Advertisement
E-Paper

বাংলাদেশে রিজার্ভ চুরির হদিশ মিশরে, নাম জড়িয়ে ১১ দেশের

মিশর রহস্য। বাংলাদেশের রিজার্ভ চুরির তদন্তে নতুন বাঁক। রাজধানী কায়রোর কম্পিউটারে মিলেছে বিস্ময়কর তথ্য। হ্যাকিংয়ের সময় বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের সার্ভার থেকে সেখানে পৌঁছেছে জরুরি বিজ্ঞপ্তি। কম্পিউটারটির অপারেটর ছিলেন সাধারণ এক মহিলা। তাঁকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। দু’দফা জেরার পরও মহিলা ফাটা রেকর্ড বাজাচ্ছেন।

অমিত বসু

শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৬ ১৪:৪৫

মিশর রহস্য। বাংলাদেশের রিজার্ভ চুরির তদন্তে নতুন বাঁক। রাজধানী কায়রোর কম্পিউটারে মিলেছে বিস্ময়কর তথ্য। হ্যাকিংয়ের সময় বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের সার্ভার থেকে সেখানে পৌঁছেছে জরুরি বিজ্ঞপ্তি। কম্পিউটারটির অপারেটর ছিলেন সাধারণ এক মহিলা। তাঁকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। দু’দফা জেরার পরও মহিলা ফাটা রেকর্ড বাজাচ্ছেন। শুধু বলছেন, বিশ্বাস করুন চুরির বিন্দু বিসর্গ আমি জানি না, কোনও অপরাধের সঙ্গে যুক্ত নই। তদন্তকারীরা মানতে পারছেন না। যদি নাই জানেন, জরুরি বিজ্ঞপ্তি ওই কম্পিউটারে গেল কী করে। উনি নিশ্চয়ই পরোক্ষভাবে হলেও অপরাধীদের সঙ্গে যুক্ত। কম্পিউটারটি বাজোয়াপ্ত করা হয়েছে। সেটিও পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। সমস্যা, উত্তর আফ্রিকার এই দেশটি নিয়ে। হাজার হাজার বছরের পুরোন সভ্যতার দেশ মিশর আমূল বদলেছে। নৈরাজ্যের চিহ্ন সর্বত্র। অপরাধ দানা বাঁধছে। আন্তর্জাতিক যোগাযোগে ডালপালা ছড়াচ্ছে। সাম্প্রদায়িক বিরোধ গণতন্ত্রের রাস্তায় কাঁটা। ২০১৪ সালে নতুন সংবিধান গ্রহণ করার সময় গণভোটে ভোট দিয়েছে মাত্র ৩৮.৬ শতাংশ। নতুন সংবিধানের নির্বাচনে রাষ্ট্রপতি আবদেল ফতাহ এল সিসি, প্রধানমন্ত্রী শেরিফ ইসমাইল। তাঁরাও দেশটাকে বাগে আনতে ব্যর্থ। রিজার্ভ চুরির তদন্তে মিশরের পুলিশ প্রশাসন সহযোগিতার হাত বাড়ালেও অপরাধীদের খোঁজ মেলা কঠিন। দুষ্কৃতীদের দুরূহ র‍্যাকেট ভেদ করা দুঃসাধ্য। রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে তাদের শিকড়। দুষ্কর্মের জন্য নীচের তলায় যাদের নিয়োগ করা হয় তারা ওপর তলা থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন। যেটুকু কাজ দেওয়া হয় তার বিনিময়ে নির্দিষ্ট অর্থ তাদের হাতে পৌঁছে যায়। ব্যস, সেখানেই সম্পর্ক শেষ। যে মহিলা ধরা পড়েছেন, তাঁর কাছ থেকে গূঢ় তথ্য পাওয়া কঠিন। যদি সামান্যতম ইঙ্গিত পাওয়া যায় সেটুকুই লাভ বলে মনে করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: হাসিনা সরকার ফেলার ষড়যন্ত্র? ইজরায়েলের গতিবিধি কিন্তু সন্দেহজনক

শুধু মিশর নয়, রিজার্ভ চুরিতে জড়িয়েছে ১১টি দেশ। তাতে যুক্ত চিন, জাপান, সিঙ্গাপুরের মতো দেশ। রিজার্ভ চুরির জন্য বিশেষ ম্যালওয়্যার বা ক্ষতিকারক সফটওয়্যার তৈরি হয় পাকিস্তান আর দক্ষিণ কোরিয়ায়। দু’টি দেশের হ্যাকার গ্রুপ রিজার্ভ চুরির জন্যই এটা করে। ৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের সিস্টেমে ঢুকে হ্যাকাররা ৭০টি বার্তা পাঠায়। নির্দেশ যায়, ৯০ কোটি ডলার পেমেন্টের। সংযোগকারী ব্যাঙ্ক না থাকায় ৩৫টি বাতিল হয়। বাকি ৩৫টির মধ্যে ৪টি ছিল ব্যক্তিগত নামে। বাংলাদেশ ব্যাঙ্ক ব্যক্তির নামে কখনও বড় পেমেন্ট করে না। তবুও করেছে। কারণটা অজ্ঞাত।

বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের নেটওয়ার্ক তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকা সুইফটেরও গাফিলতি আছে। ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৬ মার্চ সুইফট কোনও বার্তা উদ্ধার করে বাংলাদেশ ব্যাঙ্ককে দিতে পারেনি। তাদের নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে অবৈধ পেমেন্ট হল, অথচ দেড় মাসেও তারা কোনও তথ্য দিতে পারল না। অভিযোগ এড়াতে চাইছে সুইফট। তারা বলছে, এ সব দেখা তাদের কাজ নয়। যারা ব্যবহার করছে, তাদেরই বুঝতে হবে। আমাদের ইঞ্জিনিয়াররা গ্রাহককে সব বুঝিয়ে দেওয়ার পর আর কোনও দায়িত্ব থাকে না।

সুইফটের বিরুদ্ধে অভিযোগ একটা নয়, আরও আছে। সংযুক্তির সময় সুইফটের অ্যান্টিভাইরাস সরিয়ে ফেলা হয়। এটিকে সুরক্ষিত করতে হার্ডওয়্যার সিকিউরিটি মডিউল বসানোর কথা থাকলেও, বসানো হয়নি। গাফিলতির ফিরিস্তি ক্রমশ লম্বা হচ্ছে। দায়ীদের চিহ্নিত করার চেয়ে অপরাধীদের খুঁজে বার করা আরও বড় কাজ। ম্যানিলায় ৩১ মে ইন্টারপোল ১১টি দেশের তদন্তকারী প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। সমন্বয় আরও বাড়ান দরকার বলে মনে করছে ইন্টারপোল। মিশর রহস্যের কিনারা করতেই আপাতত তারা বেশি ব্যস্ত।

bank theft cyber theft
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy