কল-কাটার (কল ড্রপ) সমস্যা লুকোতে বিশেষ প্রযুক্তির হাত ধরলে, কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে। শুক্রবার রাজ্যসভায় এক প্রশ্নের উত্তরে এ কথা জানালেন কেন্দ্রীয় টেলিকম মন্ত্রী মনোজ সিন্হা। কল কাটা-সহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলতে সোমবার টেলি পরিষেবা সংস্থাগুলির কর্ণধারদের সঙ্গে বৈঠকেও বসবেন তিনি।
একই সঙ্গে তাঁর দাবি, টিভির জন্য তুলে রাখা যে স্পেকট্রাম ব্যবহৃত হয় না, এ বার তার একটি অংশ কাজে লাগানো হবে আন্তর্জাতিক মোবাইল পরিষেবার কাজে। তা ছাড়া, কল-কাটার সমস্যা কমাতে সরকারি ইমারতের উপরে টাওয়ার বসানোর জন্যও নগরোন্নয়ন মন্ত্রক শর্তসাপেক্ষে রাজি হয়েছে বলে তাঁর দাবি।
কথার মাঝখানে বারবার সংযোগ ছিন্ন হওয়ার সমস্যার নাম ‘কল ড্রপ’। আজ অনেক দিন ধরেই এই সমস্যায় গ্রাহকদের প্রাণ ওষ্ঠাগত। পরিস্থিতি এতটাই সঙ্গিন যে, তা বারবার বিষয় হয়েছে সংসদে আলোচনারও। এ দিন রাজ্যসভায় সিন্হা জানান, কল-কাটার সমস্যা লুকোতে সংস্থাগুলি রেডিও-লিঙ্ক প্রযুক্তির হাত ধরছে কি না, দিল্লি, মুম্বই, হায়দরাবাদ-সহ ১২টি শহরে তা পরীক্ষা করিয়ে দেখেছে টেলিকম নিয়ন্ত্রক ট্রাই। দেখা গিয়েছে, অনেক ক্ষেত্রে না-কেটে কল দীর্ঘ ক্ষণ চলছে ঠিকই। কিন্তু তার মান অত্যন্ত খারাপ। ফলে ভুগতে হচ্ছে গ্রাহকদের। রেডিও লিঙ্ক প্রযুক্তি ব্যবহারে অনেক সময় এমনটা হতে পারে। এই পরীক্ষার ফলাফল বিশ্লেষণের পরে সঠিক তথ্য সামনে এলে, সংশ্লিষ্ট টেলি পরিষেবা সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
অপর্যাপ্ত পরিকাঠামো যে কল-ড্রপ সমস্যার শিকড়, আগেই তা কার্যত মেনে নিয়েছে মোবাইল পরিষেবা সংস্থাগুলি। সে জন্য সরকারি নীতি এবং টাওয়ার বসানো নিয়ে আমজনতার ছুঁৎমার্গকে বারবার দুষেছে তারা। ওয়াকিবহাল মহল যদিও মনে করে, নানা কারণে পরিকাঠামোয় যথেষ্ট টাকা ঢালতে এগিয়ে আসেনি সংস্থাগুলিও। বিশেষজ্ঞদের দাবি, এ দেশে মোবাইল সংযোগের সংখ্যা যে গতিতে বেড়েছে, তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাড়েনি পরিকাঠামো। তা সে স্পেকট্রামের পরিমাণ হোক বা টাওয়ারের সংখ্যা।
এ দিন মন্ত্রী বলেছেন, দূরদর্শনের যে অব্যবহৃত টিভি-স্পেকট্রাম আছে, তার একাংশ আন্তর্জাতিক মোবাইল পরিষেবার জন্য ব্যবহার করা হবে। একই সঙ্গে তাঁর দাবি, কাঠামোর ক্ষতি না হলে এবং লাইসেন্স-ফি ঠিকঠাক মেটানো হলে, সরকারি ইমারতের মাথায় টাওয়ার বসানোর বিষয়েও রাজি হয়েছে নগরোন্নয়ন মন্ত্রক।
তাতে টেলি পরিষেবা সংস্থাগুলির উদ্বেগ অবশ্য পুরোপুরি যাচ্ছে না। বরাবরই তাদের দাবি, সুষ্ঠু পরিষেবা দেওয়ার পথে স্পেকট্রামের অভাব বাধা তো বটেই। সেই সঙ্গে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়তে গিয়ে পায়ে-পায়ে বাধার মুখে পড়ে তারা। সংস্থাগুলির মতে, কথার মাঝখানে কল-কাটার সমস্যা অনেক কারণে হতে পারে। সরকারি-বেসরকারি অফিস কিংবা ব্যক্তিগত বাড়ির ছাদে টাওয়ার বসাতে দিতে আপত্তি যেমন এর জন্য ‘দায়ী’, তেমনই অসুবিধা তৈরি করে ইমারতের ভিতরে মোবাইল পরিষেবার পরিকাঠামো বসাতে দিতে আপত্তি। সরকারি ইমারতে টাওয়ার বসানোর অনুমতি মিললে, প্রথম সমস্যা কিছুটা কমবে। কিন্তু বিল্ডিংয়ের ভিতরে পরিকাঠামো তৈরির ব্যবস্থাও দ্রুত করা জরুরি বলে তাদের অভিমত। টেলি পরিষেবা সংস্থাগুলির সংগঠন সিওএআই-এর দাবি, সরকারি-বেসরকারি ইমারতের মধ্যে পরিষেবার পরিকাঠামো বসাতে সহজে ছা়ড়পত্র দেওয়ার ব্যবস্থা চালু করতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy