তিনি কংগ্রেসের সংসদীয় দলের কোনও পদে নেই। লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী বিদেশ সফরে। তাঁর বদলে প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা শুক্রবার সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের শেষে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার দফতরে প্রথামাফিক চায়ের আসরে হাজির হলেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সামনে রাজনাথ সিংহের পাশে বসে একসঙ্গে চা খেলেন। আড্ডা দিলেন। তিন দেশের সফর শেষে বৃহস্পতিবার রাতে দিল্লি ফেরা প্রধানমন্ত্রীকে তাঁর সফর নিয়ে জিজ্ঞাসাও করেছেন।
শুধু ‘চায়ে পে চর্চা’ নয়। সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের শুরুতে বন্দে মাতরম্-এর সার্ধশতবর্ষ নিয়ে আলোচনায় এ বার প্রিয়ঙ্কাই কংগ্রেসের হয়ে ইনিংস শুরু করেছিলেন। তাঁর বক্তৃতা রাহুল গান্ধীর এসআইআর তথা ভোট চুরি নিয়ে বক্তৃতার থেকেও বেশি ধারালো ছিল বলে বিরোধী শিবির একমত। শুধু মোদী সরকারকে নিশানা নয়, হাসি মুখে বিজেপির পাল্টা আক্রমণও সামলেছেন প্রিয়ঙ্কা। সংসদ চত্বরেও নিয়মিত সংবাদমাধ্যমের সামনে মোদী সরকারকে নিয়মিত নিশানা করেছেন। সর্বভারতীয় কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক হলেও প্রিয়ঙ্কার এখন নির্দিষ্ট দায়িত্ব নেই। ওয়েনাড় থেকে প্রথম বার সংসদে আসা প্রিয়ঙ্কা মূলত কংগ্রেসে ‘ক্রাইসিস ম্যানেজার’-এর কাজ করেন। অতীতে তিনি উত্তরপ্রদেশের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
আজ প্রধানমন্ত্রী, রাজনাথ, স্পিকারের সঙ্গে চায়ের আসরে কংগ্রেসের প্রতিনিধিত্ব করায় প্রশ্ন উঠেছে, প্রিয়ঙ্কা কি এ বার দলে নতুন ভূমিকায় আসতে চলেছেন? সূত্রের খবর, স্পিকারের চায়ের আসরে কুড়ি মিনিটের আড্ডায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রিয়ঙ্কা জানতে চান, তাঁর ইথিয়োপিয়া, জর্ডন, ওমান সফর কেমন হল? মোদী জানান, ইথিয়োপিয়া সম্পর্কে বাইরে থেকে যা মনে হয়, আসলে দেশটা অন্য রকম। দিল্লির দূষণে কাশি, গলার সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়। প্রিয়ঙ্কা মন্ত্রীদের জানান, তিনি ওয়েনাড় থেকে আনা ভেষজ ওষুধ ব্যবহার করেন, যাতে অ্যালার্জির মোকাবিলা করা যায়।সমাজবাদী পার্টির ধর্মেন্দ্র যাদব বলেন, সংসদ অধিবেশন আরও লম্বা হতে পারত। মোদী ধর্মেন্দ্রর গলার জোর নিয়ে ঠাট্টা করে বলেন, তাঁর গলা যাতে ভেঙে না যায়, তাই জন্যই অধিবেশন সংক্ষিপ্ত রাখা হয়েছে। এনসিপি-র সুপ্রিয়া সুলে, ডিএমকে-রডি রাজার মতো অন্য দলের নেতারাও ছিলেন। মোদী আরএসপি-র এন কে প্রেমচন্দ্রনের সমস্ত বিল নিয়ে প্রস্তুতি নিয়েসংসদে আসার প্রশংসা করেন। কিছু সাংসদ বলেন, নতুন সংসদ ভবনে পুরনো সংসদ ভবনের সেন্ট্রাল হল নেই। যেখানে বসে আড্ডা দেওয়া যায়। মোদী তাঁদের বলেন, ও সব অবসরের পরে ভাববেন। এখন আপনাদের অনেক কাজ করা বাকি। অন্য দিকে রাজ্যসভার চেয়ারম্যান সি পি রাধাকৃষ্ণনের চায়ের আসরে কংগ্রেসের জয়রাম রমেশ মনে করিয়েছেন, প্রাক্তন চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়ের ইস্তফার পরে পাঁচ মাস কাটতে চললেও এখনও তাঁকে বিদায়ী সংবর্ধনা দেওয়া হয়নি।
এর আগে লোকসভার বিরোধী দলনেতা হওয়ার পরে রাহুল গান্ধী স্পিকারের চায়ের আসরে হাজির থেকেছেন। বাদল অধিবেশনের সময় বিরোধীদের বলতে না দেওয়ায় বিরোধীরা স্পিকারের চায়ের আসর বয়কট করেছিলেন।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)