ফাঁকা সাউথ সিটি মল। বৃহস্পতিবার কলকাতায়। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
ঝাঁ চকচকে শপিং মলের বড় দোকানে ঢোকামাত্র ছুটে এলেন জনা পাঁচেক সেলসম্যান। গেটে ক্রেতাদের ব্যাগ রাখার তাক প্রায় ২০০টি। তবে ভর সন্ধ্যেয় ভর্তি মেরেকেটে পাঁচ-সাতটি। অন্য এক মলের বিপণিতে বিক্রেতার মগ্ন চোখ মোবাইলে। দরজায় পা রাখতেই ব্যস্ততা চরমে। ফোন ফেলে তড়িঘড়ি হাত ধরে এনে বসাতে পারলে যেন বাঁচেন। নাছোড় হাঁকডাকও শোনা যাচ্ছে কখনও।
বৃহস্পতিবার কলকাতার বিভিন্ন শপিং মলের ছবিটা এমনই। ক্রেতার অভাবে মাছি তাড়ানোর অবস্থা। করোনার কামড়ে মার খাচ্ছে ব্যবসা। ‘হ্যাং আউটে’ খাওয়া-দাওয়া, আড্ডার চেনা ছবি উধাও। সরকারি নির্দেশে ‘মাল্টিপ্লেক্স’ বন্ধ থাকায় এমনিতেই ভিড় কম। রেস্তরাঁ ফাঁকা। এক পোশাক বিপণির কর্মী জানালেন, কাজের দিনে দৈনিক গড়ে ১৫-১৭ জন ক্রেতা আসেন। বুধবার এসেছিলেন তিন জন। শুধু জামা বদলাতে। আর বৃহস্পতিবার এক জন। বিক্রি হয়নি এ দিনও। আর এক দোকানের কর্মীর দাবি, আগে গড়ে দৈনিক এক লক্ষ টাকার বিক্রি হলেও, তা এখন নেমেছে ২৫-৩০ হাজারে। বেশির ভাগেরই এক দশা।
তবে উল্টো ছবি মলের খাদ্য ও গৃহস্থালী পণ্যের বিপণিতে। ভিড় দেখে মনে হবে, শেষ হওয়ার ভয় জরুরি জিনিস পড়িমড়ি করে কিনছেন ক্রেতা। এক বিপণিতে বাড়তি ক্রেতার চাপ সামলাতে খোদ ম্যানেজারকে বসতে হয়েছে ক্যাশ-কাউন্টারে। ম্যানেজার পীযুষ সরকারের অবশ্য দাবি, পণ্যের জোগান স্বাভাবিক। একই দাবি রিলায়্যান্স রিটেলেরও। বহু ক্রেতাই বলছেন, করোনা আতঙ্ক স্পষ্ট এতে। তবে ক্ষুব্ধ হাজরার সাধনা সারওয়াগির মন্তব্য, এই ভিড় অযৌক্তিক।
শপিং মলে অবশ্য ক্রেতার আনাগোনা কমেছে, দাবি লেক মলের কর্তা প্রলয় গঙ্গোপাধ্যায়ের। কমার হার ৩০%, জানালেন সাউথ সিটি মলের কর্তা দীপ বিশ্বাস। আর অ্যাক্রোপলিস মলের কর্তা কে বিজয়ন বলেন, ক্রেতা যেমন ২৫% কম আসছেন, তেমনই ব্যবসা কমেছে ২৫%-৩০%।
তবে প্রায় ১০০ জনের লম্বা লাইন পাইকারি ব্যবসায় যুক্ত মুকুন্দপুরের মেট্রো-ক্যাশ অ্যান্ড ক্যারিতে। সূত্রের খবর, সপ্তাহের কাজের দিনে দৈনিক গড়ে ২০০০ ক্রেতা আসত সেখানে, সোমবার থেকে বেড়ে হয়েছে প্রায় ৩৫০০। যা ছুটির দিনে দেখা যায়। প্রায় ১২৫ কেজি চাল ও ২০ লিটার তেল কিনে বেরোনোর সময় লেকটাউনের প্রসেনজিৎ চন্দ্র জানালেন, সঙ্কট সামনে। তাই আগাম কিনে রাখা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy