Advertisement
২৬ মে ২০২৪

মূল্যহ্রাস নিয়ে গুজবে আচমকা পড়ল টাকা

উত্তাল বিদেশি মুদ্রার বাজার। সরকার টাকার দাম কমাতে চলেছে, এই গুজবের জেরেই বৃহস্পতিবার সকালে আচমকা বিভিন্ন বিদেশি মুদ্রার তুলনায় তলিয়ে যেতে থাকে ভারতীয় টাকা। ব্যাঙ্ক ও আমদানিকারীদের তরফে চাহিদা বেড়ে যায় ডলারের।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:০৯
Share: Save:

উত্তাল বিদেশি মুদ্রার বাজার।

সরকার টাকার দাম কমাতে চলেছে, এই গুজবের জেরেই বৃহস্পতিবার সকালে আচমকা বিভিন্ন বিদেশি মুদ্রার তুলনায় তলিয়ে যেতে থাকে ভারতীয় টাকা। ব্যাঙ্ক ও আমদানিকারীদের তরফে চাহিদা বেড়ে যায় ডলারের। দুপুরের দিকে তা ১৯ পয়সা কমে যায়। এক ডলার দাঁড়ায় ৬৭.০৭ টাকা। অর্থ মন্ত্রক টাকার মূল্যহ্রাসের সম্ভাবনার কথা পুরোপুরি অস্বীকার করায় অবশ্য বড় পতন এড়ায় টাকা। তবে দিনের শেষেও তা ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। টাকার দাম সর্বসাকুল্যে পড়ে যায় ১৩ পয়সা। ফলে প্রতি ডলার দাঁড়ায় ৬৭.০২ টাকা। গত দু’সপ্তাহে এত নীচে নামেনি টাকা।

সকালে ঢিমেতালেই চলছিল বিদেশি মুদ্রার লেনদেন। কিছুটা বেড়েও যায় টাকার দাম। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই রটে যায় ঝিমিয়ে থাকা রফতানির বাজারকে চাঙ্গা করতে কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রক টাকার দাম কমিয়ে দিচ্ছে। উল্লেখ্য, গত ২০ মাস যাবৎ শুধু জুন বাদ দিলে টানা পড়ছে রফতানি। সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে জুলাইয়ে তা কমেছে ৬.৮%। অগস্টেও তা ০.৩% কমে দাঁড়িয়েছে ২,১৫১ কোটি ডলার, যে-হিসেব এ দিনই দাখিল করেছে বাণিজ্য মন্ত্রক। এই পরিপ্রেক্ষিতে টাকার দাম কমিয়ে রফতানিতে উৎসাহ দেওয়ার জন্য কেন্দ্রের কাছে জোরালো দাবি তুলেছে এই শিল্প। রফতানিকারীদের সংগঠন ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান এক্সপোর্ট অর্গানাইজেশন্স (ফিও) ইতিমধ্যেই কবুল করেছে যে, তারা বাণিজ্য মন্ত্রকের সঙ্গে টাকার বিনিময় মূল্য ও রফতানি ঋণে সুদের হার নিয়ে আলোচনা করেছে। ফিও-র ডিরেক্টর জেনারেল অজয় সহায় স্পষ্টই বলেন, ‘‘টাকার মূল্যহ্রাস জরুরি হয়ে পড়েছে। বিশ্ব বাজারে ভারতের রফতানি পণ্য চড়া দামের কারণে প্রতিযোগিতায় এঁটে উঠতে পারছে না।’’

প্রসঙ্গত, টাকার দাম বেশি থাকলে আন্তর্জাতিক বাজারেও ক্রেতাকে ভারতের জিনিস কিনতে বাড়তি ডলার-পাউন্ড গুনতে হয়। অন্য দিকে, টাকার দাম কমালে ডলারের দাম বাড়বে। সে ক্ষেত্রে ভারত থেকে আসা পণ্য কিনতে বিদেশিদের কিছুটা কম ডলার খরচ করতে হবে, যার জেরে প্রতিযোগিতার দৌড়ে এগোতে পারবে এ দেশের রফতানি পণ্য। এই দাবিই বাণিজ্য মন্ত্রককে জানায় ফিও। তারা বিষয়টি নিয়ে অর্থ মন্ত্রকের সঙ্গে আলোচনায় বসতেও রাজি হয়। আর, এর উপর ভিত্তি করেই গুজব রটে, টাকার মূল্যহ্রাস আসন্ন। ফলে বাজার খোলার সময়ে ডলারে টাকা উঠলেও খুব তাড়াতাড়ি তা উল্টো পথে হাঁটতে থাকে।

অর্থ মন্ত্রকের এক পদস্থ অফিসার জানান, কেন্দ্রের তরফে টাকার দাম কমানোর কোনও প্রস্তাব আনা হয়নি। বাণিজ্যমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন টুইট করেন যে, মূল্যহ্রাস নিয়ে সরকার আলোচনা চালাচ্ছে, এমন কথা তিনি বলেননি। তবে এই ধরনের প্রস্তাব নিয়ে সরকার আদৌ ভাবছে কি না, সে বিষয়টি তিনি খোলসা করেননি। অর্থনীতি বিষয়ক সচিব শক্তিকান্ত দাস বলেন, ‘‘বাজারের চাহিদা-জোগানের ভিত্তিতেই ভারতে টাকার দাম স্থির হয়। সরকার কোনও দর বেঁধে দেয় না। তাই এ ধরনের প্রচার পুরোপুরি মিথ্যা।’’ এর জেরেই টাকার পতন রোখা সম্ভব হয়। প্রসঙ্গত, ১৯৯৩-’৯৪ সাল থেকেই বাণিজ্যিক লেনদেনে ভারতীয় টাকার দাম বাজারের ভিত্তিতে স্থির হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Foreign exchange Money
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE