জেএমবি এ বার জোড় দিচ্ছে মহিলা ব্রিগেডে।
মেয়েদের মন পেতে মরিয়া জামাত। পাশে দাঁড়ানো, জিহাদি বই পড়ানো, ধীরে ধীরে হাতে বন্দুক ধরানো। যে ভাবেই হোক নিরাপত্তা বাহিনীর জগদ্দল পাথরটা নড়ানো দরকার তাদের দিয়েই। পুলিশকে এড়ানো যাচ্ছে না। গোপন আড্ডায় লুকিয়েও রেহাই নেই। খোঁজ নিয়ে ঠিক ধরে ফেলছে। এ ভাবে চললে জঙ্গিরা আর বাঁচবে না। জামাত শেষ হয়ে যাবে। পাকিস্তান বেকায়দায়। তাদের সাহায্য পাওয়া দুষ্কর। অধিকাংশ তহবিল সংগ্রাহক নিহত। মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার লোক নেই। রাজনৈতিক সহযোগিতা বন্ধ। আগে যারা পাশে দাড়িয়েছিল তারা সরেছে। এ অবস্থা থেকে উদ্ধার করতে পারে নারী বাহিনী। চট করে তাদের উপর সন্দেহের কোপ পড়বে না। সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢোকাটাও সহজ। পশ্চিমবঙ্গ ত্রিপুরার চেয়ে অসম অনেক নিরাপদ। সেখানে জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে রফা করে অপারেশন চালান যেতে পারে।
মুশকিল হচ্ছে, চেষ্টা করেও মেয়েদের মন বিশেষ পাওয়া যাচ্ছে না। আবোল তাবোল বুঝিয়ে মাথা খাওয়া অসম্ভব। তারা দুনিয়া দেখছে। কোথায় কী হচ্ছে, না হচ্ছে, নখদর্পণে। ইন্টারনেটে বিশ্ব। দেশের পর দেশের মিছিল। কারা এগোচ্ছে, কাদের পিছিয়ে পড়তে হচ্ছে জানতে অসুবিধে নেই। সাফল্য ব্যর্থতার কারণটা স্পষ্ট। যারা মার খাচ্ছে তারা উঠে দাঁড়াতে লড়ছে। খোলনলচে পাল্টে নতুন হওয়ার প্রয়াস। হারলে চলবে না। অর্থনীতির বিকাশে বামপন্থীরাও বাজার অর্থনীতিতে সায় দিচ্ছে। চিনের মতো কমিউনিস্ট দেশও ১৮০ ডিগ্রি ঘুরেছে। অর্থনীতির রাশ আলগা করছে। অন্য দেশের সঙ্গে মিশতে চাইছে সহজে। গুরুত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশকে। একের পর এক প্রকল্পে অংশ নিচ্ছে। বিশ্বব্যাঙ্কের সেরা দেশের তালিকায় সিঁড়ি ভেঙে উঠছে বাংলাদেশ। বিস্ময় বিশ্বের। কী করে পারছে এত দ্রুত উপরে উঠতে। নিজের দেশের কথা ভেবে গর্বিত হতে পারে বাংলাদেশিরা। এ সময়ে জামাতের উৎপাত কী মানা যায়।
সব জেনে বুঝেও ভুল করে ফেলে কেউ কেউ। বস্তাপচা বাতিল জিনিসকে আনকোরা নতুন মনে হয়। ‘জেহাদি’ বইয়ে বন্দি জীবন। পা ফেলার ভুলে ফাঁদে। চূড়ান্ত ভ্রান্তিবিলাস। তারাও পার পাচ্ছে না। পুলিশের নজরে ঠিক চলে আসছে। উদ্ধার করে ঠিক রাস্তায় ফেরান হচ্ছে। চট্টগ্রামের বোয়ালখালি উপজেলার পূর্ব গোমদণ্ডি আইস ফ্যাক্টরি রোডে পেতন আউলিয়ায় শাহ মাজারের পাশের বাড়িতে বৈঠকে বসেছিল নারী জঙ্গিরা। সংখ্যায় বেশি নয়, মাত্র পাঁচ। নিঃশব্দে পুলিশ পৌঁছয় সেখানে। আচমকা পুলিশ দেখে তারা হতচকিত। টের পেল কী করে গোপন আড্ডা। প্রতিবেশিরাই কি পুলিশকে জানাল। তার মানে, মানুষ চাইছে না তাদের। অপরাধী বলে চিহ্নিত করছে। জনবিচ্ছিন্ন হয়ে কি কোনও আন্দোলন সম্ভব। চুপচাপ পুলিশের হাতে নিজেদের সমর্পণ করে নিশ্চিন্ত। বাধা দেওয়া বা প্রতিরোধ গড়ার কোনও অবকাশ ছিল না। অস্ত্র নেই, প্রশিক্ষণও নেই। শুধু বইয়ে বইয়ে বিপ্লব। কলেজে ফার্স্ট ইয়ারের ছাত্রী। স্কুলের শৃঙ্খলার বাঁধন ছিঁড়ে সবে মুক্তির স্বাদ। যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকে জগৎটা কী ভাবে ঘুরছে, ভাল করে দেখা। পুস্তক আর ইন্টারনেটই জানালা। তাও আলো অন্ধকার ঠাহর করতে ভুল হয়ে যায়। জিজ্ঞাসাবাদের পরেও পুলিশ বুঝতে পারছে না, সত্যিই তারা কতটা জঙ্গি হয়ে উঠছে। জঙ্গিপনায় সবে হাতেখড়ি বলেই মনে করা হচ্ছে। তাদের ঘরে মিলেছে প্রচুর জিহাদি বই, অস্ত্র নেই। শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার সীমান্ত গ্রাম হারিয়াকোনাতে গ্রেফতার চার যুবক। তিন জন ঢাকা কলেজের, একজন ময়মনসিংহ আনন্দমোহন কলেজের ফার্স্ট ইয়ারের ছাত্র। জঙ্গিপনার সিলেবাস তারা কতটা রপ্ত করেছে আপাতত সেটাই বোঝার চেষ্টা।
আরও পড়ুন:
তিন জেএমবির ১২ বছর করে কারাদণ্ড
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy