E-Paper

পোশাকের দামেও আক্রান্ত আমজনতা

নিম্নবিত্ত এবং মধ্যবিত্তেরা বলছেন, মহীরুহ হয়ে উঠছে আরও এক শ্রেণির পণ্যের দর। তা হল দৈনন্দিন ব্যবহারের শাড়ি, জামাকাপড়, জুতো। খাদ্যপণ্যের মতোই এর ধাক্কা এড়ানো অসম্ভব।

প্রজ্ঞানন্দ চৌধুরী

শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০২৪ ০৬:৩০

—প্রতীকী চিত্র।

বছর ঘুরে গেল, সাধারণ মানুষের রোজগারে কার্যত লুটপাট চালাচ্ছে খাবারদাবারের দাম। নেতৃত্বে আনাজ। কিন্তু নিম্নবিত্ত এবং মধ্যবিত্তেরা বলছেন, এর আড়ালে মহীরুহ হয়ে উঠছে আরও এক শ্রেণির পণ্যের দর। তা হল দৈনন্দিন ব্যবহারের শাড়ি, জামাকাপড়, জুতো। খাদ্যপণ্যের মতোই এর ধাক্কা এড়ানো অসম্ভব। দাম বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিতে পারছে না আয়। খুচরো ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, সেগুলির গড় দাম তিন বছরে ২৫%-৩০% বেড়েছে। বহু ক্ষেত্রে তারও বেশি। মূল কারণ কাঁচামালের খরচ এবং পাইকারি মূল্যবৃদ্ধি।

সোনারপুরের ঝর্না সর্দার। গৃহ পরিচারিকা। বর্ষা নামার মুখে রবারের জুতো কিনতে গিয়েছিলেন। বলছেন, ‘‘গত বছর যে জুতো ১৫০ টাকায় কিনেছিলাম, এখন সেটাই ২৫০ টাকা চাইছে।’’ বাড়িতে পরার সাধারণ শাড়ি, পেটিকোট, নাইটি, শার্ট-প্যান্ট, গেঞ্জি, স্কুলের টেনিস শু, চপ্পল, সাধারণ জুতোর মতো সব কিছুর দাম লাফিয়ে বেড়েছে। ঝর্না বলেন, ‘‘জিনিসের দর বেড়ে চলেছে। প্রতি বছর বাড়ছে। কিন্তু আয় বাড়েনি। সাধারণত দু’তিন বছর অন্তর বেতন বাড়ে আমাদের। কখনও বাড়েও না। অবস্থা সামাল দিতে এখন তাই হিমশিম অবস্থা।’’

দাম বৃদ্ধির খতিয়ান দিতে গিয়ে কাঁকুড়গাছির ভিআইপি মার্কেটের শাড়ির দোকানের মালিক শত্রুঘ্ন দাস জানান, বছর দুয়েক আগে যে শাড়ি ২০০ টাকা ছিল, এখন তা ২৬০-২৭০ টাকা। ২০০ টাকার নাইটি হয়েছে ২৬০-২৭০। বেড়েছে অতি সাধারণ জামা, প্যান্ট, গেঞ্জির দামও। সেই বাজারেরই ‘তৈরি জামাকাপড়ের’ দোকানের মালিক সোমনাথ শূর বলেন, ‘‘যে জামা বছর দুয়েক আগে ৫৯৯ টাকায় বিক্রি করেছি, এখন তা ৭৯৯ টাকা। একটু ভাল ৬৯৯ টাকার জামা বিক্রি করতে হচ্ছে ৮৯৯-তে। ৮০ টাকার গেঞ্জি হয়েছে ৯৫ টাকা। পুরুষদের ৮৫ টাকার অন্তর্বাস ১০৫।’’ তিনি জানান, অতিমারিতে চিন থেকে সুতো আমদানি বন্ধ হয়েছিল। তার পরেই সুতোর দাম বেড়ে যায়। যার জেরে চড়তে থাকে জামাকাপড়ও। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া সত্ত্বেও সুতোর দাম কমেনি।

পিছিয়ে নেই জুতো। পশ্চিমবঙ্গ ফোরাম অব ট্রেডার্স অর্গানাইজ়েশনের সাধারণ সম্পাদক এবং জুতো ব্যবসায়ী রবীন্দ্রনাথ কোলে বলেন, ‘‘হাওয়াই চপ্পল ১৮০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ২১০ টাকা। ক্যানভাসের তৈরি টেনিস শু ৩০০ টাকা থেকে বেড়ে ৪০০ টাকায় ঠেকেছিল। হালে কিছুটা কমেছে। কিন্তু সাধারণ স্কুলের জুতো ৩২৫ টাকা। বছর দুয়েক আগেও ছিল ২৫০। নিম্নবিত্তদের মধ্যে চপ্পলের ব্যবহার বেড়েছে। সেগুলি ছিল ৩০০-৩৫০ টাকা। হয়েছে ৪০০-৪২৫। সাধারণ জুতো ৫০০ থেকে বেড়ে বিকোচ্ছে ৬০০ টাকায়। ৬০০ টাকারটা ৭০০।’’

রবীন্দ্রনাথবাবুর দাবি, ‘‘আমি মুখ্যমন্ত্রীর এগ্রি মার্কেটিং কমিটির টাস্কফোর্সের সদস্য হিসেবে দেখছি, জিনিসের এই দাম বৃদ্ধিতে সবচেয়ে ধাক্কা খাচ্ছেন নিম্নবিত্তেরা। তাঁদের আয় বৃদ্ধির সঙ্গে আবশ্যিক পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির সামঞ্জস্য থাকছে না।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Price Hike market price

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy