Advertisement
E-Paper

বেড়েছে সংখ্যা, সব ধর্মই সামিল বাংলাদেশের দুর্গোৎসবে

হালকা রোদ, অল্প বৃষ্টি, শান্ত আশ্বিন। সবুজ জমিতে সাদা কাশে শারদ সাজ। জলভর্তি গ্লাসের মতো টইটম্বুর নদী। নির্ভয়ে উৎসব উৎযাপনের উদ্দীপনা। আকাশে বাতাসে সংহতির সুর। বাংলাদেশে দুর্গাপুজোর উৎসব শুধু হিন্দুদের নয় সবার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্লোগান- ধর্ম যার যার, উৎসব সবার।

অমিত বসু

শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৬ ১৪:০৬
দেবীর পুজোয়... ।

দেবীর পুজোয়... ।

হালকা রোদ, অল্প বৃষ্টি, শান্ত আশ্বিন। সবুজ জমিতে সাদা কাশে শারদ সাজ। জলভর্তি গ্লাসের মতো টইটম্বুর নদী। নির্ভয়ে উৎসব উৎযাপনের উদ্দীপনা। আকাশে বাতাসে সংহতির সুর। বাংলাদেশে দুর্গাপুজোর উৎসব শুধু হিন্দুদের নয় সবার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্লোগান- ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। দু’মাস আগে জঙ্গি হামলার ভয় জেগেছিল হিন্দুদের মনে। হাসিনার সন্ত্রাস বিরোধী অ্যাকশনে সাহস ফিরেছে। শঙ্কার মেঘ উড়ে আলোর উল্লাস। লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে পুজো। গত বার পুজো ছিল ২৯ হাজার। এ বার ৩০ হাজার ছুঁই ছুঁই। মাটি ফুঁড়ে মাথা তুলছে মনোগ্রাহী মণ্ডপ। হাত লাগিয়েছে মুসলমান-হিন্দু উভয়েই। প্রতিযোগিতা কম নয়। শিল্প সৌকর্যে একে অন্যকে টেক্কার কারসাজি। পশ্চিমবঙ্গকেও পিছিয়ে রাখার জেদ।

মণ্ডপের ভিতরে প্রতিমা তৈরি শিল্পীর নিপুণ হাতে। শিল্পীকুলে আধিপত্য কলকাতার মতই পালেদের। ঐতিহ্যের সঙ্গে আধুনিকতার ছাপ। থিম পুজোয় মন নেই। অসুরের সৌষ্ঠব, সিংহের তেজে বেশি নজর। অতিরিক্ত সতর্কতা মায়ের চক্ষুদানে। সেখানেই যে সবার আগ্রহ। পাখির নীড়ের মতো চোখ হলে চলবে না। তেজোদ্দীপ্ত উদ্ভাস চাই। যাতে থাকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সাহস আর শক্তি।

আরও পড়ুন

আফগানিস্তানকে হারিয়ে ওয়ানডেতে শততম জয় বাংলাদেশের

প্রসাদ নিয়ে চিন্তায়। সব ফল নাগালের বাইরে। পেয়ারা, শাঁখালু, শশাতে ভরসা। চাল দিচ্ছে সরকার। ভোগের খিচুড়ি করতে অসুবিধে নেই। প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকেও আর্থিক সহযোগিতা। খরচের কথা ভেবে পিছিয়ে যাওয়া নয়। সেখানে যেটুকু করার করতেই হবে। ফাঁকি চলবে না। নারকেল, তিলের নাড়ুর স্টক কম হলে চলে কী করে। সবার আগে সেটাই যে চাই। মন্ত্র উচ্চারণে সড়গড় হতে পুরোহিতদের অনুশীলন। তারা আর একা নয়। সবাই তাদের পাশে। নিঃসঙ্গ চলাফেরায় বাধা। দলে মিলে যাওয়া আসা। তিন মাস আগে পুরোহিত খুন তার একাকিত্বের কারণেই। সেটা আর হচ্ছে না। পুজো শহরেই হোক আর অজ পাড়াগাঁয়ে, পুরোহিতকে এসকর্ট করবে তরুণ দল।

সবচেয়ে বেশি পুজো চট্টগ্রামে। দেড় হাজারের কম নয়। সেখানকার যুদ্ধাপরাধী মির কাসেম আলির ফাঁসিতে স্বস্তির নিঃশ্বাস। জাঁকজমকে পুজো জমজমাট। আয়োজনে আগমনী থেকে বিসর্জন, বিচ্যুতি নেই কোথাও। নিরঞ্জনের রুট মণ্ডপ থেকে বঙ্গোপসাগর। গোপালগঞ্জে ১২০০, সিলেটে ৯০০ পুজো। তাড়াহুড়ো নয়, হাতে সময় নিয়েই সব কিছু করা। ঢাকায় ২২৫টি পুজো। বাজেট জেলার পুজোর চেয়ে অনেক বেশি। এমনকি কলকাতার পুজো হার মানতে বাধ্য। দু’মাস আগে গুলশনে ছড়িয়েছে রক্ত আর বারুদের গন্ধ। সেখানেই পুজোর ধূপ ধুনো ফুলের গন্ধে দেবতার আহ্বান। বাজেট এক কোটি টাকার ওপর। দর্শনার্থী সামাল দিতে অতিরিক্ত নিরাপত্তা। তাক লাগানো মণ্ডপ দেখতে থমকাতেই হবে। আলোকসজ্জায় নিশিযাপন দিনের আনন্দে। ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরের পুজো কম যায় না। বাজেট ২৫ লাখ। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১১ অক্টোবর নবমীতে সেখানে যাবেন উৎসবে ভাগ নিতে। মতিঝিলে রামকৃষ্ণ মিশনের পুজোতেও থাকবেন। বাম-ডান কোনও রাজনৈতিক দলই পূজো থেকে দূরে নেই। সহযোগিতার লম্বা হাত। জাতীয় ছুটি দশমীর দিন, বুধবার, ১২ অক্টোবর। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী তাপস পাল জানালেন, ছুটি এক দিনের জায়গায় তিন দিন হলে ভাল হয়। যারা পুজো করবে তাদের আর অফিস থেকে আলাদা করে ছুটি নিতে হয় না। বিজয়া দশমীতে ঢাকার সব প্রতিমা ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে গিয়ে মিলবে। সেখান থেকে বিসর্জন বুড়িগঙ্গায়। তারপর বিজয়ার আলিঙ্গন। মুসলমান, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, হিন্দু সবাই মিলেমিশে একাকার।

আরও পড়ুন

পুজোর ওই আলাদা গন্ধটা আসলে বোধহয় বাবার

ছবি: সংগৃহীত।

religion durga puja Bangladesh
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy