Advertisement
২০ মে ২০২৪

ভারতকে লাল ফিতের ফাঁস আলগা করতে বলল সিঙ্গাপুর

বিদেশের মাটিতে ভারতীয় সংস্থার জন্য লাল কার্পেট অভ্যর্থনা নিশ্চিত করতে ভিন্‌ দেশি সংস্থার জন্যও লাল ফিতের ফাঁস আলগা করতে হবে দিল্লিকে। এক সাক্ষাৎকারে এই বার্তা দিলেন সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি লুং।

হাতে-হাত। মোদীর সঙ্গে লুং। সম্প্রতি নয়াদিল্লিতে।-এএফপি

হাতে-হাত। মোদীর সঙ্গে লুং। সম্প্রতি নয়াদিল্লিতে।-এএফপি

জয়ন্ত ঘোষাল
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০১৬ ০২:৫৩
Share: Save:

বিদেশের মাটিতে ভারতীয় সংস্থার জন্য লাল কার্পেট অভ্যর্থনা নিশ্চিত করতে ভিন্‌ দেশি সংস্থার জন্যও লাল ফিতের ফাঁস আলগা করতে হবে দিল্লিকে। এক সাক্ষাৎকারে এই বার্তা দিলেন সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি লুং। সন্ত্রাস দমনের প্রশ্নে পুরোদস্তুর ভারতের পাশে থাকলেও, মূলত ওই লাল ফিতের ফাঁসের সমস্যার কারণেই ব্যবসার বিষয়ে এ দেশের অবস্থান নিয়ে কিছুটা ক্ষুব্ধ তিনি।

সম্প্রতি ভারত সফরে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করেন লুং। এই সফরে সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আসা ব্যবসায়িক প্রতিনিধি দল মোদী সরকারকে বলে, ভারত সিঙ্গাপুরের বিনিয়োগ চায়। অথচ ভারতে সে দেশের সংস্থা লগ্নির প্রশ্নে কাঙ্খিত সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে না। যে ভাবে টাটা, ইনফোসিস, মহীন্দ্রার মতো ভারতীয় সংস্থাগুলি সিঙ্গাপুর-সহ সারা বিশ্বে ব্যবসা করছে, ঠিক সে ভাবে ভারতের বাজারেও সিঙ্গাপুরের সংস্থাগুলিকে ব্যবসার সুযোগের দাবি জানান তাঁরা।

খোদ লুং-ও সাক্ষাৎকারে জানান, শিল্পপতিরা যেমন চান, ভারত ঠিক তেমন মনোভাব দেখাচ্ছে না। জমি অধিগ্রহণ, আইনি ও আমলাতান্ত্রিক বাধা দু’দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। মোদীর কাছে তিনি জানিয়েছেন, দু’দেশের মধ্যে যে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে তিন বছর আলাপ-আলোচনা চলছে, সেটি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। মোদী যাতে নিজে সে বিষয়ে উদ্যোগী হন, তার জন্য অনুরোধ রেখেছেন তিনি। সমস্যার কথা বলেছেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের কাছেও।

প্রণববাবু অর্থমন্ত্রী থাকাকালীন পুরনো বকেয়া (রেট্রোস্পেকটিভ) কর নিয়ে ভোডাফোন-সহ বেশ কয়েকটি বহুজাতিকের সঙ্গে বিতর্কের শুরু। এখনও সিঙ্গাপুরের সংস্থাকে ভারতে ব্যবসা করতে এলে, কর নিয়ে নানা ঝামেলায় পড়তে হয়। সিঙ্গাপুরের অভিযোগ, তাদের ব্যবসায়ীদের সমান সুযোগ (লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড) ভারত দিচ্ছে না। এই সমস্ত সমস্যা থাকায় সিঙ্গাপুরের সঙ্গে এ বার তিনটি সমঝোতাপত্র (মউ) সই হলেও প্রধান বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত হয়নি।

সম্প্রতি মুকেশ অম্বানীর জিও-র সঙ্গে পাল্লা দিতে প্রধানমন্ত্রীকে পাল্টা প্রস্তাব দিয়েছিল বিএসএনএল। প্রতিযোগিতায় যুঝতে সরকারের কাছে কয়েক হাজার কোটি টাকা চেয়েছিল তারা। কিন্তু মোদী সেই প্রস্তাবে রাজি না-হয়ে উল্টে বরং সিঙ্গাপুরের টেলি পরিষেবা সংস্থা সিংটেল-কে বিনিয়োগের জন্য আমন্ত্রণ জানান। যার অংশীদার হল সুনীল মিত্তলের ভারতী গোষ্ঠীও। ভারত সরকার খোলাখুলি জানায়, প্রতিযোগিতা বাঞ্ছনীয়।

এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কথায়, কেন্দ্রের এই চেষ্টায় অম্বানী রুষ্ট হতে পারেন। কিন্তু খোলা বাজারে প্রতিযোগিতা হলে আখেরে পরিষেবা ভাল হবে। কমতে পারে মাসুলও। ভারতের কাছ থেকে তাই এখন লগ্নির বিষয়ে স্বচ্ছতা এবং লাল কার্পেট অভ্যর্থনার অপেক্ষায় সিঙ্গাপুর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE