E-Paper

ধীরে চলেও এড়ানো গেল না গোঁজ

গড়বেতা ২ অর্থাৎ গোয়ালতোড় ব্লকে গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির স্তরে অনেক গুলি আসনেই একে - অপরের বিরুদ্ধে প্রার্থী আছে তৃণমূলের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০২৩ ০৯:২৮
মনোনয়ন দিতে যাওয়ার সময় তৃণমূলের মিছিল দাসপুরে। নিজস্ব চিত্র

মনোনয়ন দিতে যাওয়ার সময় তৃণমূলের মিছিল দাসপুরে। নিজস্ব চিত্র kousikghatal2023@gmail.com

'গোঁজ' প্রার্থী আটকাতে 'ধীরে চলো' নীতি নিয়ে প্রার্থী তালিকায় অতি সাবধানতা অবলম্বন করার কৌশল নিয়েছিল তৃণমূল। সেই কৌশলেও আটকানো গেল না গোঁজ কাটা। মনোনয়ন পর্বের শেষদিনে, বৃহস্পতিবার চন্দ্রকোনায় রীতিমতো মোটরবাইক মিছিল করে মনোনয়ন জমা দিলেন গোঁজপ্রার্থীরা। মনোনয়ন পর্ব মিটতে গোঁজের হিসেবে ব্যস্ততা শুরু হয়েছে শাসক দলে। তাদের আশা, গোঁজ প্রার্থীরা শেষপর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেবেন।

গড়বেতা ২ অর্থাৎ গোয়ালতোড় ব্লকে গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির স্তরে অনেক গুলি আসনেই একে - অপরের বিরুদ্ধে প্রার্থী আছে তৃণমূলের। পিংবনি অঞ্চলের একটি পঞ্চায়েত সমিতির আসনে দুই যুব তৃণমূল নেতা একে -অপরের বিরুদ্ধে মনোনয়ন দিয়েছেন। এই আসনে দলের প্রতীকে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন যুব তৃণমূলের জেলার সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়। একদিন পর বুধবার সেই আসনেই নির্দল হয়ে ডিসিআর কেটে মনোনয়ন দিয়েছেন যুব তৃণমূলের ব্লক সভাপতি দীনবন্ধু দে। কেন? দীনবন্ধু ও তাঁর অনুগামীরা বলছেন, "স্থানীয় কর্মীকে প্রার্থী না করে পাশের অঞ্চল থেকে তুলে এনে দলের প্রার্থী করা হচ্ছে এখানে, স্থানীয় কর্মী সমর্থকেরা এটা মানতে চায়নি।" আর যিনি দলের প্রতীকে মনোনয়ন দিয়েছেন সেই প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘আমরা দলের বাইরে তো কেউ নই। দলের সিদ্ধান্তেই প্রার্থী হয়েছি। দল যা ভাল বুঝবে করবে।" জানা গিয়েছে, এই আসনেই তৃণমূলের আরও দু'জন কর্মী মনোনয়ন পত্র জমা করেছেন। ফলে এক আসনে তৃণমূলের চারজন প্রার্থীর মনোনয়নে চরম অস্বস্তিতে ব্লক তৃণমূল। দলের ব্লকের সহ সভাপতি উজ্জ্বল রায় বলেন, "পিংবনির একটি পঞ্চায়েত সমিতির আসনে দলেরই কয়েকজন মনোনয়ন দিয়েছেন, আমরা সকলের সঙ্গেই আলোচনা করছি। মিটে যাবে।"

চন্দ্রকোনা রোডে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নবজোয়ার কর্মসূচিতে রোড শো হয়েছিল। সেই ব্লকেও গোঁজ কাঁটা ভাবাচ্ছে তৃণমূলকে। দলের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ব্লকে গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে ১০-১২ জন ও পঞ্চায়েত সমিতি স্তরে কয়েকজন মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন দলের প্রার্থীকে মানতে না পেরে। কয়েকজন 'গোঁজ' নির্দল প্রচারেও নেমে পড়েছে বলে খবর।

মনোননয়ন পর্ব মেটার পর দেখা যাচ্ছে, ঘাটাল মহকুমার ঘাটাল-সহ পাঁচটি ব্লকেই তৃণমূলের কমবেশি গোঁজ প্রার্থী পড়েছে। তবে দিনের শেষে এগিয়ে চন্দ্রকোনা। জানা গিয়েছে, প্রার্থী তালিকা নিয়ে ক’দিন ধরে এখানে গোলমাল চরমে উঠেছিল। বুধবার সেখানে বাড়তি ডিসিআর কাটা নিয়ে দলের অন্দরে প্রশ্ন উঠেছিল। শেষ মুহুর্তে চন্দ্রকোনা-১ ও ২ ব্লকে প্রার্থী তালিকা নিয়ে কোনও পরিবর্তন না হওয়ায় দলের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে গোঁজ প্রার্থী দেওয়ার হিড়িক দেখা দিয়েছে। দুটি ব্লকের বারোটি গ্রাম পঞ্চায়েতের তিন চারটি পঞ্চায়েত বাদে সবক’টিতে গোঁজ প্রার্থী পড়েছে বলে খবর। শুধু গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে নয়। পঞ্চায়েত সমিতি স্তরেও গোঁজ প্রার্থীর মনোনয়ন জমা পড়েছে। যদিও মনোনয়ন প্রত্যাহারের সময় রয়েছে। এ দিন মনোনয়ন প্রক্রিয়া শুরু হতেই চন্দ্রকোনা-২ ব্লকের ভগবন্তপুর-২ গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে শাসক দলের একাংশ বাইক মিছিল করে ব্লক অফিসে পৌঁছয়। মনোনয়ন নিয়ে দলের দু’পক্ষের এক সময় চন্দ্রকোনা-২ ব্লক ক্যাম্পাসে উত্তেজনা তৈরি হয়। পুলিশ পরিস্থিতির সামাল দেয়। ঘাটাল ব্লকেও এড়ানো গেল না গোঁজ প্রার্থী।চন্দ্রকোনার মতো পরিস্থিতি না হলেও ব্লকের একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূলের গোঁজ প্রার্থী পড়েছে বলে খবর ।তার সঙ্গে প্রার্থী নিয়ে পঞ্চায়েতে পঞ্চায়েতে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দিয়েছে ঘাটালে। পঞ্চায়েত এলাকায় ঘাটালে ব্লক নেতৃত্বের বিরুদ্ধে অসন্তোষ চরমে উঠেছে। গোঁজ প্রার্থী ঠেকানো যায়নি দাসপুরের দু’টি ব্লকেও। এখানে প্রার্থী ক্ষোভ থাকলেও তুলনাই কম গোঁজ প্রার্থীর মনোনয়ন জমা পড়েছে। কার্যত গোটা মহকুমা জুড়েই গোঁজের ছড়াছড়ি। তৃণমূলের ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা সভাপতি আশিস হুতাইত বলেন, ‘‘ঘাটাল মহকুমায় সুষ্ঠুভাবেই দলের মনোনয়ন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়েছে। কিছু আসনে বাড়তি প্রার্থী পড়েছে। সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে আলোচনা করে তা মিটিয়ে নেওয়া হবে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy