E-Paper

যুদ্ধ নিয়ে চিন্তায় ব্যবসায়ী মহল

বাণিজ্যিক মহলের বার্তা, সংঘর্ষে বেশি ক্ষতি হবে পাকিস্তানের। তবে মাসুল গুনতে হবে ভারতকেও। আর্থিক অগ্রগতি থমকে যেতে পারে। মাথা তুলতে পারে মূল্যবৃদ্ধির হার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০২৫ ০৬:০৯
ব্যবসায়ী মহলের বার্তা, এমনিতেই সমস্যায় রয়েছে রফতানি বাণিজ্য।

ব্যবসায়ী মহলের বার্তা, এমনিতেই সমস্যায় রয়েছে রফতানি বাণিজ্য। —প্রতীকী চিত্র।

পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ লাগলে নাগরিক এবং প্রশাসনের কী ধরনের পদক্ষেপ করা দরকার, তার আপৎকালীন মহড়া আজ। এই পরিস্থিতিতে দুশ্চিন্তা বাড়ছে ব্যবসায়ীদের। পহেলগামে পর্যটক হত্যার প্রতিশোধ নিতে সন্ত্রাসবাদীদের চরম শাস্তি চাইছেন তাঁরা। তবে পড়শি দেশের সঙ্গে পুরোদস্তুর সংঘর্ষ ব্যবসাকে কোথায় নিয়ে গিয়ে দাঁড় করাবে, সেই উদ্বেগও চড়ছে।

খুচরো ব্যবসায়ীদের সংগঠন ‘কনফেডারেশন অব ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রেড অ্যাসোসিয়েশন্স’-এর সভাপতি সুশীল পোদ্দার বলেন, ‘‘আমরা চাই পহেলগামে হত্যাকারীদের শাস্তি হোক। তবে যুদ্ধে কোনও দেশের মঙ্গল হয় না।’’ বরং সুশীলবাবুরা চান, অবিলম্বে জঙ্গি ঘাঁটিগুলি চিহ্নিত করে গুঁড়িয়ে দেওয়া হোক। আগামী দিনেও সন্ত্রাসবাদ ঠেকাতে আরও পোক্ত হোক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। ব্যবসায়ী মহলের বার্তা, এমনিতেই সমস্যায় রয়েছে রফতানি বাণিজ্য। যুদ্ধ বাঁধলে আরও জটিল অবস্থার মধ্যে পড়বে বিশেষত ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি সংস্থাগুলি। বিপদে পড়বেন সাধারণ মানুষও। তাই অতি সাবধানে পা ফেলতে হবে সরকারকে। একই মত ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ফোরাম অব ট্রেডার্স অর্গানাইজ়েশন্স’-এর সাধারণ সম্পাদক রবীন্দ্রনাথ কোলের। তিনি বলেন, ‘‘কোভিডের পরে ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল ব্যবসা। যুদ্ধ শুরু হলে ফের কবে ঘুরে দাঁড়াতে পারব, জানি না। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ প্রমাণ করেছে এক বার শুরু হলে তা কবে শেষ হবে, তার নিশ্চয়তা নেই।’’

বাণিজ্যিক মহলের বার্তা, সংঘর্ষে বেশি ক্ষতি হবে পাকিস্তানের। তবে মাসুল গুনতে হবে ভারতকেও। আর্থিক অগ্রগতি থমকে যেতে পারে। মাথা তুলতে পারে মূল্যবৃদ্ধির হার। সংশ্লিষ্ট সব মহলই চাইছে, যুদ্ধে জড়ানোর আগে ভারত যেন সব দিক ভাল করে খতিয়ে দেখে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়।

বণিকসভা সিআইআই-এর সভাপতি সঞ্জীব পুরীর মতে, পহেলগামের মতো ঘটনার মোকাবিলা করার ক্ষমতা আছে ভারতের। তবে দেশবাসীর জীবন এবং বাণিজ্যে সংঘাতের ধাক্কা না লাগে, তা খেয়াল রাখতে হবে। বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবিলা করার সিদ্ধান্ত পুরোপুরি সরকারের এবং কেন্দ্রের যে কোনও পদক্ষেপকে সিআইআই সম্পূর্ণ সমর্থন করে। মার্চেন্টস চেম্বারের সভাপতি অমিত সারোগি বলেন, ‘‘ভারত যুদ্ধ চায় না। কিন্তু পরিস্থিতি কখনও এমন হয়ে যায় যে, সেটা ছাড়া অন্য পথ খোলা থাকে না।’’ ক্ষুদ্র শিল্পের সংগঠন ফসমি-র সভাপতি বিশ্বনাথ ভট্টাচার্যের দাবি, দু’দেশের সীমিত বাণিজ্য আরও অনিশ্চিত হয়েছে। এই অবস্থায় ছোট শিল্প কিছুটা বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে, মূলত যাঁরা সীমান্তবর্তী বাণিজ্যে যুক্ত বাড়তে পারে তাঁদের সমস্যা। অর্থনীতিবিদ অভিরূপ সরকার অবশ্য মনে করেন যুদ্ধ আদৌ হবে না। এর পুরোটাই এক শ্রেণির প্রচার। এর পিছনে কেন্দ্রেরও খানিকটা ইন্ধন রয়েছে বলেই মত তাঁর। তিনি বলেন, ‘‘আশঙ্কার কোনও প্রভাব নেই শেয়ার বাজারে। ফলে এটা প্রমাণিত বেশির ভাগ মানুষই মনে করছেন না
যুদ্ধ হবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Pahalgam Terror Attack Economy

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy