অতিমারির পরে ক্রয়ক্ষমতার নিরিখে শহরের তুলনায় দেশের গ্রামাঞ্চল অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছিল। সেই ধাক্কা লাগে ভোগ্যপণ্য সংস্থাগুলির আয়ে। কারণ, তাদের মোট বিক্রিতে গ্রামের অংশীদারি উল্লেখযোগ্য। গত বছর থেকেই সংস্থাগুলি বলছিল, সেই বাজারে আগের মতো প্রাণ ফিরতে অনেকটা সময় লাগবে। ভোগ্যপণ্য ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, তার পর বেশ কিছু দিন কেটে গেলেও হালে পানি ফিরেছে যৎসামান্য। বর্ষার ইতিবাচক প্রভাব অর্থনীতিতে পড়লে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে অক্টোবর-ডিসেম্বর গড়িয়ে যেতে পারে। এখনও পর্যন্ত যে সমস্ত সংস্থা গত জানুয়ারি-মার্চের আর্থিক ফল প্রকাশ করেছে, তাদের অগ্রগতি উল্লেখযোগ্য নয়।
দু’বছর ধরে গ্রামে ভোগ্যপণ্যের চাহিদা মন্থর। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, সাধারণ মানুষের আয় বৃদ্ধির হার মুখ থুবড়ে পড়াই এর মূল কারণ। অত্যাবশ্যক জিনিসপত্রের প্রয়োজনীয়তা মিটিয়ে শখের কেনাকাটার নগদ হাতে থাকছে না। এমনকি তেল, সাবান, বিস্কুটের মতো পণ্যের ছোট মোড়ক কেনার প্রবণতা বৃদ্ধির ছবি উঠে এসেছে বিভিন্ন সমীক্ষায়। গোদরেজ কনজ়িমার প্রোডাক্টস ও ডাবর ইন্ডিয়ার মতো সংস্থা জানিয়েছে, গত ত্রৈমাসিকে বিক্রির বড় উন্নতি হয়নি। অ্যাক্সিস সিকিউরিটিজ়ের সিনিয়র রিসার্চ অ্যানালিস্ট প্রিয়ম তোলিয়া বলেন, ‘‘ভোগ্যপণ্য সংস্থাগুলির বিক্রি একটি ফাঁদে আটকে। বর্ষা এলে ও তার সুফল গ্রামীণ অর্থনীতিতে পড়লে বিক্রি বাড়তে পারে।’’
বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, সম্প্রতি আটা, চিনি-সহ কাঁচামালের দাম কমেছে। কিন্তু নিচু চাহিদার বাজারে সংস্থাগুলি পণ্যের দাম কমাতে বাধ্য হওয়ায় ব্যবসায় তার সুফল মেলেনি। তার উপরে আইপিএলের মরসুমে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে পণ্যের প্রচার খাতেও খরচ হচ্ছে বিপুল। সে কারণে জানুয়ারি-মার্চে ভোগ্যপণ্য সংস্থাগুলির আয় ৫ শতাংশের খুব বেশি উপরে ওঠার সম্ভাবনা কম। তাঁদের আশঙ্কা, খরচ ও আয়ের ব্যবধান (মার্জিন) কমতে পারে, অথবা বাড়তে পারে যৎসামান্য। আগামী সপ্তাহে কোলগেট পামোলিভ ইন্ডিয়া, টাটা কনজ়িউমার প্রোডাক্টস, হিন্দুস্তান ইউনিলিভার, নেসলের ফল প্রকাশ হলে ছবিটা আরও স্পষ্ট হবে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)