Advertisement
E-Paper

কাজ কোথায়! কৌশিকের গলায় আশঙ্কা, দুশ্চিন্তা লগ্নিও

বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, এই অবস্থায় যে সংখ্যক পড়ুয়া কলেজ পাশ করে ভারতে কাজের জগতে পা রাখছেন, সেই অনুপাতে দেশে কাজ তৈরি হচ্ছে না।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২২ ০৮:০০
অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসু।

অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসু। ফাইল চিত্র।

ভারতে কম হারে কাজের সুযোগ তৈরি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করলেন অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসু। বুধবার এক টুইটে সেই সঙ্গে এ দেশে লগ্নি হচ্ছে না কেন তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন প্রাক্তন মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা। এর আগে বহু অর্থনীতিবিদ বলেছেন বৃদ্ধিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে বিনিয়োগ উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেয়। যার হাত ধরে কর্মসংস্থান বাড়ে। একই কথা জানিয়ে কৌশিক বলেন, অথচ দেখা যাচ্ছে এক দশকের মধ্যে দেশে লগ্নি বৃদ্ধির হারও নেমে এসেছে অনেকটা।

কেন্দ্রে ক্ষমতায় এলে বছরে দু’কোটি চাকরির ভোট-প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন নিয়ে বহুবার বিরোধীদের কটাক্ষের মুখে পড়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর দল (বিজেপি) এবং সরকার এর ভিন্ন ব্যাখ্যা দিয়ে কাজের সুযোগ বৃদ্ধির দাবি করে। তুলে ধরে স্টার্ট-আপে বিপুল লগ্নি এবং কর্মসংস্থান তৈরির কথা। কিন্তু এ নিয়ে আশাবাদী হতে নারাজ অর্থনীতিবিদদের একাংশ। বরং তাঁরা যে চড়া বেকারত্ব নিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন, তা বার বারই উঠে এসেছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন,

অর্থনীতিবিদ কে আর শ্যামসুন্দরের কথায়। যে বিপুল মানবসম্পদকে ভারতের আশীর্বাদ বলে দেখা হত, উপযুক্ত সংখ্যায় চাকরি তৈরি না-হলে তা-ই অভিশাপ হতে পারে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। এর আগে যুব সমাজের বেকারত্ব প্রায় ৪ শতাংশ বিন্দু বৃদ্ধি নিয়ে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার পরিসংখ্যান তুলে ধরে তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন কর্নেল বিশ্ব বিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক কৌশিকবাবুও।

এ দিনও টুইটে বিশ্ব ব্যাঙ্কের প্রাক্তন মুখ্য অর্থনীতিবিদ বলেছেন, কাজের সুযোগ তৈরির ক্ষেত্রে ভারতের হাল খুবই খারাপ। কৌশিকবাবুর মতে, ‘‘এর অন্যতম কারণ, যে কোনও অর্থনীতির এগোনোর পিছনে বড় ভূমিকা থাকে বিনিয়োগের। কিন্তু সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, ভারতে ২০০৯ সালে সেই হার ছিল ৩৯.৩%, ২০১৯ সালে তা নেমেছে ৩০.৭ শতাংশে।’’ কেন লগ্নি হচ্ছে না, সেটাই এখন অন্যতম প্রশ্ন বলেও তুলে ধরে ধরেছেন তিনি।

সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, এমনিতেই এ বছরে চড়া মূল্যবৃদ্ধিতে নাজেহাল হচ্ছেন মানুষ। বেঁচে থাকার জন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে গিয়ে ধাক্কা খাচ্ছে অন্যান্য লগ্নি। ফলে করোনা কাটিয়ে পুরোদস্তুর ঘুরে দাঁড়ানোর সময়ে দেশের বাজারে বিক্রিবাটা সে ভাবে বাড়ছে না। উপরন্তু আমেরিকা-সহ বিভিন্ন দেশে মন্দার আশঙ্কায় সেখানেও চাহিদা কমছে। ফলে সংস্থাগুলি সে ভাবে হাত খুলে বিনিয়োগ তথা উৎপাদন বাড়াতে এগিয়ে আসছে না।

বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, এই অবস্থায় যে সংখ্যক পড়ুয়া কলেজ পাশ করে ভারতে কাজের জগতে পা রাখছেন, সেই অনুপাতে দেশে কাজ তৈরি হচ্ছে না। উপদেষ্টা সংস্থা সিএমআইই-র তথ্য জানাচ্ছে, উৎসবের মরসুমের আগেও সেপ্টেম্বরে দেশে বেকারত্বের হার রয়েছে ৬.৪৩ শতাংশে। ফলে সাধারণ গৃহস্থ পরিবারে সঞ্চয় তথা লগ্নিতে খরা দেখা দিয়েছে। আবার পড়ুয়ারা কাজ না-পাওয়ায় ব্যাঙ্কে শিক্ষাঋণ শোধ করার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়ছেন তাঁরা। যে কারণে উদ্বিগ্ন ব্যাঙ্কিং শিল্প। সব মিলিয়ে অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে এখন কাজের সুযোগ তৈরিতেই জোর দিতে হবে বলে মনে করছেন তাঁরা। কৌশিকবাবুও এর আগে তরুণ প্রজন্মের কাজের অভাবকে নীতি তৈরির সময়ে নজরে রাখার পরামর্শ দিয়েছিলেন। এ বারও হাল ফেরাতে তাঁর সেই কথাই মনে করাচ্ছে সংশ্লিষ্ট মহল।

kaushik basu Economy Employment
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy