Advertisement
E-Paper

বাড়াবাড়ি কোরো না, আমেরিকা আর উত্তর কোরিয়াকে সতর্কতা চিনের

উত্তর কোরিয়ার প্রস্তুতি। আমেরিকা ও দক্ষিণ কোরিয়ার আস্তিন গোটানো। আর চিনের সতর্কতা জারি। এই সবকিছু নিয়েই ভয়ঙ্কর যুদ্ধের আবহ তৈরি হয়ে গেল কোরীয় উপসাগরে। যে কোনও মুহূর্তে বড়সড় যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারে আমেরিকা, চিন, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ও উত্তর কোরিয়া। জড়িয়ে পড়তে পারে কোরীয় উপসাগর লাগোয়া আরও কয়েকটি দেশ। পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়ল ওয়াশিংটন ও পিয়ংইয়ংকে শুক্রবার বেজিং সতর্ক করে দেওয়ায়।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০১৭ ১৭:২৫

উত্তর কোরিয়ার প্রস্তুতি। আমেরিকা ও দক্ষিণ কোরিয়ার আস্তিন গোটানো। আর চিনের সতর্কতা জারি।

এই সবকিছু নিয়েই ভয়ঙ্কর যুদ্ধের আবহ তৈরি হয়ে গেল কোরীয় উপসাগরে। যে কোনও মুহূর্তে বড়সড় যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারে আমেরিকা, চিন, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ও উত্তর কোরিয়া। জড়িয়ে পড়তে পারে কোরীয় উপসাগর লাগোয়া আরও কয়েকটি দেশ। পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়ল ওয়াশিংটন ও পিয়ংইয়ংকে শুক্রবার বেজিং সতর্ক করে দেওয়ায়।

আমেরিকা ও উত্তর কোরিয়াকে রীতিমতো সতর্ক করে দিয়ে চিন বলেছে, যেন বেশি বাড়াবাড়ি না করা হয়। যেন এমন কিছু না করে ওয়াশিংটন ও পিয়ংইয়ং, যাতে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যায়। কোনও দেশই যেন আচমকা বাহুবল প্রদর্শন বা উস্কানিমূলক মন্তব্য করে এমন পরিস্থিতি তৈরি না করে, যাতে যুদ্ধই অনিবার্য হয়ে ওঠে। আর তাতে চিনকেও জড়িয়ে পড়তেও হয়।

আরও পড়ুন- শত্রুকে ধোকা দিতে ‘অদৃশ্য’ সাঁজোয়া গাড়ি বানাচ্ছে ভারতীয় সেনা

এর পরেও শনিবার কোরীয় উপসাগর এলাকায় উত্তেজনার পারদ চড়ে যায় দক্ষিণ কোরিয়ায় মার্কিন সেনাবাহিনী যৌথ মহড়া করায়। যার শরিক হয়েছে জাপানও। পাল্টা বার্তা এসেছে উত্তর কোরিয়ার দিক থেকেও। প্রয়াত নেতা কিম ইল সুঙের ১০৫তম জন্মদিন পালন করতে গিয়ে এ দিন প্রেসিডেন্ট কিম জং উনের সামনেই উত্তর কোরীয় সেনাবাহিনী তাদের যাবতীয় সর্বাধুনিক অস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রদর্শন করেছে। আর এই ভাবেই যেন পিয়ংইয়ং বার্তা দিতে চেয়েছে, কাউকে পরোয়া করি না! তবে গুঞ্জন থাকলেও এ দিন অবশ্য আরও এক বার পরমাণু অস্ত্রপরীক্ষা করেনি উত্তর কোরিয়া।

কোরীয় উপসাগরে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে চিন এত দিন সে ভাবে প্রকাশ্যে মুখ না খুললেও শুক্রবার চিনের সরকারি সংবাদ সংস্থা ‘জিনহুয়া’ এ ব্যাপারে চিনা বিদেশমন্ত্রীর বক্তব্য সরাসরি তুলে ধরেছে। চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই বলেছেন, ‘‘আমেরিকা এবং উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়া একে অন্যকে সমঝে দেওয়ার সব রকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তিনটি দেশই চলছে বদলা নেওয়ার মনোভাব নিয়ে। তিনটি দেশই একে অন্যের দিকে তরবারি উঁচিয়ে রেখেছে, ছিলা টেনে রেখেছে ধনুকের।’’ চিন সফররত ফরাসি বিদেশমন্ত্রী জঁ-মার্ক আয়রোর সঙ্গে এক যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে শুক্রবার চিনা বিদেশমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘আমরা তিনটি দেশকেই উত্তেজক মন্তব্য করা ও হুমকি দেওয়া বন্ধ করার অনুরোধ করছি। ওদের বলছি, এমন কিছু যেন ওরা না করে যাতে কোরীয় উপসাগরের পরিস্থিতি আয়ত্তের বাইরে চলে যায়। যাতে চিনকেও না জড়িয়ে পড়তে হয় যুদ্ধে! সকলকেই বলছি, মনে করবেন না, কেউ একাই যুদ্ধটা জিতে যাবে। ব্যাপারটা অত সহজ নয়। তাই আলাপ, আলোচনাই সেরা পথ।’’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনান্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের কর্তাদের চোখে-মুখেও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে উদ্বেগের চিহ্ন। তাঁরাও হাবেভাবে বুঝিয়ে দিচ্ছেন, উত্তর কোরিয়া যে ভাবে লাগাতার পরমাণু অস্ত্রশস্ত্র ও আন্তর্দেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পীক্ষানিরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে আর আগামী দিনে তা আরও বাড়ানোর ঘোষণা করে চলেছে, তাতে কোরীয় উপসাগরে শান্তি বজায় রাখাটা খুব মুশকিল হয়ে পড়েছে। তাতে নিরাপত্তার অভাব যথেষ্টই বোধ করেছে মার্কিন প্রেসিডেন্টের দুই বন্ধু দেশ জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া। আর সে জন্যই পিয়ংইয়ংকে সরাসরি বার্তা দিতে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে যৌথ মহড়া শুরু করতে বাধ্য হয়েছে মার্কিন সেনাবাহিনী। তবে ঠিক কী ভাবে উত্তর কোরিয়ার ওই সামরিক আস্ফালনের জবাব দেওয়া হবে, পেন্টাগন তা খোলসা করতে চায়নি। পেন্টাগন সূত্রে যেটুকু খবর মিলেছে, তার ভিত্তিতে বলা যায়, দক্ষিণ কোরিয়ায় মোতায়েন মার্কিন সেনাবাহিনী এলাকা বুঝে শক্তির তারতম্য ঘটাতে পারে। উপসাগরের দক্ষিণ দিকে খুব নীচ দিয়ে ওড়াতে পারে যুদ্ধবিমান। বা, কোরীয় উপসাগরে কিছু যুদ্ধজাহাজ পাঠাতে পারে, পাঠাতে পারে এয়ারক্র্যাফ্ট ক্যারিয়ার।

উত্তর কোরিয়া অবশ্য পরিস্থিতির অবনতির জন্য শুক্রবারও আমেরিকাকেই দায়ী করেছে। আরও সঠিক ভাবে বলতে হলে, দায়ী করেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের উস্কানিমূলক টুইট ও মন্তব্যগুলিকে। দক্ষিণ কোরিয়ায় সদ্য মোতায়েন মার্কিন সেনা-ঘাঁটিগুলি উড়িয়ে দেওয়ারও হুমকি দিয়েছে উত্তর কোরিয়ার সেনাবাহিনী। হুমকি দেওয়া হয়েছে সিওলে প্রেসিডেন্টের প্রাসাদের ওপরেও হামলা চালানোর। আর পিয়ংইয়ঙের তরফে সেই সব হুমকি দেওয়া হয়েছে ঠিক সেই সময়েই, যখন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স দক্ষিণ কোরিয়া সফর করছেন আর তার পরেই তাঁর জাপানে যাওয়ার কথা। উত্তর কোরিয়ার উপ বিদেশমন্ত্রী হান সং রিওল সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘‘ট্রাম্প (মার্কিন প্রেসিডেন্ট) উস্কানিমূলক মন্তব্য করছেন। আক্রমণাত্মক কথাবার্তা বলছেন। তাই উত্তর কোরিয়া নয়, সমস্যাটা তৈরি করছে আমেরিকাই। সে ক্ষেত্রে নিজেদের বাঁচাতে উত্তর কোরিয়াকে তো প্রস্তুত হতে হবেই।’’

ছবি: এএফপি।

China North Korea US
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy