যুদ্ধাপরাধীদের দেওয়া সব প্লটের বরাদ্দ বাতিলের সিদ্ধান্ত নিল বাংলাদেশের সরকার। জানালেন সে দেশের গৃহ নির্মাণ ও পূর্তমন্ত্রী মোশাররফ হোসেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডের দায়ে অভিযুক্ত এবং একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তেরা বিগত বিভিন্ন সরকারের আমলে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কাছে থেকে সরকারি প্লটের বরাদ্দ পেয়েছিলেন। এদের মধ্যে ছিলেন বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার অন্যতম অভিযুক্ত মেজর ডালিম এবং একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া মতিউর রহমান নিজামিও।
জামাত-ই-ইসলামি নেতা মতিউর রহমান নিজামিকে ২০০৬ সালে ‘রাষ্ট্রীয় কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ’ প্লট দেওয়া হয়েছিল। একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে চলতি বছরের ১০ মে নিজামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ঢাকার অভিজাত এলাকা বনানীতে একটি পাঁচ কাঠার প্লট ২০০৬ সালের ২১ মে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ নিজামিকে দেয়। ওই সময় বাংলাদেশের ক্ষমতায় ছিল বিএনপি-জামাত জোট। আর নিজামি ছিলেন সেই সরকারের শিল্পমন্ত্রী। তার আগে ১৯৯৫ সালে এই প্লটটিই আজিজুর রহিম নামের এক জনকে বরাদ্দ করা হয়েছিল। কিন্তু বিএনপি-জামাত জোট সরকার আগের বরাদ্দ বাতিল করে ওই প্লট নিজামিকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। আজিজুর রহিম বর্তমান সরকারের পূর্ত মন্ত্রকের সচিবের কাছে অভিযোগ দায়ের করলে তদন্ত শুরু হয়। ঢাকার বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, আজিজুর রহিম ওই প্লটের জন্য তিন লক্ষ টাকার কিস্তি শোধ পর্যন্ত করে দিয়েছিলেন। তা সত্ত্বেও প্লটটি নিজামিকে দিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুন: জাকির নাইকের চ্যানেল বন্ধ করল ঢাকা
নিজামি জমিটি পাওয়ার পর তা জামাত নেতাদের পরিচালিত মিশন ডেভেলপার লিমিটেডের নামে লিজ দেন, যা রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ অনুমোদিত নয়। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী মতিউর রহমান নিজামির ওই বাড়ির নাম ‘মিশন নাহার’। নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ‘মিশন’ আর নিজামির স্ত্রী শামসুন নাহার নিজামির নাম থেকে ভবনটির এ নাম।
এর আগে এই বছরের ১৫ জুন বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে পূর্তমন্ত্রী মোশাররফ হোসেন বলেছিলেন, “নিয়ম বহির্ভূতভাবে জামাতের বিভিন্ন নেতা কিংবা যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত, সাজাপ্রাপ্তদের প্লট বরাদ্দ করা হয়ে থাকলে তা তদন্ত করে দেখা হবে এবং পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।” আজ নিজামির প্লট বরাদ্দ বাতিলের ঘটনা সেই ঘোষণারই ধারাবাহিকতায়।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী মাহাবুবুল হক শাকিল তাঁর ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন- ‘‘১৯৭৫ পরবর্তী সরকারগুলো যুদ্ধাপরাধীদের নামে যে সব প্লট বরাদ্দ দিয়েছিল জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার সেইসব প্লট বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জনগণের সরকারকে অভিনন্দন এই সিদ্ধান্তের জন্য। আসুন, মুক্তিযুদ্ধের সরকারের পাশে দাঁড়াই। পরবর্তী প্রজন্মের জন্য এমন দিন এনে দেই, যে দিন জাতির পিতার খুনি ও চার জাতীয় নেতার হত্যাকারীদের সকল সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হবে’’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy