শহরে চারটি গুহা হ্রদ রয়েছে। শহরে মায়া সভ্যতার ধ্বংসস্তূপের উপর এল ক্যাসিলো নামে একটি বড় পিরামিড আকৃতির মন্দির রয়েছে। বছর দুয়েক আগে তার নীচেই গোপন একটি হ্রদের সন্ধান পান প্রত্নতত্ত্ববিদেরা।

০৯ ১৪
আর গত নভেম্বর মাসে চিচেন ইৎজা একটি ছোট পিরামিড আকৃতির মন্দির থেকে ওই এল ক্যাসিলো পর্যন্ত ভূগর্ভস্থ সুড়ঙ্গ পথের সন্ধান মেলে। অনুমান ছিল, এই পথই এল ক্যাসিলোর নীচে গুহা হ্রদ পর্যন্ত যাবে।

আর গত নভেম্বর মাসে চিচেন ইৎজা একটি ছোট পিরামিড আকৃতির মন্দির থেকে ওই এল ক্যাসিলো পর্যন্ত ভূগর্ভস্থ সুড়ঙ্গ পথের সন্ধান মেলে। অনুমান ছিল, এই পথই এল ক্যাসিলোর নীচে গুহা হ্রদ পর্যন্ত যাবে।

১০ ১৪
কিন্তু সেই সুড়ঙ্গ পথের মুখ বিশালাকার পাথর দিয়ে বন্ধ করে রাখা ছিল। প্রত্নতত্ত্ববিদেরা জানান, যে সব গুহা মায়াদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ ছিল, সেগুলো এ ভাবেই তাঁরা বন্ধ করে দিতেন।

কিন্তু সেই সুড়ঙ্গ পথের মুখ বিশালাকার পাথর দিয়ে বন্ধ করে রাখা ছিল। প্রত্নতত্ত্ববিদেরা জানান, যে সব গুহা মায়াদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ ছিল, সেগুলো এ ভাবেই তাঁরা বন্ধ করে দিতেন।

১১ ১৪
গত নভেম্বর থেকে প্রায় তিন মাস ধরে খননের পর গুহার মুখ খুলতে সমর্থ হন প্রত্নতত্ত্ববিদদের দল। সেই পথ দিয়েই পিরামিডের নীচের হ্রদে পৌঁছন তাঁরা। এই হ্রদই নাকি ‘পাতাল প্রবেশের রাস্তা’ ছিল মায়া সভ্যতার।

গত নভেম্বর থেকে প্রায় তিন মাস ধরে খননের পর গুহার মুখ খুলতে সমর্থ হন প্রত্নতত্ত্ববিদদের দল। সেই পথ দিয়েই পিরামিডের নীচের হ্রদে পৌঁছন তাঁরা। এই হ্রদই নাকি ‘পাতাল প্রবেশের রাস্তা’ ছিল মায়া সভ্যতার।

১২ ১৪
প্রত্নতত্ত্ববিদেরা জানিয়েছেন, হ্রদের নীচে প্রচুর মানুষের কঙ্কাল উদ্ধার হয়েছে। যা মায়া সভ্যতার মানুষ বলিদানের নজির। কঙ্কাল পরীক্ষা করে জানা গিয়েছে, তার মধ্যে ৮০ শতাংশই ৩ থেকে ১১ বছরের শিশুর।

প্রত্নতত্ত্ববিদেরা জানিয়েছেন, হ্রদের নীচে প্রচুর মানুষের কঙ্কাল উদ্ধার হয়েছে। যা মায়া সভ্যতার মানুষ বলিদানের নজির। কঙ্কাল পরীক্ষা করে জানা গিয়েছে, তার মধ্যে ৮০ শতাংশই ৩ থেকে ১১ বছরের শিশুর।

১৩ ১৪
শিশুদেরই কেন বেশি বলি দেওয়া হত, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে প্রত্নতত্ত্ববিদদের মনে। হতে পারে, এই শিশুরা অন্য জাতির। তাদের চুরি করে এনে বলি দেওয়া হত, অনুমান তাঁদের। তবে দাঁত, হাড় পরীক্ষায় জানা গিয়েছে, ওই শিশুদের স্বাস্থ্যও খুব খারাপ ছিল। অর্থাৎ তারা অপুষ্টিতে ভুগছিল।

শিশুদেরই কেন বেশি বলি দেওয়া হত, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে প্রত্নতত্ত্ববিদদের মনে। হতে পারে, এই শিশুরা অন্য জাতির। তাদের চুরি করে এনে বলি দেওয়া হত, অনুমান তাঁদের। তবে দাঁত, হাড় পরীক্ষায় জানা গিয়েছে, ওই শিশুদের স্বাস্থ্যও খুব খারাপ ছিল। অর্থাৎ তারা অপুষ্টিতে ভুগছিল।

১৪ ১৪
এমন অসুস্থ শিশুদের ওই হ্রদে ফেলে দিয়ে তাঁরা সমাজে খাদ্যের প্রয়োজনীয়তা কতটা সেই বার্তা ঈশ্বরকে দিতে চাইতেন, এমনও অনুমান প্রত্নতত্ত্ববিদদের।

এমন অসুস্থ শিশুদের ওই হ্রদে ফেলে দিয়ে তাঁরা সমাজে খাদ্যের প্রয়োজনীয়তা কতটা সেই বার্তা ঈশ্বরকে দিতে চাইতেন, এমনও অনুমান প্রত্নতত্ত্ববিদদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy