Advertisement
E-Paper

পাবনায় প্রমথ চৌধুরীর পৈর্তৃক ভিটে দখলমুক্ত করার দাবিতে সমাবেশ

বাংলাদেশে তিন দশকের বেশি সময় ধরে বেদখল হয়ে আছে বাংলা সাহিত্যের চলিত গদ্য রীতির পুরোধা প্রমথ চৌধুরীর পাবনার পৈর্তৃক ভিটে। এরই মধ্যে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে মার্বেল পাথর খচিত দৃষ্টিনন্দন জমিদার বাড়ি। এই সাহিত্যিকের স্মৃতি সংরক্ষণে সরকারকে উদ্যোগ নেয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় জনগণ ও জনপ্রতিনিধি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১১:৫৮
এই ভাবেই দখল হয়েছে প্রমথ চৌধুরীর পাবনার পৈর্তৃক ভিটে (ডান দিকে)। বাঁ দিকে সেই পুরনো মন্দির। নিজস্ব চিত্র।

এই ভাবেই দখল হয়েছে প্রমথ চৌধুরীর পাবনার পৈর্তৃক ভিটে (ডান দিকে)। বাঁ দিকে সেই পুরনো মন্দির। নিজস্ব চিত্র।

বাংলাদেশে তিন দশকের বেশি সময় ধরে বেদখল হয়ে আছে বাংলা সাহিত্যের চলিত গদ্য রীতির পুরোধা প্রমথ চৌধুরীর পাবনার পৈর্তৃক ভিটে। এরই মধ্যে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে মার্বেল পাথর খচিত দৃষ্টিনন্দন জমিদার বাড়ি। এই সাহিত্যিকের স্মৃতি সংরক্ষণে সরকারকে উদ্যোগ নেয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় জনগণ ও জনপ্রতিনিধি।

প্রমথ চৌধুরীর বাবা ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট দুর্গা দাশ চৌধুরী ছিলেন পাবনার হরিপুরের বরেন্দ্র এলাকার জমিদার পরিবারের সন্তান। আর পাবনা শহর-সহ চাটমোহরে ছড়ানো ছিল পরিবারটির বিপুল বিষয়সম্পত্তি। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে হারাতে বসেছে এই জমিদার পরিবারটির শেষ স্মৃতি চিহ্নও।

দেশ বিভাগের এক বছর আগে মারা যান প্রমথ চৌধুরী। পরে স্বজনেরা ভারতে চলে যাওয়ায় পৈত্রিক তিনটি ভিটে বাড়িকে ঘোষণা করা হয় অর্পিত সম্পত্তি হিসেবে। আর এই আইনে প্রমথ চৌধুরীদের বিশাল পুকুর, জমি, বসতবাড়ি, মন্দিরের প্রায় পুরোটাই এখন বেদখল। বর্তমানে তেরোটি পরিবার কাচাপাকা ঘর তুলে বাস করছে এখানে।

শুক্রবার সকালে প্রমথ চৌধুরীর ৭০তম মৃত্যুবার্ষিকীতে পাবনার চাটমোহর থানা মোড় আমতলায় প্রমথ চৌধুরীর পৈর্তৃক ভিটে দখলমুক্ত করার দাবিতে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হল। লেখকের স্মরণে এই সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন প্রমথ চৌধুরী স্মৃতি পরিষদের সভাপতি সাংবাদিক ইকবাল কবীর রনজু। সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুল মমিন সরকার।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, এই বিখ্যাত সাহিত্যিকের পৈত্রিক নিবাস দখল করে নিয়েছে কয়েকজন। বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করার অভিপ্রায়ে যে লেখক কাজ করে গেছেন নিরলস ভাবে তার পৈত্রিক ভিটে মাটি দখল করে অবৈধ দখলদাররা তা নিজেদের কবলে রেখেছে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন অজ্ঞাত কারণে নীরব ভূমিকা পালন করছে। ভূমিগ্রাসীদের কবল থেকে প্রমথ চৌধুরীর পৈত্রিক নিবাসকে মুক্ত করে তাঁর স্মৃতি সংরক্ষণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসীরা।

সমাবেশে বক্তব্য দেন চাটমোহর প্রেসক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক চলনবিল পত্রিকার সম্পাদক রকিবুর রহমান টুকুন, দৈনিক আমাদের বড়াল সম্পাদক হেলালুর রহমান জুয়েল, চাটমোহর চেম্বারের সভাপতি ও সাপ্তাহিক সময় অসময় পত্রিকার সম্পাদক কেএম বেলাল হোসেন স্বপন, প্রমথ চৌধুরী স্মৃতি পরিষদের সিনিয়র সহ সভাপতি মহঃ শামসুজ্জোহা, যুগ্ম সম্পাদক প্রভাষক এসএম আলি আহম্মেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আলি হায়দার সরদার, অর্থবিষয়ক সম্পাদক প্রধান শিক্ষক তাপস রঞ্জন তলাপাত্র, প্রচার সম্পাদক টিভি নাট্যাভিনেতা ইশারত আলি, প্রভাষক আবদুস সালাম, সহকারী অধ্যাপক মহঃ মোতাহার আলি, রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক শেখ সালাহ উদ্দিন ফিরোজ, পৌর আওয়ামি লিগের সাবেক সম্পাদক ইসহাক আলি মানিক, বাকি বিল্লাহ, উপজেলা ছাত্র লিগের সাধারণ সম্পাদক রাজীব কুমার বিশ্বাস প্রমুখ।

এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন চাটমোহর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মহঃ আলতাব হোসেন, সাংবাদিক শাহিন রহমান, মহম্মদ আলি জিন্না, বকুল রহমান, পবিত্র তালুকদার, প্রণয় তালুকদার, এমএ আলিম আবদুল্লাহ, সাবেক কাউন্সিলর জয়দেব কুণ্ডু, গীতিকার মহিতোষ পাল, সিদ্দিক মিলন, মাহবুব হাসান লিটু, ইউনুস আলি, রাশেদুল ইসলাম, লিটন শেখ প্রমুখ।

সভায় বক্তারা অবিলম্বে সাহিত্যিক প্রমথ চৌধুরীর পৈর্তৃক নিবাস অবৈধ দখলদারদের কবল থেকে উদ্ধার করে প্রমথ চৌধুরীর স্মৃতি সংরক্ষণের দাবি জানান।

এলাকার সাধারণ মানুষের, হরিপুরে প্রমথ চৌধুরীর পৈত্রিক নিবাস হওয়ায় আমরা গর্ব বোধ করি। কিন্তু তাঁর ঐতিহ্য আমরা রক্ষা করতে পারিনি। এর জন্য সরকারের উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।

স্থানীয়দের দাবি, প্রমথ চৌধুরীর ভিটে দখলদারদের কবল থেকে মুক্ত করে এখানে তাঁর নামে একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হোক।

প্রমথ চৌধুরী স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদের অন্যতম সদস্য তাপস রঞ্জন তলাপাত্র জানান, যাঁর কল্যাণে বাংলা সাহিত্যে আধুনিকতা এসেছে, এমন দেশ বরেণ্য একজন সাহিত্যিকের ভিটে মাটি অবৈধ দখলদাররা দখল করে থাকবে এটা কাম্য নয়।

আরও পড়ুন:
চেপে ধরেছে ক্যান্সার, কিন্তু জীবন ছাড়া কিছু নিয়ে ভাবছেন না সৈয়দ শামসুল হক

Pramatha Chowdhury
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy