Advertisement
E-Paper

লাইভ: শেষ হল বাংলাদেশে ভোটগ্রহণ, হিংসার বলি অন্তত ১৪, গণনা শুরু

দলীয় সরকারের অধীনে এবং সব দলের অংশগ্রহণে, ১৯৯০ সালের পর এই প্রথম ভোট হচ্ছে বাংলাদেশে।

অঞ্জন রায়

শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৭:০০
আজ বাংলাদেশের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। —ফাইল চিত্র।

আজ বাংলাদেশের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। —ফাইল চিত্র।

ভোটগ্রহণ ঘিরে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে সংঘর্ষে উত্তপ্ত ধ্যেই চলছে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। নির্বাচনী সংঘর্ষে এবং পুলিশের গুলিতে অন্তত ১৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। এর মধ্যে কুমিল্লা আর চট্টগ্রামে মৃত্যু হয়েছে দু’জন করে। ভোট সংঘর্ষে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে রাঙামাটি, বগুড়া, রাজশাহী, ব্রাহ্মণবেড়িয়া, কক্সবাজার এবং নরসিংদীতে।

অন্য দিকে ঢাকা-১ আসনের নির্দল প্রার্থী সালমা ইসলাম, খুলনা-৫ আসনে জামায়াত প্রার্থী মিয়া গোলাম পরওয়ার, খুলনা ৩ আসনের বিএনপি প্রার্থী রফিকুল ইসলাম বকুল, বাগেরহাট-৩ আসনের বিএনপি প্রার্থী মোহম্মদ আবদুল ওয়াদুদ, জামালপুর-২ আসনের বিএনপি প্রার্থী সুলতান মাহমুদ, পাবনা-৫ আসনে বিএনপির ইকবাল হোসাইন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।

কড়া নিরাপত্তার প্রস্তুতি নিয়েই রবিবার সকাল ৮টায় (বাংলাদেশি সময়) শুরু হয়েছে ভোট। ভোটগ্রহণ চলবে বিকেল ৪টে পর্যন্ত। তার পরই ভোটগণনা। ফলাফল একটু একটু করে বেরোতে শুরু করবে সন্ধে থেকেই।

ভোটগ্রহণ পর্ব শুরু হওয়ার পর বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় থেকে মারধর, বুথ থেকে এজেন্ট বার করে দেওয়ার অভিযোগ এনেছে বিরোধীরা। যদিও শাসক দল আওয়ামি লিগ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারি বলেছে, “বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া ভোট চলছে শান্তিপূর্ণ ভাবেই।”

সকাল সোয়া ৮টার নাগাদ ঢাকার সিটি কলেজ কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিয়ে আসেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামি লিগ সভাপতি শেখ হাসিনা। ভোট দেওয়ার পর তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। বলেন, “নৌকার বিজয় হবে। স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির বিজয় হবে। মানুষ উন্নয়নের পক্ষে তাদের রায় দেবে।”

এক নজরে বাংলাদেশের ভোটচিত্র:

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে এবং তাঁর তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, আজকের পর বিএনপি-জামায়াতের হত্যাকাণ্ড বন্ধ হবে। কারণ আজকে নির্বাচন। এরপর তাদের (বিএনপি-জামায়াত) আর কোনো উপায় নেই।

বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন পুলিশের আইজিপি মহম্মদ জাবেদ পাটোয়ারি।

• বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের জয় নিয়ে আত্মবিশ্বাসী। তিনি বলেন, “ভোটাররা যদি ভোট দিতে পারেন, তা হলে নিঃসন্দেহে একটা ভোট-বিপ্লব ঘটবে। সে ক্ষেত্রে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বিজয় অনিবার্য।”

• চট্টগ্রামের বাঁশখালিতে পুলিশের সঙ্গে জামাত এবং বিএনপি-কর্মীদের সঙ্গে স‌ংঘর্ষে নিহত ১ বিরোধী সমর্থক।

• কুমিল্লার চন্দিনায় পুলিশের গুলিতে নিহত ১ ব্যক্তি।

মিরপুর-১৬ আসনের একটি ভোটগ্রহণ কেন্দ্র এম এম বি সি মডেল ইনস্টিটিউট-এর কাছে এক ব্যক্তিকে মারধর করার অভিযোগ।

রবিবার সকাল থেকেই ভোটের লাইনে ভিড় দেখা গিয়েছে। ছবি: এএফপি।

• রাঙামাটিতে আওয়ামি লিগ এবং বিএনপি কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে নিহত ইউনিয়ন যুব লিগের সাধারণ সম্পাদক। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম বাসেরুদ্দিন (৩৬)।

ওই সংঘর্ষে জনা পনেরো আহত হয়েছেন।

নোয়াখালি-৩ আসনে বেগমগঞ্জে পূর্ব বাবুনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোটগ্রহণ সাময়িক ভাবে স্থগিত করা হয়েছে।

নোয়াখালির ওই ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে দুষ্কৃতীরা ব্যালটপেপার ছিনতাই করে বলে অভিযোগ।

আওয়ামি লিগের জয় নিয়ে আত্মবিশ্বাসী শেখ হাসিনা। ছবি: রয়টার্স।

• সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “স্বাধীনতার সমর্থনকারী শক্তির বিজয় হবে। মানুষ উন্নয়নের পক্ষে তাদের রায় দেবে।”

ভোটের পর শেখ হাসিনার দাবি, “দলীয় প্রতীক নৌকার জয় হবেই”। সেই সঙ্গে হাসিনা জানিয়েছেন, অন্য কোনও দল ক্ষমতায় এলে তিনি এবং তাঁর দল তা মেনে নেবেন।

রবিবার সকালে ভোটগ্রহণ শুরুর মিনিট পনেরোর মধ্যে ঢাকার সিটি কলেজ কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেন শেখ হাসিনা।

ভোট দিলেন প্রধানমন্ত্রী তথা আওয়ামি লিগের প্রধান শেখ হাসিনা। দলের জয় নিয়েও আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।

৭৮ বছর বয়সী তাইজুল ইসলামকে দিয়ে ভোটগ্রহণ শুরু হল।

ঢাকায় একটি বুথের বাইরে ভোটারদের তালিকা দেখার ভিড়। ছবি: এএফপি।

সংসদীয় বা নির্বাচনী গণতন্ত্রের রাস্তায় আজ আরও এক ধাপ এগোতে চলেছে বাংলাদেশ। গণতন্ত্রের উত্সবে মেতে উঠল ভাষা আন্দোলনের দেশ, যার স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্ণ হতে যাচ্ছে আর ঠিক তিন বছর পর। অর্থাত্, এই ভোটে যারা জিতবে, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালনের সরকারি দায়িত্ব বর্তাবে তাদের হাতেই।

কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে ভোট হচ্ছে রবিবার। প্রাক্ নির্বাচনী হিংসা এ বার অতীতের থেকে কম। কিন্তু ভোটের দিনে সব পরিস্থিতির মোকাবিলায় তৈরি রাখা হয়েছে সে দেশের সেনা থেকে শুরু সব ধরণের নিরাপত্তা বাহিনীকে। বাংলাদেশ জুড়ে শনিবার থেকেই মোবাইলের থ্রি-জি এবং ফোর-জি পরিষেবা স্তব্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

দলীয় সরকারের অধীনে এবং সব দলের অংশগ্রহণে, ১৯৯০ সালের পর এই প্রথম ভোট হচ্ছে বাংলাদেশে। এটা বাংলাদেশের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সাধারণ মানুষের মধ্যে ভোটদানের উত্সাহ নজর পড়ার করার মতো। আবার এই ভোটের দিকে তাকিয়ে আছে ভারত-সহ বাকি বিশ্বও। এই ভোট সফল এবং শান্তিপূর্ণ হলে, বাংলাদেশের নির্বাচনী গণতন্ত্রের ভিত আরও শক্ত হবে সন্দেহ নেই।

আরও পড়ুন: বজ্র আঁটুনিতে রবিবার ভোট বাংলাদেশে, বন্ধ থ্রি-জি ফোর-জি পরিষেবা, যানবাহনেও নিয়ন্ত্রণ​

বাংলাদেশের মোট ৩০০ সংসদীয় আসনের একটিতে প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে রবিবার ভোট হচ্ছে না। ২৯৯টি আসনে হচ্ছে ভোটের লড়াই। মোট ৪০ হাজার ১৮৩ ভোটকেন্দ্রের ২ লক্ষ ৬ হাজার ৪৭৭ ভোটকক্ষে ভোটগ্রহণ হচ্ছে। মোট ভোটারের সংখ্যা এ বার ১০ কোটি ৪২ লক্ষ ৩৮ হাজার ৬৭৮ জন। এর মধ্যে মহিলা ভোটার ৫ কোটি ১৬ লক্ষ ৬৬ হাজার ৩১২ এবং পুরুষ ভোটার ৫ কোটি ২৫ লক্ষ ৭২ হাজার ৩৬৫ জন।

নির্বাচনে প্রার্থীর সংখ্যা ১ হাজার ৮৩১ জন। এর মধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে ১ হাজার ৭৪৫ জন প্রার্থী। ৯৬ জন নির্দল। বাংলাদেশের নিবন্ধিত ৩৯টি রাজনৈতিক দলের সবগুলোই এই ভোটে অংশ নিয়েছে। এ বারে সবচেয়ে বেশি প্রার্থী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর। হাতপাখা প্রতীকে এই দলটির প্রার্থীর সংখ্যা ২৮১ জন।

এ বারের নির্বাচনে ৬টি আসনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন ব্যবহার করে ভোট গ্রহণ হচ্ছে।

আরও পড়ুন: ঢাকায় সেনা টহল, আতঙ্ক হুমকি বার্তায় ​

বাংলাদেশের একাদশ সংসদ নির্বাচনের সময় মেট্রোপলিটন এলাকায় প্রতিটি ভোটকেন্দ্র নিরাপত্তার দায়িত্বে মোতায়েন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১৬ জন করে সদস্য। সশস্ত্র পুলিশ তিন জন, আনসার ১২ জন ও একজন করে গ্রাম পুলিশ। অন্য দিকে ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে বাড়তি দুই পুলিশ-সহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মোট সদস্য থাকবেন মোট ১৮ জন। সব মিলিয়ে সারা বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকছে বিভিন্ন আইনশৃংখলা বাহিনীর প্রায় ৭ লাখ সদস্য। সারা দেশে যানবাহন চলাচলের উপর আরোপ করা হয়েছে বিধিনিষেধ। রবিবারে বাংলাদেশে সরকারি ছুটিও ঘোষণা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন এলাকার রাস্তায় সেনাবাহিনী টহল চলছে।

এ বার ভোটের লড়াই হচ্ছে মূলত আওয়ামি লিগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের সঙ্গে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের। দণ্ডিত হওয়ার কারণে এ বারের নির্বাচনে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া অংশ নিতে পারছেন না। তিনি এখন জেলবন্দি। তাঁর ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও দণ্ডের কারণে নির্বাচনের বাইরে। তিনি লন্ডনে রয়েছেন।

এ বারের নির্বাচনে বিধিনিষেধ বেশ কড়া। ভোটকেন্দ্রের ভেতরে মোবাইল ফোন ব্যবহারেও নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, কেন্দ্রের ভেতরে কেবল প্রিসাইডিং অফিসর এবং কেন্দ্রের নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশের ইনচার্জ মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন। ভোটাররা মোবাইল ফোন সঙ্গে নিয়ে কেন্দ্রে যেতে পারলেও ফোন বন্ধ রাখতে হবে। ভোটের দিন সড়কপথে যান চলাচল বন্ধ থাকছে। তবে বিদেশে যাওয়া, হাসপাতালে যাওয়া ইত্যাদি প্রয়োজনীয় কাজে যাতায়াতে বিধিনিষেধ শিথিল থাকছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।

Bangladesh Election 2018 Bangladesh General Election 2018 BNP EVM Security Sheikh Hasina
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy