Advertisement
E-Paper

রাজন-নীতিতেই সর্বনাশ বৃদ্ধির, দাবি নীতি আয়োগ উপাধ্যক্ষের

মৈত্রীশ ঘটকের কথায়, নোট নাকচে বৃদ্ধি ধাক্কা খেয়েছে অন্তত ০.২৫ থেকে ০.৫ শতাংশ বিন্দু। অন্তত ধাক্কা খাওয়ার কথাটুকু কবুল করা রয়েছে আর্থিক সমীক্ষায়। তার বেলা?

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:২৫
রঘুরাম রাজন

রঘুরাম রাজন

নোটবন্দি নয়। বৃদ্ধির চাকা নাকি আটকে গিয়েছিল পাহাড়প্রমাণ অনুৎপাদক সম্পদের চাপেই। যার বাড়-বাড়ন্তের পিছনে মূল কারণ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজনের নীতি!

সোমবার এই অভিযোগ তুললেন নীতি আয়োগের উপাধ্যক্ষ রাজীব কুমার। যা দেখে লন্ডন স্কুল অব ইকনমিক্সের অধ্যাপক মৈত্রীশ ঘটকের প্রশ্ন, নোট বাতিলে বৃদ্ধি যে অন্তত সাময়িক ভাবে ধাক্কা খেয়েছিল, তা লেখা রয়েছে ২০১৬-১৭ সালের আর্থিক সমীক্ষাতেই। তা হলে কি এ বার দোষী করা হবে প্রাক্তন মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যনকে? কটাক্ষ করতে ছাড়েনি কংগ্রেসও। পরে কিছুটা পিছু হঠে টুইটে কুমারেরও দাবি, বক্তব্য বিকৃত করা হচ্ছে। তাঁর অভিযোগ নীতির বিরুদ্ধে। কোনও ব্যক্তির বিপক্ষে নয়।

প্রায় সমস্ত বাতিল নোট ঘরে ফেরা নিয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের রিপোর্ট সামনে আসার পর থেকেই এ বিষয়ে চাপে মোদী সরকার। অভিযোগ, কালো টাকা ধরা পড়ল না। উল্টে খেসারত দিল অর্থনীতি। যেন কিছুটা সেই আক্রমণের সামনে ঢাল হয়েই মাঠে নামেন কুমার। তাঁর যুক্তি, ২০১৫-১৬ সাল থেকে টানা ছয় ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধির হার কমার পিছনে আসল কারণ অনুৎপাদক সম্পদ। যার লাগাতার বৃদ্ধিতে শিল্পকে ঋণ দেওয়া কার্যত বন্ধ করে দিয়েছিল ব্যাঙ্কগুলি। সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছিল ছোট-মাঝারি শিল্পের। ধার পাওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায় তাদের পক্ষে।

ঋণ খেলাপে জেহাদ

• সময় বেঁধে ঋণ খেলাপের সমস্যা নিকেশে কড়া পদক্ষেপ।

• সময়ে শোধ না-হওয়া ধার তাড়াতাড়ি চিহ্নিত করে তার সংস্থানের জন্য ব্যাঙ্কগুলিকে টাকা তুলে রাখতে বলা।

• অনাদায়ি ঋণের সমস্যাকে কার্পেটের তলায় লুকিয়ে না রেখে তা দ্রুত সামনে আনায় জোর।

• বিপুল অনুৎপাদক সম্পদের জন্য আঙুল তোলা হোক ধার মেটাতে গড়িমসি করা কর্পোরেটের দিকে।

• হিসেবের খাতা থেকে অনাদায়ি ঋণ তাড়াতাড়ি মুছে ফেলতে জোর মোটা অঙ্কের সংস্থানে। তাতে শুরুতে মুনাফা ধাক্কা খাবে ঠিকই, কিন্তু আখেরে ভাল হবে ব্যাঙ্কের আর্থিক স্বাস্থ্য।

এই প্রসঙ্গেই রাজনের কথা টেনেছেন তিনি। দাবি করেছেন, তাঁর সময়ে যে ভাবে অনুৎপাদক সম্পদ চিহ্নিত করা শুরু হয়, সমস্যার শিকড় সেখানে। রাজনের দাওয়াই ছিল, অনুৎপাদক সম্পদ লুকিয়ে না রেখে তাকে দ্রুত চিহ্নিত করা। যাতে হিসেবের খাতা পরিষ্কার হয়। তাই অনেক বিশেষজ্ঞের প্রশ্ন, তবে কি অনুৎপাদক সম্পদ দ্রুত টেনে বার না করাই ঠিক মনে করেন কুমার?

মৈত্রীশ ঘটকের কথায়, নোট নাকচে বৃদ্ধি ধাক্কা খেয়েছে অন্তত ০.২৫ থেকে ০.৫ শতাংশ বিন্দু। অন্তত ধাক্কা খাওয়ার কথাটুকু কবুল করা রয়েছে আর্থিক সমীক্ষায়। তার বেলা? কংগ্রেসের কটাক্ষ, অর্থনীতির সর্বনাশ করে তার দায় চাপানোর লোক খুঁজছে মোদী সরকার।

বাতিল নোট ঘরে ফেরার অস্বস্তি ঢাকতে এখন অনুৎপাদক সম্পদকে নিশানা করছে মোদী সরকার। এ দিন কুমারও বলেছেন, ২০১৭ সালের মাঝে তা বেড়ে পৌঁছেছে ১০.৫ লক্ষ কোটিতে। খোদ প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি দাবি করেছেন, এক পরিবারের ফোন-সুপারিশে ঋণ দিতে গিয়ে এই বিপত্তি।

অনেকে বলছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সেই কথার খেই ধরেই সম্ভবত এ দিন রাজন-নীতিকে নিশানা করেতে ছাড়েননি কুমার। সেই রাজন, যাঁকে এক সময় অর্থনীতির ভাল মাস্টারমশাইয়ের তকমা দিয়েছিলেন খোদ নরেন্দ্র মোদী।

Raghuram Rajan রঘুরাম রাজন Economic Slowdown Niti Aayog
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy