দেশের গরিব পরিবারগুলির জন্য চালু উজ্জ্বলায় রান্নার গ্যাসে ভর্তুকির সুবিধা আচমকাই ছেঁটে দিল মোদী সরকার। শুক্রবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকের পরে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবর্ষে উজ্জ্বলা গ্রাহকেরা বছরে ৯টি সিলিন্ডারে ভর্তুকি পাবেন। এতদিন মিলত ১২টিতে। প্রায় ১০.৩৫ কোটি পরিবার এই প্রকল্পের সুবিধা নেন। হঠাৎ কেন এই সিদ্ধান্ত, ব্যাখ্যা দেয়নি পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক।
সূত্রের দাবি, দরিদ্র মহিলাদের দূষণহীন জ্বালানিতে রান্নার সুযোগ দিতে উজ্জ্বলা এনেছিল কেন্দ্র। কিন্তু সিলিন্ডারের চড়া দামের কারণে (কলকাতায় ৮৭৯ টাকা) প্রায় ৩০০ টাকা ভর্তুকি বাদ দিয়েও খরচ প্রচুর। তা সিংহভাগ দরিদ্র পরিবারেরই সাধ্যে বাইরে। অনেকে তাই একটি-দু’টির বেশি কেনেন না। ফিরেছেন কাঠ, কয়লা বা কাগজের জ্বালানিতে। বরং উজ্জ্বলার সিলিন্ডার নিয়ে কালোবাজারি বাড়ছে। তবে কারও কারও মতে, যাঁরা গ্যাসেই রান্না করেন এবং পরিবারে সদস্য বেশি, তাঁদের খরচ বাড়বে। ৯টির বেশি সিলিন্ডার (আর তিনটি) কিনলে ভর্তুকি নামবে তলানিতে। একাংশ মনে করছে, সরকার নিজেদের খরচ কমাতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে প্রায় সাড়ে ১০ কোটি পরিবার সমস্যায় পড়তে পারে।
রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থার নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্তার কথায়, ‘‘এই পরিকল্পনা অনেক দিনের। সরকারি সমীক্ষা বলছে, গত অর্থবর্ষে উজ্জ্বলা গ্রাহকেরা বার্ষিক ৪.৫টি সিলিন্ডার কিনেছেন। ভর্তুকির সিলিন্ডার আরও কমানো হতে পারে।’’ এক সূত্র জানাচ্ছে, ২০১৯-২০ সালে বার্ষিক গ্রাহক পিছু সিলিন্ডার বিক্রি হয় ৩টি। ভর্তুকি বৃদ্ধির ফলে তা বেড়েছে। তবে তেল সংস্থার কর্তার বক্তব্য, ‘‘উজ্জ্বলা সিলিন্ডারের ৫০ শতাংশই বাইরে ব্যবহার হয়। সেই তথ্য আমাদের কাছে আছে। জালিয়াতি রুখতেই এই সিদ্ধান্ত।’’ অল ইন্ডিয়া এলপিজি ডিস্ট্রিবিউটর্স ফেডারেশনের সহ-সভাপতি বিজন বিশ্বাস বলছেন, ‘‘সংখ্যাটা ৪-৫টিতে নামানো উচিত। উজ্জ্বলা যোজনার সিলিন্ডার নিয়ে চূড়ান্ত অনিয়ম হচ্ছে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)