২৪ ফেব্রুয়ারির পরিসংখ্যান অনুযায়ী সাত দিনের গড় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২৬ হাজার ৭৪০। ফাইল চিত্র ।
প্রায় ৭২ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়ে চলেছে ইউক্রেন। বিপর্যস্ত হলেও এখনও অবধি মাথা ঝোঁকায়নি একদা অবিভক্ত সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ এই দেশ। পোড়া বারুদের গন্ধে সারা দেশের বাতাস ভারী হয়য়ে উঠলেও জনগণকে সাহস যোগাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট ভোলিদিমির জোলেনস্কি। ‘বন্ধু’ আমেরিকা এবং নেটো দেশগুলি পাশে থাকার আশ্বাস জোগালেও শেষ মুহূর্তে জানিয়েছে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনে ঢুকে প্রত্যক্ষ সংঘাতে নামবে না তারা। বাইরে থেকেই তারা রসদ সরবরাহ করে ইউক্রেনকে ‘সাহায্য’ করবে।
তবে কি শুধু রাশিয়ার সঙ্গে লড়াই করছে ইউক্রেন? না কি আনুষঙ্গিক আরও অনেক অদেখা শত্রুর আঘাতে জর্জরিত সেই দেশ?
রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের শুরুর দিনেই প্রায় ১৩০০ জনেরও বেশি ইউক্রেনবাসী প্রাণ হারিয়েছেন। তবে যে কোনও যুদ্ধে শুধুমাত্র লোকক্ষয় ঘটে না। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্থ হয় স্বাস্থ্য এবং অর্থনৈতিক ব্যবস্থাও। আহতদের ভিড় সামলাতে ঘাটতি দেখা যায় স্বাস্থ্যকর্মীদের সংখ্যাতেও। ভেঙে পড়ে দেশের অন্যান্য জরুরি পরিষেবাও। তার উপর বিশ্ব জুড়ে চলা বর্তমান কোভিড পরিস্থিতিতে যুদ্ধ মানেই ‘মরার উপর খাঁড়ার ঘা'। কোভিড আবহে বড়-ছোট প্রতিটি দেশেরই স্বাস্থ্য ব্যবস্থা কম-বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। প্রথম বিশ্বের দেশগুলিও মৃতের পরিসংখ্যান নিতে নিতে শ্রান্ত। এই পরিস্থিতিতে মার খেয়েছে ইউক্রেনের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাও। ইউক্রেনে ২৪ ফেব্রুয়ারির পরিসংখ্যান অনুযায়ী সাত দিনের গড় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২৬ হাজার ৭৪০। যেখানে ইউক্রেনের মোট জনসংখ্যা মাত্র ৪ কোটি ৪০ লক্ষ, সেখানে এই সাতদিনের গড় আক্রান্তের সংখ্যা অন্য দেশগুলির তুলনায় অনেকই বেশি। ইউক্রেনের সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩৫.৬০ শতাংশ মানুষ তাঁদের প্রথম কোভিড টিকা পেয়েছেন। দ্বিতীয় এবং বুস্টার টিকা প্রাপকের সংখ্যা যথাক্রমে ৩৪.৩ শতাংশ এবং ১.৬ শতাংশ৷ তার মধ্যেই যুদ্ধের ফলে দেশের স্বাস্থ্য পরিষেবা তলানিতে গিয়ে ঠেকবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা।
এ ছাড়াও দেশের বিমান চলাচল, পর্যটন ব্যাবসা এবং আমদানি-রফতানি বন্ধ থাকায় আস্তে আস্তে অর্থনৈতিক দিক থেকেও বিপদের মুখেও পড়তে পারে ইউক্রেন। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে বিপর্যয়ের মুখে পডে়ছে ইউক্রেনের অন্যতম প্রধান আয়ের উৎস তেল-ব্যবসাও। এই আবহে দেশের অর্থনীতি ভেঙে পড়লে তা সামলাতে কয়েক দশক পেরিয়ে থাবে বলেও মত অর্থনীতির বিশেষজ্ঞদের।
কিন্তু রাশিয়ার বাহিনীর দাপটে বাইরে থেকে দেশের ভিতরে কোনও রসদ পাঠানো দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে এখনও বন্ধু দেশগুলি থেকেই সাহায্য পাওয়ার আশা রাখছে ইউক্রেন। তবে ইউক্রেন নিয়ে পুতিন ঠিক কী ভাবছেন, তা নিয়েও ধন্দে পড়েছে বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক মহল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy