ভারতীয় পণ্যের উপরে আমদানি শুল্কের হার হতে পারে ৫০ শতাংশেরও বেশি। আজ যদি আলাস্কায় ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠক ব্যর্থ হয়, তা হলে ভারতকেই তার মাসুল গুনতে হবে। হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখল আমেরিকা!
ভারতের উপরে ২৫% পাল্টা শুল্ক ইতিমধ্যেই কার্যকর করেছে ওয়াশিংটন। রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধ না করার ‘অপরাধে’ আরও ২৫% শুল্ক বসার কথা সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে। বৃহস্পতিবার এক সাক্ষাৎকারে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, বৃহত্তম দুই তেল আমদানিকারীকে (ভারত ও চিন) হারানোর আশঙ্কাই পুতিনকে তাঁর সঙ্গে বৈঠকে বসতে বাধ্য করেছে। এর আগে তাঁর দাবি ছিল, শুল্ক সমস্যার সমাধানের আগে নয়াদিল্লির সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে কোনও আলোচনাও করবে না তাঁর দেশ। এই অবস্থায় আগামী ২৫ অগস্ট দিল্লিতে ভারত-আমেরিকা বৈঠকের সামনে প্রশ্নচিহ্ন বসেছে।
এরই মধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সমাধানসূত্র খুঁজতে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন। ঠিক তার আগে এক সাক্ষাৎকারে আমেরিকার রাজস্ব সচিব স্কট বেসেন্ট নতুন করে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, সেই বৈঠক ব্যর্থ হলে ভারতের উপরে আরও বেশি হারে অতিরিক্ত শুল্ক চাপাতে পারে ট্রাম্প প্রশাসন। তিনি বলেন, ‘‘রাশিয়া থেকে তেল কেনার জন্য আমরা ভারতের উপরে দ্বিতীয় দফার শুল্ক চাপিয়েছি। সব কিছু যদি ঠিক ভাবে না চলে, তা হলে সেই হার আরও বাড়তে পারে।’’ সরকারি সূত্র অবশ্য আবারও স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছে, ভারত তেলের বড় আমদানিকারী। যেখান থেকে সস্তায় পাওয়া যাবে সেখান থেকেই তেল কেনা হবে।
সংশ্লিষ্ট মহলের ব্যাখ্যা, ভারত-আমেরিকার সম্পর্কের ঘোলাজল আরও ঘোলা হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হল। জট খুলল না ২৫ তারিখের বৈঠক নিয়েও। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় বাণিজ্যসচিব সুনীল বার্থওয়াল এ ব্যাপারে স্পষ্ট কিছু বলতে পারেননি। এক প্রশ্নের জবাবে কিছুটা ধোঁয়াশা রেখেই তাঁর দাবি, নির্ধারিত তারিখের ঠিক আগে ওয়াশিংটনের প্রতিনিধি দল সম্পর্কে জানা যাবে। দু’পক্ষের মধ্যে কথাবার্তা চলছে তিনটি স্তরে— বাণিজ্যিক, রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক।
এরই মধ্যে শুল্ক যুদ্ধের আবহে ভারত-চিন সম্পর্কের বরফ সামান্য হলেও গলতে শুরু করেছে। সাত বছর পরে প্রধানমন্ত্রী বেজিং যেতে পারেন। এই অবস্থায় নীতি আয়োগের প্রাক্তন উপাধ্যক্ষ রাজীব কুমারের বক্তব্য, চিন থেকে আমদানি করে কাজের বাজারের উন্নতি হয় না। বিনিয়োগ টানতে পারলে তা হয়। বিভিন্ন দেশে চিন উল্লেখযোগ্য অঙ্কের লগ্নি করছে। ভারতেরও সেই পুঁজি দরকার। রাজীবের বক্তব্য, ‘‘চিনের বিনিয়োগকে অনুমতি দেওয়ার ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা করার সময় এসে গিয়েছে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)