E-Paper

অজানা বিপদে দু'বার হোঁচট, তৃতীয় বার জিডিপি-র ভিত্তিবর্ষ বদলানোর চেষ্টায় কেন্দ্র

ভোটের পরে বেকারত্বের সমীক্ষার ফল প্রকাশ করলেও তারা দারিদ্রের হিসাব মানেনি। পরিসংখ্যানবিদদের যুক্তি ছিল, ২০১৬-র নোটবন্দির পরে অর্থনীতি ধাক্কা খাওয়ায় ফল খারাপ এসেছিল।

প্রেমাংশু চৌধুরী

শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৯:৩৮
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

নয়াদিল্লি, ২৩ ডিসেম্বর: দু’বার হোঁচট খেতে হয়েছে। এক বার নোট বাতিল। অন্য বার কোভিড। এ বার দেশের জিডিপি-র হিসাবের ভিত্তিবর্ষ বদলের আগে মোদী সরকার আশা করছে, আর অজানা বিপদ এসে হাজির হবে না।

দেশের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বা জিডিপি-র হিসাব এখন থেকে ২০১১-১২ সালের বদলে ২০২২-২৩ সালকে ভিত্তিবর্ষ ধরে করা হবে বলে সিদ্ধান্ত পরিসংখ্যান মন্ত্রকের। ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পরে ২০১৭-এ মোদী সরকার ঘোষণা করেছিল, ২০১৭-১৮ সালকে ভিত্তিবর্ষ ধরে জিডিপি-র হিসাব কষবে তারা। সে সময় ২০১১-১২ সালকে ভিত্তিবর্ষ ধরে পরিসংখ্যান বার করা হত। অর্থাৎ, ২০১১-১২ অর্থবর্ষের তুলনায় দেশের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন কতটা বেড়েছে, তার অঙ্ক করা হত। জিডিপি-র হিসাবে বদলের আগে মোদী সরকার ২০১৭-১৮ সালে কর্মসংস্থান ও বেকারত্বের হার মাপতে শ্রমিক সমীক্ষা বা ‘পিরিয়ডিক লেবার ফোর্স সার্ভে’ ও দারিদ্র মাপতে ক্রেতা ব্যয় সমীক্ষা বা ‘কনজিউমার এক্সপেন্ডিচার সার্ভে’ করিয়েছিল। কিন্তু তাদের ফল আসতে দেখা যায় তা মোদী সরকারের পক্ষে রাজনৈতিক ব্যুমেরাং হতে চলেছে।

কেন? কর্মসংস্থান, বেকারত্বের সমীক্ষায় দেখা যায়, ২০১৭-১৮ সালে ৪৫ বছরের রেকর্ড ভেঙেছিল বেকারত্ব। ক্রেতা খরচ সমীক্ষা জানায়, মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পরে দারিদ্রের হার বেড়েছে। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের আগে দুই সমীক্ষার ফলই ধামাচাপা দিয়ে রেখেছিল কেন্দ্র। যদিও দু’টিই ফাঁস হয়ে যায়। ভোটের পরে বেকারত্বের সমীক্ষার ফল প্রকাশ করলেও তারা দারিদ্রের হিসাব মানেনি। পরিসংখ্যানবিদদের যুক্তি ছিল, ২০১৬-র নোটবন্দির পরে অর্থনীতি ধাক্কা খাওয়ায় ফল খারাপ এসেছিল।

এই ধাক্কায় ২০১৭-১৮ আর্থিক বছরকে ভিত্তিবর্ষ ধরে জিডিপি হিসাবের পরিকল্পনা বাতিল হয়ে যায়। এর পরে ২০২০ সালে করোনা পরেও ফের ধাক্কা খায় অর্থনীতি। এর জেরে কোভিডের বছর বা তার পরের দু’একটি বছরও জিডিপি হিসাবের ভিত্তিবর্ষ হিসাবের জন্য সঠিক নয় বলে সরকারি পরিসংখ্যানবিদদের মত। সেই কারণে ২০২২-২৩ সালকে ভিত্তিবর্ষ হিসেবে ধরার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

আজ পরিসংখ্যান সচিব সৌরভ গর্গ, মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা ভি অনন্ত নাগেশ্বরন, নীতি আয়োগের উপাধ্যক্ষ সুমন বেরির নেতৃত্বে নতুন জিডিপি-র হিসাব নিয়ে দিল্লিতে সংশ্লিষ্ট মহলের কর্মশালা হয়েছে। মোদী সরকারেরই প্রাক্তন মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যম প্রশ্ন তুলেছিলেন, ত্রুটিপূর্ণ হিসাবের ফলে দেশের জিডিপি ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখানো হচ্ছে কি না! আইএমএফ-ও সম্প্রতি ভারতের জিডিপি ও মূল্যবৃদ্ধির হিসাব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। আজ বেরি বলেছেন, জিডিপি-র বিশ্বাসযোগ্যতা জরুরি।

এ বার ২০২২-২৩-কে ভিত্তিবর্ষ ধরে জিডিপি-র সঙ্গে শিল্পোৎপাদনের সূচকও হিসাব করা হবে। নতুন হিসাবে প্রথম বৃদ্ধির হার ২৭ ফেব্রুয়ারি প্রকাশ হবে। শিল্পের সূচক প্রকাশিত হবে ২৮ মে। মূল্যবৃদ্ধির সূচক ২০২৪ সালকে ভিত্তিবর্ষ ধরে হিসাব হবে। যা ১২ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত হবে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

GDP Central Government

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy