Advertisement
E-Paper

ইকুয়েডরের দূতাবাস ছাড়তে তৈরি অ্যাসাঞ্জ

ইকুয়েডরের দূতাবাসে আশ্রয় নেওয়া যদি বেআইনি হয়, তা হলে দীর্ঘ সাড়ে তিন বছরের বন্দিদশা কাটিয়ে শুক্রবার ব্রিটিশ পুলিশের হাতে ধরা দেবেন উইকিলিকস-প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। আজ এ কথা ঘোষণা করেছেন তিনি। যদিও ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের একাংশের দাবি, অ্যাসাঞ্জের পাশে দাঁড়াবে রাষ্ট্রপুঞ্জ। কিন্তু সেই সমর্থন না জুটলে দূতাবাস ছেড়ে বেরনোর সঙ্গে সঙ্গেই গ্রেফতার হতে হবে তাঁকে।

শ্রাবণী বসু

শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০৩:০৩

ইকুয়েডরের দূতাবাসে আশ্রয় নেওয়া যদি বেআইনি হয়, তা হলে দীর্ঘ সাড়ে তিন বছরের বন্দিদশা কাটিয়ে শুক্রবার ব্রিটিশ পুলিশের হাতে ধরা দেবেন উইকিলিকস-প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। আজ এ কথা ঘোষণা করেছেন তিনি। যদিও ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের একাংশের দাবি, অ্যাসাঞ্জের পাশে দাঁড়াবে রাষ্ট্রপুঞ্জ। কিন্তু সেই সমর্থন না জুটলে দূতাবাস ছেড়ে বেরনোর সঙ্গে সঙ্গেই গ্রেফতার হতে হবে তাঁকে।

ঘটনার সূত্রপাত ২০১০ সালে। অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার দু’টি পৃথক অভিযোগ আনেন দুই মহিলা। এর মধ্যে এক জনের দাবি ছিল, অ্যাসাঞ্জ তাঁকে ধর্ষণ করেছেন। জেরা করার জন্য অ্যাসাঞ্জকে তাদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানায় সুইডেন। উইকিলিকস-প্রতিষ্ঠাতার অবশ্য প্রথম থেকেই দাবি ছিল, তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। ওই বছরই মার্কিন সেনাবাহিনীর বেশ কিছু গোপন নথি প্রকাশ করে দিয়েছিল উইকিলিকস। অ্যাসাঞ্জ দাবি করেন, সেই ঘটনার শোধ তুলতেই আমেরিকার এই ষড়যন্ত্র। সুইডেন আসলে তাঁকে গ্রেফতার করে আমেরিকার হাতে তুলে দেওয়ার ফন্দি এঁটেছে। এর পরই ২০১২ সালে লন্ডনের ইকুয়েডর দূতাবাসে আশ্রয় নেন অ্যাসাঞ্জ। ইকুয়েডরও জানায়, সুইডেনের হাতে তুলে দিলে অ্যাসাঞ্জের মানবাধিকার লঙ্ঘন হতে পারে। এই আশঙ্কাতেই তাঁকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়া হচ্ছে। এর পর মেট্রোপলিটন পুলিশ ঘোষণা করে, দূতাবাস থেকে বেরোলেই অ্যাসাঞ্জকে গ্রেফতার করা হবে। সেই থেকেই তিনি ইকুয়েডর দূতাবাসে ‘বন্দি’। গত বছর অগস্ট মাসে অবশ্য যৌন হেনস্থার একটি মামলা তুলে নেওয়া হয়। ধর্ষণের মামলাটি বহাল থাকে। পরে অক্টোবরে কমিয়ে দেওয়া হয় ইকুয়েডরের দূতাবাসের বাইরে পুলিশি নজরদারিও।

এ সবের মধ্যেই ২০১৪ সালে রাষ্ট্রপুঞ্জের কাছে অ্যাসাঞ্জ আবেদন জানান, ‘‘আমার স্বাধীনতা খর্ব করে বেআইনি ভাবে দীর্ঘদিন আটকে রাখা হয়েছে।’’ আবেদনে তিনি এ-ও জানান, ইকুয়েডর দূতাবাস থেকে বেরোলেই তাঁকে গ্রেফতার করার ভয়ও দেখানো হয়েছে। এর পরই বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করে রাষ্ট্রপুঞ্জ। সূত্রের খবর, আগামিকাল হয়তো সিদ্ধান্তের কথা জানাবে তারা। তবে এখনও পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক ভাবে রাষ্ট্রপুঞ্জের তরফে টুঁ শব্দটি করা হয়নি। উইকিলিকস-প্রতিষ্ঠাতা অবশ্য ঘোষণা করেছেন, কাল যদি রাষ্ট্রপুঞ্জ বলে, তিনি বেআইনি ভাবে দূতাবাসে আশ্রয় নিয়ে রয়েছেন, তা হলে আত্মসমর্পণ করবেন তিনি।

টুইটারে উইকিলিকসের দেওয়া বিবৃতিতে অ্যাসাঞ্জ লিখেছেন, ‘‘কাল হয়তো রাষ্ট্রপুঞ্জ ঘোষণা করবে, ব্রিটেন ও সুইডেনের বিরুদ্ধে আমি হেরে গিয়েছি। সে ক্ষেত্রে শুক্রবার দুপুরে দূতাবাস থেকে বেরিয়ে ব্রিটিশ পুলিশের হাতে ধরা দেব আমি। কারণ নতুন করে আবেদনের আর কোনও অর্থ নেই।’’ তিনি আরও লিখেছেন, ‘‘...কিন্তু যদি জিতে যাই, যদি প্রমাণ হয় সরকার বেআইনি কাজ করেছে, তা হলে আশা করি এ বার আমার পাসপোর্ট ফেরানো হবে। গ্রেফতারি পরোয়ানাও তুলে নেওয়া হবে।’’

ব্রিটিশ পুলিশ জানিয়েছে, অ্যাসাঞ্জ দূতাবাসের বাইরে পা ফেললেই তাঁকে গ্রেফতার করা হবে। তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এখনও বহাল। জারি ইউরোপের গ্রেফতারি পরোয়ানাও। এক সরকারি কর্তার কথায়, ‘‘আমরা বারবারই জানিয়েছি, অ্যাসাঞ্জকে বেআইনি ভাবে আটকে রাখেনি ব্রিটেন। তিনি নিজেই গ্রেফতারি এড়াতে ইকুয়েডরের দূতাবাসে লুকিয়ে রয়েছেন। ব্রিটেন এখনও তাঁকে সুইডেনের হাতে তুলে দিতে বদ্ধপরিকর।’’

julian assange wikileaks srabani basu
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy