Advertisement
E-Paper

রাজ্যে কমিশন, শাঁখের করাত সেই উৎপাদনই

পূর্বতন বাম সরকারের ছেড়ে যাওয়া বিপুল ঋণের যুক্তি দেখিয়ে কমিশনের কাছে দীর্ঘ মেয়াদি সুরাহা চেয়েছে রাজ্য।

প্রেমাংশু চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০১৮ ০৫:৪০

রাজ্য বহু দিন ধরেই বলছে জাতীয় স্তরের তুলনায় বৃদ্ধির হারে পশ্চিমবঙ্গ অনেক এগিয়ে। কিন্তু তা মানতে নারাজ কেন্দ্র। বৃদ্ধি নিয়ে দু’পক্ষের এই পুরনো বিবাদই ফের জোরালো হল পঞ্চদশ অর্থ কমিশন আসার মুখে। সোমবারই এন কে সিংহের নেতৃত্বে কমিশনের সদস্যরা কলকাতায় পৌঁছচ্ছেন। তবে সংশ্লিষ্ট মহলের আশঙ্কা, কেন্দ্রের আপত্তি সত্ত্বেও রাজ্য যে ভাবে নিজের মতো করে বৃদ্ধির হিসেব কষছে, তা শেষে শাঁখের করাত হতে পারে।

পূর্বতন বাম সরকারের ছেড়ে যাওয়া বিপুল ঋণের যুক্তি দেখিয়ে কমিশনের কাছে দীর্ঘ মেয়াদি সুরাহা চেয়েছে রাজ্য। তুলে ধরেছে, রাজ্যের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের (জিএসডিপি) সাপেক্ষে চড়া ঋণ এবং নিজেদের কম রাজস্ব আদায়ের সমস্যা। কিন্তু কমিশনের বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গের জিএসডিপির হিসেব ২০০৪-০৫ অর্থবর্ষকে ধরে কষা। যেখানে দেশে জিডিপি হিসেবের ভিত্তিবর্ষ ২০১১-১২। রাজ্য অবশ্য বলেছে, কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান দফতরের (সিএসএসও) সঙ্গে আলোচনা মিটলে সঠিক সময়ে সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান দেওয়া হবে।

তবে বৃদ্ধির প্রশ্নেই ফের মাথা তুলছে রাজ্য-কেন্দ্রের পুরনো কাজিয়া। কেন্দ্রের অভিযোগ, জিএসডিপি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের দাবির পোক্ত ভিত্তি
নেই। তাই ২০১১-১২ সাল থেকে রাজ্যের বৃদ্ধির তথ্য প্রকাশ করছে না তারা। অথচ রাজ্য নিজেদের হিসেব প্রকাশ করে যাচ্ছে। মোদী সরকার যেখানে বৃদ্ধির গড় ৭ শতাংশের উপরে তুলতে হিমসিম, সেখানে রাজ্যের দাবি, তাদের হার ১৫%।

অর্থ মন্ত্রকের এক কর্তার মতে, জিএসডিপি বেশি দেখানোর সুবিধা, ধার আরও বেশি করা যাবে। কিন্তু এতে রাজ্যের নিজস্ব কর বাবদ আয়, উন্নয়ন খাতে ব্যয় খুবই কম দেখাচ্ছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের রিপোর্টও বলেছে, জিএসডিপির তুলনায় এই অর্থবর্ষে রাজ্যের নিজস্ব কর বাবদ আয় ৩.৩%। বিশেষ শ্রেণিভুক্ত রাজ্য বাদ দিলে বাকি ১৮টির মধ্যে সর্বনিম্ন। তার তুলনায় ২০১৮-১৯ সালের বাজেটে উন্নয়ন খাতে ব্যয়ের ক্ষেত্রেও রাজ্য পিছনের সারিতে, মাত্র ৬.৭%।

কমিশনের কর্তাদের মতে, জিএসডিপি নিয়ে এই বিবাদ সহজে মেটার আশা কম। ফলে প্রশ্ন উঠছে, তা হলে কমিশন কার হিসেব ধরে এগোবে? কী ভাবে ঠিক হবে কেন্দ্রীয় কর ও অনুদানে রাজ্যের ভাগ?

রাজ্যের দাবি

• জাতীয় স্তরে বৃদ্ধির হারের চেয়ে রাজ্যের হার অনেক বেশি।

• বৃদ্ধির নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনেই তথ্য সংগ্রহ ও তার হিসেব হয়।

• সব রাজ্যের গড়ের তুলনায় বরাদ্দ বেশি সামাজিক উন্নয়নে।

• মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের সাপেক্ষে চড়া পূর্বতন বাম সরকারের থেকে পাওয়া ঋণ।

• এর কিস্তি মেটাতে গিয়ে টান উন্নয়নমূলক কাজে অর্থের জোগানে।

কমিশনের বক্তব্য

• পশ্চিমবঙ্গের জিএসডিপির হিসেব ২০০৪-০৫ অর্থবর্ষ ধরে। কিন্তু দেশের জিডিপির ভিত্তিবর্ষ ২০১১-১২।

• জিএসডিপির তুলনায় সামাজিক উন্নয়ন ও পরিকাঠামো-সহ মূলধনী খাতে খরচ কম। যা চিন্তার।

• মোট জনসংখ্যার ১৯.৯৮% এখনও দারিদ্র সীমার নীচে।

কেন্দ্রের অভিযোগ

• বৃদ্ধি নিয়ে রাজ্যের দাবির পোক্ত ভিত্তি নেই। তাই ২০১১-১২ থেকে সেই তথ্য প্রকাশ করছে না তারা।

Finance commission GDP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy