জঙ্গি হামলায় জখম ব্যক্তিকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। শুক্রবার রাতে ঢাকায়। ছবি: রয়টার্স।
মৃতের সংখ্যা ২২-এ দাঁড়াল গুলশনে। অভিযানের সময় জঙ্গিদের গুলিতে মৃত্যু হয় দুই পুলিশ কর্মীর। অভিযান শেষে হোলি আর্টিজান বেকারি রেস্তোরাঁর ভিতর থেকে উদ্ধার হল ২০টি মৃতদেহ। সকলেই বিদেশি নাগরিক। তাঁদের মধ্যে এক জন ভারতীয় বলে বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে। ১০ ঘণ্টার লড়াই শেষে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর হাতে খতম ৬ জঙ্গি। এক জঙ্গিকে জীবিত অবস্থায় গ্রেফতার করেছে সেনা। জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গুলশনের রেস্তোরাঁয় ৩৫ জনকে পণবন্দি বানিয়েছিল জঙ্গিরা। তাঁদের মধ্যে ১৩ জনকে উদ্ধার করা গিয়েছে। অভিযান শেষে রেস্তোরাঁয় ঢুকে মৃতদেহ উদ্ধার করে সশস্ত্র বাহিনী। উদ্ধারকাজ শেষে সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নইম আশফাক চৌধুরী বলেন, ‘‘আমরা ২০টি মৃতদেহ উদ্ধার করেছি। অধিকাংশকেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে।’’ মৃতদের সকলেই বিদেশি নাগরিক। সেনা সূত্রে জানানো হয়েছে, মৃতদের অধিকাংশই ইতালীয় ও জাপানি। এক জন ভারতীয় নাগরিককেও জঙ্গিরা খুন করেছে। ভারতের বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, মৃতার নাম তারিশি। তারিশির পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে সমবেদনা জানিয়েছেন বিদেশ মন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘‘গভীর বেদনার সঙ্গে জানাচ্ছি যে জঙ্গিরা তারিশি নামে এক ভারতীয়কে খুন করেছে, যাকে ঢাকা জঙ্গি হামলায় পণবন্দি বানানো হয়েছিল।’’ তিনি আরও লিখেছেন, ‘‘আমি তার বাবা সঞ্জীব জৈনের সঙ্গে কথা বলেছি এবং গভীর শোক ব্যক্ত করেছি। এই শোকের মুহূর্তে গোটা দেশ তাঁদের পাশে রয়েছে।’’ সূত্রের খবর, মৃতা তারিশি জৈনের বয়স ১৮। তিনি ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, বার্কলের পড়ুয়া ছিলেন। তাঁর বাবা সঞ্জীব জৈন বস্ত্র ব্যবসায়ী। গত ১৫-২০ বছর ধরে তিনি ঢাকায় ব্যবসা করছিলেন। তারিশি ছুটিতে ঢাকা বেড়াতে গিয়েছিলেন। শুক্রবার রাতে হোলি আর্টিজানে জঙ্গিদের হাতে পণবন্দি হয়ে পড়েন তিনি। আর ফেরা হয়নি।
সত্যপাল নামে এক ভারতীয় চিকিৎসকও রেস্তোরাঁয় ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু তিনি বাংলায় খুব স্বচ্ছন্দেই কথা বলতে পারেন। কথোপকথন শুনে তাঁকে বাংলাদেশি বলে ভুল করেছিল জঙ্গিরা। তাই সত্যপালকে খুন করা হয়নি। বাংলাদেশের সেনা তাঁকে অন্য ১২ জনের সঙ্গে উদ্ধার করে।
আর যাঁরা উদ্ধার হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে দু’জন শ্রীলঙ্কার এবং এক জন জাপানের। বাকিদের অধিকাংশই বাংলাদেশি। তবে ৩৫ জন পণবন্দির মধ্যে ২০ জনের মৃত্যু এবং ১৩ জন উদ্ধারর হওয়ার পরও যে দু’জন অবশিষ্ট থাকেন, তাঁদের কী হয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
আরও পড়ুন: জেএমবি নেতা খালেদের মুক্তি চাইছিল ওরা, উঠছে আইএস-এর নামও
মধ্য এশিয়ার অর্থই অনর্থ ঘটাচ্ছে বাংলাদেশে!
প্রধানমন্ত্রী হাসিনা বলেছেন, ‘‘যৌথ বাহিনীর প্রচেষ্টায় জঙ্গিরা কেউ পালাতে পারেনি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘যাঁরা ধর্মে বিশ্বাস করেন, তাঁরা কখনও এই রকম কাজ করতে পারেন না। এদের কোনও ধর্ম নেই। এদের একমাত্র ধর্ম হল সন্ত্রাস।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy