Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Vladimir Putin

সোভিয়েত ভাঙা নায়কের শেষকৃত্যে থাকছেন না পুতিন

ব্যস্ততার অজুহাতে গর্বাচভের শেষকৃত্যে পুতিনের গরহাজিরা সোভিয়েতের শেষ শাসকের বিষয়ে তাঁর চিরাচরিত অবস্থানেরই প্রতিফলন। সোভিয়েত ভেঙে দেওয়াকে কখনও মানতে পারেননি পুতিন।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
মস্কো শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৬:০৯
Share: Save:

পূর্বনির্ধারিত অন্য কাজে ব্যস্ত থাকবেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তাই শনিবার অখণ্ড সোভিয়েতের শেষ প্রেসিডেন্ট মিখাইল গর্বাচভের শেষকৃত্যে উপস্থিত থাকতে পারছেন না তিনি। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দমিত্রি পেসকভ বৃহস্পতিবার এই ঘোষণা করা মাত্র উড়ে এসেছিল পাল্টা প্রশ্ন— পুতিনের কি থাকা উচিত ছিল না? ভাবলেশহীন মুখে পেসকভ জানিয়েছেন, “তা কেন? রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসাবে তিনি তো হাসপাতালে গিয়ে তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়ে এসেছেন! গর্বাচভের পরিবারকে টেলিগ্রামও পাঠিয়েছেন।”

ক্রেমলিনের মুখপাত্র যা-ই বলুন, ব্যস্ততার অজুহাতে গর্বাচভের শেষকৃত্যে পুতিনের গরহাজিরা সোভিয়েতের শেষ শাসকের বিষয়ে তাঁর চিরাচরিত অবস্থানেরই প্রতিফলন। সোভিয়েত ভেঙে দেওয়াকে কখনও মানতে পারেননি পুতিন। সেই ভাঙনের ক’বছর তিনি কাটিয়েছেন বেলারুশে গা ঢাকা দিয়ে। ২০০৫-এ সোভিয়েত ভাঙার ঘটনাকে পুতিন ‘বিংশ শতাব্দীর সব চেয়ে বড় ভূ-রাজনৈতিক বিপর্যয়’ আখ্যা দিয়েছিলেন। এ জন্যই গর্বাচভকে তিনি ক্ষমা করতে রাজি নন। পুতিন মনে করেন, গর্বাচভের পশ্চিমা-প্রীতিই সোভিয়েত ভাঙার মূলে। বুধবার ক্রেমলিনের মুখপাত্র পুতিনের পক্ষে যে শোকবার্তা পাঠ করেছিলেন, তাতেও ছিল এই অভিযোগ। যদিও গর্বাচভের পরিবারকে পাঠানো টেলিগ্রামে পুতিন গর্বাচভকে ‘বিশ্বের ইতিহাসে প্রভাব ফেলা এক নেতা’ বলে অভিহিত করেছেন। কিন্তু সোভিয়েত টিকে থাকলে বিশ্বব্যবস্থা যে এ ভাবে এককেন্দ্রিক হয়ে উঠত না, আমেরিকা বিশ্বজুড়ে যা-খুশি করার সুযোগ পেত না, সে বিশ্বাস বিভিন্ন সময়ে প্রকাশ করে গিয়েছেন পুতিন। এমনকি এই ‘বিপর্যয়’-এর জন্য তৎকালীন সোভিয়েতের নেতৃত্বের ‘দুর্বলতা’-কেও দুষেছেন রুশ নেতা, গর্বাচভ ছিলেন যে নেতৃত্বের মাথায়।

বস্তুত পুতিনের সঙ্গে টালবাহানার সম্পর্ক ছিল গর্বাচভের। কখনওই তাঁকে আমল দেননি পুতিন। ২০১৪-য় ক্রাইমিয়া দখলের সময়ে গর্বাচভের সঙ্গে আলোচনা করেননি। তবে বিবৃতি দিয়ে পুতিনের সেই পদক্ষেপকে ‘প্রয়োজনীয় ও ইতিবাচক’ বলে সমর্থন জানিয়েছিলেন গর্বাচভ। শেষ বার বর্ষীয়ান নেতার খোঁজ নিতে পুতিন তাঁর বাড়িতে গিয়েছিলেন ২০০৬-এ। বছর খানেক ধরে বার্ধক্যজনিত নানা অসুস্থতায় কাবু হয়ে বার বার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন গর্বাচভ। সেখান থেকেই পুতিনের ইউক্রেন আক্রমণের বিরোধিতা করেছেন তিনি। বলেছেন, কোভিডে পর্যুদস্ত দেশের অর্থনীতি যুদ্ধের বোঝা নিতে পারবে বলে তিনি মনে করেন না। তবে পুতিন গর্বাচভের কথায় কান দেননি। যেমন শেষকৃত্যে গরহাজির থাকার সিদ্ধান্ত নিয়ে আবার বুঝিয়ে দিলেন সোভিয়েত ভাঙার রূপকারের প্রতি তাঁর অবজ্ঞারমনোভাব।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE