E-Paper

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে নেওয়া আদানিদের ৪৫৮৫৫ কোটি টাকার ঋণ মকুব! কাঠগড়ায় কেন্দ্র

বকেয়া ঋণের সমস্যা মেটাতে সংস্থা দেউলিয়া আদালতে যাওয়ার পরে তাদের ঋণদাতাদের নিয়ে গঠিত হয় ক্রেডিটর্স কমিটি। কেউ দেউলিয়া সংস্থা কিনতে চাইলে তারা যে দর হাঁকে, তা খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেয় ওই কমিটি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৭:৩৬
গৌতম আদানি।

গৌতম আদানি। —ফাইল চিত্র।

টাকা দিতে না পারায় দেউলিয়া আদালতে থাকা ১০টি সংস্থার ৬১,৮৩২ কোটি টাকার বকেয়া ঋণ মাত্র ১৫,৯৭৭ কোটিতে রফা করেছে ঋণদাতা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি। অর্থাৎ মকুব করেছে বেশির ভাগ বকেয়া। খবর, এই ১০টি সংস্থাকেই কিনেছিল গৌতম আদানির গোষ্ঠী। এই অবস্থায় রফার তথ্য তুলে ধরে প্রতিবাদে সরব হয়েছে ব্যাঙ্কের কর্মী ইউনিয়নগুলি। বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রকে বিঁধেছে বিরোধী শিবিরও। কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ এক্স-এ লিখেছেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রিয় পাত্র আদানি ওই সব সংস্থাকে হাতে নেওয়ায় ব্যাঙ্কগুলিকে অত কম টাকা নিতে বাধ্য করা হয়েছে।

অন্য দিকে, ধারাভি পুনর্গঠন প্রকল্পের নামে বৃহন্মুম্বইয়ের ১৫০০ একর লবণাক্ত জমি মহারাষ্ট্র সরকার আদানি গোষ্ঠীর হাতে তুলে দেওয়ার চক্রান্ত করছে বলে অভিযোগ করেছেন কংগ্রেস সাংসদ বর্ষা গায়েকওয়াড়। তাঁর দাবি, মুম্বইয়ের সাধারণ মানুষের ওই জমি পরিবেশের স্বার্থে গুরুত্বপূর্ণ। সেই জমিই দখল করতে চাইছে আদানিরা। এনডিএ পরিচালিত রাজ্য সরকারকে ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ তকমা দিয়ে তাঁর দাবি, এরা আদানিদের সুবিধা পাইয়ে দিতে সব কিছু করতে পারে।

নানা সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুরো বিষয়টি প্রকাশ্যে এনে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ব্যাঙ্ক কর্মীদের সংগঠন অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ় অ্যাসোসিয়েশন (এআইবিইএ)। প্রতিবাদে নেমে তাদের অভিযোগ, আদানিদের সুবিধা পাইয়ে দিতে অত কম টাকায় বকেয়া ঋণের ফয়সালা করেছে ব্যাঙ্কগুলি। ক্ষতি হয়েছে সাধারণ আমানতকারীদের। লাভ গুনেছেন শাসক ঘনিষ্ঠ পুঁজিপতি।

এআইবিইএ-র সভাপতি রাজেন নাগর বলেন, “মোদী সরকার যে সম্ভাব্য সব উপায়ে আদানিদের সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে, তা স্পষ্ট। এর জন্য দেউলিয়া আইনকেও ব্যবহার করতে ছাড়েনি। অত কম টাকায় বকেয়া ঋণের রফা করে আদানিদের সংস্থাগুলির লাভের পথ চওড়া করা হয়েছে। লোকসান গুনতে বাধ্য করা হয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিকে।’’ তাঁদের অভিযোগ, আদানিদের প্রতি উদার হয়ে বকেয়ার ৭৪% টাকা ছাড়লেও ব্যাঙ্কগুলি সাধারণ গ্রাহকদের প্রতি সদয় নয়। তিনি জানান, “অ্যাকাউন্টে ন্যূনতম টাকা না থাকলে মানুষকে জরিমানা করতে ছাড়ে না ব্যাঙ্কগুলি। এ ভাবে পাঁচ বছরে ৮৫০০ কোটি টাকা জরিমানা আদায় করেছে। দেখে মনে হচ্ছে, গরিবদের লুঠ করে ধনীদের বিলিয়ে দেওয়ার নীতিই অবলম্বন করেছে মোদী সরকার।’’

বকেয়া ঋণের সমস্যা মেটাতে সংস্থা দেউলিয়া আদালতে যাওয়ার পরে তাদের ঋণদাতাদের নিয়ে গঠিত হয় ক্রেডিটর্স কমিটি। কেউ দেউলিয়া সংস্থা কিনতে চাইলে তারা যে দর হাঁকে, তা খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেয় ওই কমিটি। দাম বাবদ যে টাকা মেলে, তাতে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পুরো বকেয়া মেটে না। যে টাকা ঋণদাতা ব্যাঙ্ক বা আর্থিক সংস্থাকে ছাড়তে হয়, তাকেই বলা হয় হেয়ারকাট। তবে হেয়ারকাট বেশি হওয়া ব্যাঙ্ক ও অর্থনীতির পক্ষে ক্ষতিকর বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Gautam Adani Adani Group Central Government Hindenburg Report

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy