E-Paper

আয়কর, জিএসটি, বাড়ি-গাড়ির ঋণ! তিন ছাড়ে মধ্যবিত্তের পকেটে ঢুকছে অনেক টাকা

ভাড়া বাড়ির বাসিন্দারা ঋণ নিয়ে ফ্ল্যাট কেনার কথা ভাবতে পারেন। এখন সুদ কম। আরও কমতে পারে। ফলে বাড়তি টাকা এবং ভাড়ার অর্থে গৃহঋণ মেটানো সহজ হবে।

অমিতাভ গুহ সরকার

শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৮:১১
ধার বা টাকার ঘাটতি না থাকলে বাড়তি তহবিল লগ্নি করা যায় মিউচুয়াল ফান্ডের এক বা একাধিক এসআইপিতে।

ধার বা টাকার ঘাটতি না থাকলে বাড়তি তহবিল লগ্নি করা যায় মিউচুয়াল ফান্ডের এক বা একাধিক এসআইপিতে। —প্রতীকী চিত্র।

একই বছরে একাধিক প্রাপ্তি। শুরুর দিকে পাওয়া গিয়েছিল আয়করে বড় ছাড়। আজ থেকে ব্যয়কর অর্থাৎ জিএসটির হার কমায় বহু পণ্যের দাম কমবে। তার উপর ইতিমধ্যেই সুদ ১০০ বেসিস পয়েন্ট কমিয়েছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। ফলে ব্যাঙ্কগুলি বাড়ি, গাড়ি-সহ বিভিন্ন ঋণে তার হার ছেঁটেছে। ধার শোধের মাসিক কিস্তি (ইএমআই) বাবদ খরচ কমেছে বহু ঋণগ্রহীতার। সব মিলিয়ে মধ্যবিত্তের প্রাপ্তি কম নয়। গত অর্থবর্ষে যাঁদের আয় ৭ লক্ষ থেকে ১২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ছিল, নতুন কর কাঠামোয় তাঁদের সর্বাধিক কর বাবদ দায় দাঁড়ায় ৫৭,২০০ টাকা। চলতি বছরে একই আয়ে কর দিতেই হবে না। অন্য দিকে, আয়করের স্তর বাড়ায় এবং হার কমায় ২৪ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ে সর্বাধিক সাশ্রয় হবে ১.১৪ লক্ষ টাকা। ওষুধ, বিমার প্রিমিয়াম এবং অনেক অত্যাবশ্যক পণ্যের দাম কমলে, তাতেও খরচ বাঁচবে বেশ কিছুটা। অর্থাৎ সব মিলিয়ে হাতে থাকতে পারে অনেকটা বাড়তি টাকা।

এখন প্রশ্ন হল এই টাকার সঠিক ব্যবহার কী হওয়া উচিত? সরকার চাইছে মানুষ কেনাকাটা করুন। তাতে চাহিদা বাড়বে। শিল্প চাঙ্গা হবে। শুল্ক নীতির কারণে আমেরিকায় রফতানি হতে না পারা পণ্য দেশেই বিক্রি হয়ে যাবে। তবে সকলের ক্ষেত্রে হাতে থাকা বাড়তি টাকার ব্যবহার এক হবে না। সতর্ক হয়ে খরচ করাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। এর বিকল্প পথগুলিই একবার বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখে নেব—

ঋণ শোধ: বাজারে কারও ধার থাকলে তা শোধ করার কথা ভাবা যায়। তাড়াতাড়ি মিটিয়ে দেওয়া যায় ইএমআই-এর টাকা।

সম্পদ সৃষ্টি: ভাড়া বাড়ির বাসিন্দারা ঋণ নিয়ে ফ্ল্যাট কেনার কথা ভাবতে পারেন। এখন সুদ কম। আরও কমতে পারে। ফলে বাড়তি টাকা এবং ভাড়ার অর্থে গৃহঋণ মেটানো সহজ হবে। বড় মেয়াদে সম্পদ সৃষ্টি হবে।

দীর্ঘমেয়াদি ভোগ্যপণ্য ক্রয়: বাইক, ছোট গাড়ি, বড় মাপের টিভি বা ফ্রিজ, ওয়াশিং মেশিন ইত্যাদি কেনার ইচ্ছেপূরণ সম্ভব। আশা, আজ থেকে পুজোর বাজারে ভিড় উপচে পড়বে।

বিমা ক্রয়: বাড়তে থাকা চিকিৎসার খরচ থেকে স্বস্তি দেয় স্বাস্থ্য বিমা। পরিবারের প্রধান রোজগেরে মানুষটির অনুপস্থিতিতে যাতে বাকিরা ভেসে না যান, তা নিশ্চিত করে জীবন বিমা। ঝুঁকি থেকে বাঁচতে এগুলি জরুরি হলেও চড়া প্রিমিয়ামের জন্য পিছিয়ে আসছিলেন বহু মানুষ। প্রিমিয়ামে জিএসটি ওঠায় সেই খরচ কমবে। এ বার পকল্প কেনা যায়।

লগ্নি: ধার বা টাকার ঘাটতি না থাকলে বাড়তি তহবিল লগ্নি করা যায় মিউচুয়াল ফান্ডের এক বা একাধিক এসআইপিতে। দীর্ঘ মেয়াদে জমিয়ে গেলে বড় তহবিল গড়ে উঠবে। অল্প অল্প করে নিয়মিত ভাল শেয়ার কেনা যায়। অবসরের পরে নিশ্চিন্তে থাকতে এনপিএসে টাকা ঢেলে পেনশনের ব্যবস্থা করা সম্ভব। ব্যাঙ্ক বা ডাকঘরে রেকারিং ডিপোজ়িট খুলতে পারেন। ব্যাঙ্ক আমানতে সুদ কমলেও ডাকঘরের প্রকল্পগুলিতে কমেনি। স্বল্প সঞ্চয়গুলিতে সুদের হারও তুলনায় বেশি, যা চালু থাকবে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। অক্টোবর-ডিসেম্বরের হার জানা যাবে এ মাসের শেষে। ফলে হাতে টাকা থাকলে আট দিনের মধ্যে লগ্নি করে ফেলতে পারলে ভাল।

বেড়ানো বা অন্য শখ মেটানো: পর্যাপ্ত টাকা না থাকার কারণে অধরা থেকে যাওয়া শখ পূরণ করা যায়। যেমন— বেড়াতে যাওয়া, নতুন কিছু নিজে শেখা বা সন্তানকে শেখানো, ঘর-বাড়ি সাজানো, কোনও অনুষ্ঠানের আয়োজন ইত্যাদি।

(মতামত ব্যক্তিগত)

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

GST Loan

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy