Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

ভয় কাটছে না প্যারিসের, উধাও তরুণী বন্দুকবাজ

তিন বন্দুকবাজ খতম। নতুন করে কোনও রক্তপাতের খবরও নেই। তবু নিশ্চিন্ত হতে পারছে না ফ্রান্স। গত কাল পূর্ব প্যারিসের সুপার মার্কেটে হামলাকারী দুই জঙ্গির এক জন শেষ হয়ে গেলেও, দ্বিতীয় জন যে ফেরার। পুলিশের নাকের ডগা দিয়ে সশস্ত্র অবস্থায় পালিয়ে গিয়েছে সেই তরুণী।

সন্ত্রাসের প্রতিবাদে ফ্রান্সে মিছিল করেছেন হাজার হাজার মানুষ। তাঁদের পাশে ছিল গোটা বিশ্ব। তুরস্কের ইস্তানবুল শহরেও শনিবার ফরাসি দূতাবাসের সামনে দশ হাজার মানুষের জমায়েত হয়। তাঁদেরই এক জনের হাতে শার্লি এবদো-র নিহত কার্টুনিস্ট জঁ ক্যাবু-র ছবি। ছবি: এএফপি।

সন্ত্রাসের প্রতিবাদে ফ্রান্সে মিছিল করেছেন হাজার হাজার মানুষ। তাঁদের পাশে ছিল গোটা বিশ্ব। তুরস্কের ইস্তানবুল শহরেও শনিবার ফরাসি দূতাবাসের সামনে দশ হাজার মানুষের জমায়েত হয়। তাঁদেরই এক জনের হাতে শার্লি এবদো-র নিহত কার্টুনিস্ট জঁ ক্যাবু-র ছবি। ছবি: এএফপি।

সোমঋতা ভট্টাচার্য
প্যারিস শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:১৫
Share: Save:

তিন বন্দুকবাজ খতম। নতুন করে কোনও রক্তপাতের খবরও নেই। তবু নিশ্চিন্ত হতে পারছে না ফ্রান্স। গত কাল পূর্ব প্যারিসের সুপার মার্কেটে হামলাকারী দুই জঙ্গির এক জন শেষ হয়ে গেলেও, দ্বিতীয় জন যে ফেরার। পুলিশের নাকের ডগা দিয়ে সশস্ত্র অবস্থায় পালিয়ে গিয়েছে সেই তরুণী।

খবর আসার পরই তাই তড়িঘড়ি নিরাপত্তা আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ। জানিয়ে দিয়েছেন, ‘বিপদ এখনও কাটেনি’। তা ছাড়া, নতুন করে সন্ত্রাসবাদী হানার হুমকিও দিয়েছে ইসলামিক স্টেট-এর মতো জঙ্গি সংগঠন। তবে আপাতত সুপার মার্কেটের ওই তরুণীকেই হন্যে হয়ে খুঁজছে পুলিশ-প্রশাসন।

শুক্রবার প্রথমে তরুণীর পরিচয় নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু তদন্ত এগোনোর সঙ্গে সঙ্গেই ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে যায় তার পরিচয়। জানা যায়, হায়াত বৌমেদি নামে বছর ছাব্বিশের মেয়েটি আসলে সুপার মার্কেটের বন্দুকবাজ আমেদি কুলিবেলির স্ত্রী। স্বামীকে সাহায্য করতেই সে এসেছিল। আইন মেনে বিয়ে না হলেও, একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে তাদের বিয়ে হয়েছিল। হায়াতের পূর্ব-পরিচিতদের অনেকেই জানিয়েছে, তার পরই বদলে যায় মেয়েটি। এর পর কেউ কখনও তাকে হিজাব ছাড়া দেখতে পায়নি।

প্যারিসে নিহতদের উদ্দেশে শ্রদ্ধা জানাতে সামিল শিশুরা। ছবি: রয়টার্স।

নিহত কুয়াশি ভাইদের সঙ্গে তার ঠিক কী সম্পর্ক, তা এখনও জানা যায়নি। তবে যোগাযোগ যে ছিল, তা স্পষ্ট। সঈদ ও শেরিফের স্ত্রীদের সঙ্গেও বার কয়েক ফোনে কথা হয়েছিল হায়াতের। তাদের জেরা করেই ফেরার তরুণীর সন্ধান চালাচ্ছে প্যারিস-পুলিশ। সাধারণ মানুষেরও সাহায্য চেয়েছে প্রশাসন।

অন্য একটি সূত্রের খবর, একদা পিৎজা ডেলিভারি বয় শেরিফ কুয়াশির বন্ধু ছিল আমেদি। ২০০১ সালে প্যারিসের মার্কিন দূতাবাসে হামলা চালানোর ছক কষেছিল দু’জনে। সে বার পুলিশের জালে ধরা পড়ে যায় তারা। জেল হয় দু’জনেরই।

সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে জড়িত থাকার ইতিহাস রয়েছে দুই কুয়াশি ভাইয়েরই। দু’জনই ফরাসি-আলজেরীয়। একটি জঙ্গি দলের সদস্য হওয়ার অভিযোগে শেরিফকে আটক করা হয় ২০০৫ সালে।

হায়াত বৌমেদি

পরে ২০০৮ সালে তিন বছরের জেল হয়েছিল তার। সে বার অভিযোগ ছিল, ইরাকে জেহাদি পাঠানোর ষড়যন্ত্রে জড়িত রয়েছে ৩২ বছরের শেরিফ ও তার বছর দুয়েকের বড় দাদা সঈদ। কিন্তু ১৮ মাস জেল খাটার পরই ছাড়া পেয়ে যায় শেরিফ। আর সঈদ মুক্তি পেয়ে গিয়েছিল জেরার পরেই।

এ দিকে, একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসার পর স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে, শেরিফ ও সঈদ কুয়াশি কিংবা আমেদি কুলিবেলির মতো কুখ্যাত জঙ্গিরা কী ভাবে গোয়েন্দাদের চোখে ধুলো দিয়ে এ হেন নাশকতা ঘটিয়ে ফেলল? জবাব দিয়েছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী। দায় স্বীকার করে নিয়ে বলেছেন, “সবটাই প্রশাসনের ব্যর্থতা।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

somrita bhattacharya paris sherif kouachi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE