প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ছাড়পত্র পাওয়া বাড়ির সংখ্যা যদি মাপকাঠি হয়, তবে নিম্ন ও মধ্যবিত্তের মাথায় ছাদের জোগানে প্রথম দশে ঠাঁই পেয়েছে রাজ্য। এমনকী মহারাষ্ট্র, তেলেঙ্গানাকে টপকে জায়গা করে নিয়েছে ছ’নম্বরে। যদিও প্রথম তিন রাজ্যের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের ফারাক এ ক্ষেত্রে অনেকখানি।
কেন্দ্রের হিসেব বলছে, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ছাড়পত্র পাওয়া মোট বাড়ির ৮২ শতাংশই প্রথম দশটি রাজ্যের দখলে। ৫ লক্ষের বেশি বাড়ির ছাড়পত্র পেয়ে শীর্ষে অন্ধ্রপ্রদেশ। সেখানে সুদে ভর্তুকি বাবদ কেন্দ্রের বরাদ্দ ৮,০০০ কোটি টাকারও বেশি। পশ্চিমবঙ্গে ছাড়পত্র পেয়েছে প্রায় ১.৪৫ লক্ষ বাড়ি। কেন্দ্রের আর্থিক সহায়তা দু’হাজার কোটির বেশি।
এই প্রথম নয়। বিশ্ব জোড়া মন্দা থেকে শুরু করে হালের নোট সঙ্কট কিংবা জিএসটি— বারবার সমস্যার সময় রাজ্যের নির্মাণ শিল্পকে বৈতরণি পার করেছে কম দামি আবাসন। এখন প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা ঘোষণার পরে সারা দেশের নির্মাণ শিল্পই এই বাজার ধরতে ঝাঁপিয়েছে।
কেন্দ্রের পরিকল্পনা, ২০২২ সালের মধ্যে দু’ কোটি বাড়ি তৈরি। শুধু শহরেই ১.৮ কোটি। তাদের দাবি, শহরে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আওতায় গত দু’ বছরে প্রায় ২৪ লক্ষ বাড়ি তৈরির ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। বরাদ্দ প্রায় ১.২৭ লক্ষ কোটি টাকা।
উল্লেখ্য, নোট বাতিলের পরে গত ৩১ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঘোষণা করেছিলেন গৃহঋণে সুদে ভর্তুকির এই প্রকল্পের কথা। জানানো হয়েছিল, শহরে ও গ্রামে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বিভিন্ন অঙ্কের গৃহঋণে নানা হারে সুদে ভর্তুকি পাবেন ফ্ল্যাট বা বাড়ির ক্রেতা। তখন থেকেই এই সুযোগ কাজে লাগাতে তৎপর হয়েছে আবাসন শিল্প।
নির্মাণ শিল্পের সংগঠন ক্রেডাইয়ের দাবি, চলতি বছরে এই যোজানোর আওতায় আবাসন প্রকল্প ঘোষণার সংখ্যা বাড়বে। তাই কম দামি বাড়ি তৈরিতে নজর দিচ্ছে টাটা হাউজিং, শাপুরজি-পালোনজি, ওয়াধয়া গোষ্ঠী, মহীন্দ্রা লাইফস্পেসেস-এর মতো বড় মাপের নির্মাণ সংস্থাগুলিও।
তথ্য বলছে, কলকাতায় বছরে মধ্যবিত্তদের ফ্ল্যাট তৈরি হয় ১৫ থেকে ১৭ হাজার। ক্রেডাই বেঙ্গলের প্রেসিডেন্ট নন্দু বেলানির দাবি, চলতি বছরে তা বেড়ে হবে প্রায় ২২ হাজার। চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়েই এই সরবরাহ বাড়ছে বলে মনে করেন তিনি। বিজিএ রিয়েলটির প্রধান রাজীব ঘোষ, সিদ্ধা গোষ্ঠীর সঞ্জয় জৈন, ইডেন গোষ্ঠীর সচ্চিদানন্দ রাই ও জৈন গোষ্ঠীর ঋষি জৈন, সকলেই জানান, নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের বাজার ধরতে এখন প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনাই পাখির চোখ তাঁদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy