Advertisement
E-Paper

বাংলাদেশে জংলা পাহাড়ে অস্ত্রের ভাণ্ডার পরেশের

বাংলাদেশের হবিগঞ্জে সাতছড়ির দুর্গম পাহাড়ি জঙ্গল। হাত বাড়ালেই ভারত সীমান্ত। তার ওপারে যে সবুজ অরণ্য তা পড়ে ত্রিপুরা রাজ্যে। এই জঙ্গলের মধ্যেই জঙ্গিদের অস্ত্রভাণ্ডার রয়েছে বলে খবর দিয়েছিলেন ভারতীয় গোয়েন্দারা। তার পরে রাতভর অভিযান চালিয়ে জঙ্গলে সাতটি লুকোনো বাঙ্কারের হদিশ পায় র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র্যাব)। সেই বাঙ্কারে মিলেছে ১৮৪টি শক্তিশালী রকেট লঞ্চার, বেশ কিছু ট্যাঙ্কবিধ্বংসী গোলা, ১৫৩টি রকেট চার্জার, শ’দুয়েক মর্টারের গোলা ও বিস্ফোরক। আরও দু’দিন তল্লাশি-অভিযান চলবে বলে জানিয়েছেন র্যাবের উইং কম্যান্ডার হাবিবুর রহমান।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৪ ০২:২০

বাংলাদেশের হবিগঞ্জে সাতছড়ির দুর্গম পাহাড়ি জঙ্গল। হাত বাড়ালেই ভারত সীমান্ত। তার ওপারে যে সবুজ অরণ্য তা পড়ে ত্রিপুরা রাজ্যে। এই জঙ্গলের মধ্যেই জঙ্গিদের অস্ত্রভাণ্ডার রয়েছে বলে খবর দিয়েছিলেন ভারতীয় গোয়েন্দারা। তার পরে রাতভর অভিযান চালিয়ে জঙ্গলে সাতটি লুকোনো বাঙ্কারের হদিশ পায় র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র‌্যাব)। সেই বাঙ্কারে মিলেছে ১৮৪টি শক্তিশালী রকেট লঞ্চার, বেশ কিছু ট্যাঙ্কবিধ্বংসী গোলা, ১৫৩টি রকেট চার্জার, শ’দুয়েক মর্টারের গোলা ও বিস্ফোরক। আরও দু’দিন তল্লাশি-অভিযান চলবে বলে জানিয়েছেন র‌্যাবের উইং কম্যান্ডার হাবিবুর রহমান।

আলফার সহযোগী জঙ্গি সংগঠন এটিটিএফ (অল ত্রিপুরা টাইগার ফোর্স) নেতা রঞ্জিত দেববর্মা ধরা পড়ার পরে তাঁকে জেরা করেই ত্রিপুরা সীমান্ত থেকে তিন কিলোমিটার দূরে সাতছড়ির জঙ্গলে অস্ত্রভাণ্ডারের খবর পান গোয়েন্দারা। তার পর বারে বারেই বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারকে জানানো হয়। কয়েক বার অভিযান চালিয়েও পুলিশ কিছু পায়নি। সম্প্রতি ফের ভারতীয় গোয়েন্দারা সাতছড়িতে অস্ত্রের হদিশ দিয়ে কিছু সুনির্দিষ্ট তথ্য পাঠান। গোয়েন্দারা জানতে পারেন, আলফার বহিষ্কৃত নেতা পরেশ বরুয়া চিন থেকে মায়ানমারের পথে যে অস্ত্র পাঠান, তা এই সাতছড়ির জঙ্গলে জমা করে রাখা হয়। সুযোগ মতো তা ভারতে জঙ্গিদের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এ বার তল্লাশির দায়িত্ব দেয় র‌্যাবকে। স্থানীয় চুনারুঘাট থানার ওসি স্বীকার করেছেন, অভিযানের বিষয়ে এ বার পুলিশকেও আড়ালে রাখা হয়।

রাতভর অভিযানে র‌্যাবও প্রথমে বিশেষ কিছু পায় না। একটি টিলার ওপর কয়েকটি কুয়ো দেখেন তল্লাশিকারীরা। ভোরের দিকে র‌্যাবের এক সদস্য দড়ির মই বেয়ে ধরে তার মধ্যে নামতেই লুকোনো বাঙ্কারের বিষয়টি জানা যায়। খবর পেয়ে ঢাকা থেকে বের পদস্থ কর্তারা হেলিকপ্টারে ঘটনাস্থলে পৌঁছন। সকাল ১১টায় অস্ত্র উদ্ধার অভিযান শুরুর পরে একে একে সাতটি কুয়োর মধ্যে সাতটি বাঙ্কার মেলে। সেগুলিতেই পাওয়া যায় থরে থরে অস্ত্রশস্ত্র। র‌্যাবের একটি সূত্র জানিয়েছে, মেয়াদ ফুরোনো বেশ কিছু বিস্ফোরক মেলায় মনে করা হচ্ছে, অনেক দিন ধরেই সেগুলি জমা করে রাখা আছে। নজরদারি বাড়ায় জঙ্গিরা সেগুলি পাচার করে উঠতে পারেনি।

র‌্যাবের মুখপাত্র হাবিব জানান, মজুত অস্ত্রের এক তৃতীয়াংশ উদ্ধার করা হয়েছে। আরও বাঙ্কারের সন্ধানে আগামী দু’দিনও চুনারুঘাট উপজেলার এই জঙ্গলে অভিযান চলবে। তবে ভারতীয় গোয়েন্দাদের কাছে তথ্য পেয়ে তাঁরা এই অভিযান চালিয়েছেন, এই তথ্য মানতে চাননি হাবিব। তিনি বলেন, বিভিন্ন সূত্রেই অস্ত্র থাকার খবর মিলছিল। তার ভিত্তিতেই অভিযান চালানো হয়।

আলফার অধিকাংশ নেতাকেই ভারতের হাতে তুলে দিয়েছে ঢাকা। চট্টগ্রামে ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালান মামলায় পরেশ বরুয়াকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছে ঢাকার একটি আদালত। পরেশ বাংলাদেশের মাধ্যমে ভারতে অস্ত্র চোরাচালান চালিয়ে যাচ্ছে বলে গোয়েন্দাদের কাছে খবর। তাঁরা মনে করছেন, সাতছড়ির অস্ত্রভাণ্ডার ধরা পড়ার পরে এই পথে পরেশের অস্ত্র চালানও বন্ধ হবে।

ulfa paresh baruah rab
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy