E-Paper

‘স্থিতিশীল’ থেকে ‘নেতিবাচক’! আদানিদের সংস্থার মূল্যায়নে কোপ পড়ল, আশঙ্কা পুঁজি নিয়েও

মঙ্গলবার গোষ্ঠীর সাতটি সংস্থা সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গি ‘স্থিতিশীল’ থেকে ‘নেতিবাচকে’ নামিয়েছে মুডি’জ়। ফিচ কিছু ক্ষেত্রে কমিয়েছে আদানিদের সংস্থার বাজারে ছাড়া ঋণপত্রের (বন্ড) মূল্যায়ন।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২৪ ০৮:৪৯
গৌতম আদানি।

গৌতম আদানি। —ফাইল চিত্র।

আদানি গোষ্ঠীর কর্ণধার গৌতম আদানি ও তাঁর ভাইপো সাগর আদানি-সহ সাত জনের বিরুদ্ধে বরাত পেতে ঘুষ দেওয়ার যে অভিযোগ তুলেছে আমেরিকা, তার জের পড়তে শুরু করেছে সংস্থার মূল্যায়নে। মঙ্গলবার গোষ্ঠীর সাতটি সংস্থা সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গি ‘স্থিতিশীল’ থেকে ‘নেতিবাচকে’ নামিয়েছে মুডি’জ়। ফিচ কিছু ক্ষেত্রে কমিয়েছে আদানিদের সংস্থার বাজারে ছাড়া ঋণপত্রের (বন্ড) মূল্যায়ন। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, এই কড়া পদক্ষেপ আদানিদের শেয়ার-ঋণপত্রে লগ্নিকারীদের পক্ষে উদ্বেগের। কারণ, এতে সংস্থার পুঁজি জোগাড়ের সমস্যা বাড়তে পারে। যা বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে ব্যবসায়। যে কারণে আজ তাদের সব সংস্থার শেয়ার দর বিপুল পড়েছে। আদানি গ্রিন এনার্জির (যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে আমেরিকার বাজার নিয়ন্ত্রক এসইসি) দর নেমেছে ৭%।

এসইসি-র অভিযোগ আগেই খারিজ করেছে আদানিরা। ফ্রান্সের টোটাল এনার্জিস অভিযোগ না মেটা পর্যন্ত গোষ্ঠীতে লগ্নি করবে না জানানোর পরে সোমবার আদানিদের দাবি ছিল, তাদের হাতে নগদ পর্যাপ্ত। ঋণ কম নিতে হচ্ছে। মঙ্গলবার স্টক এক্সচেঞ্জকে তারা জানাল, টোটাল-এর সিদ্ধান্তে আর্থিক লোকসান হবে না। কারণ, ফ্রান্সের সংস্থাটির সঙ্গে এখন লগ্নি নিয়ে আলোচনা চলছে না।

মুডি’জ় জানিয়েছে, মূল্যায়ন কমেছে আদানি পোর্টস অ্যান্ড স্পেশাল ইকনমিক জ়োন, আদানি গ্রিন এনার্জি, আদানি ট্রান্সমিশন স্টেপ-ওয়ান, আদানি ট্রান্সপোর্টেশন রেস্ট্রিক্টেড গ্রুপ-১, আদানি ইলেকট্রিসিটি মুম্বই এবং আদানি ইন্টারন্যাশনাল কন্টেনার টার্মিনালের। ঘুষের অভিযোগের কারণে টাকা জোগাড়ে ধাক্কা লাগার আশঙ্কা এবং পরিচালনা নিয়ে প্রশ্ন ওঠাই এই সিদ্ধান্তের অন্যতম কারণ। এর প্রভাব পড়তে পারে দৈনন্দিন কাজ চালানো, মূলধনী খাতে ব্যয়-সহ নানা বিষয়ে। এসইসি-র অভিযোগ আদানি গ্রিনের বিরুদ্ধে হলেও, ঘটনার জের গোটা গোষ্ঠীতে পড়বে বলেই ধারণা মুডি’জ়ের। অদূর ভবিষ্যতে মূল্যায়ন বৃদ্ধির সম্ভাবনাও উড়িয়েছে তারা।

ফিচ আবার একই কারণে আদানি এনার্জি এবং আদানি ইলেকট্রিসিটি মুম্বইয়ের মূল্যায়ন নেতিবাচক করেছে। কমিয়েছে গোষ্ঠীর কিছু সংস্থার বন্ডের রেটিং। তাদেরও বক্তব্য, পরিচালনা ঝুঁকি বৃদ্ধি ও এই ঘটনার প্রভাব গোষ্ঠীর অন্যান্য সংস্থায় পড়ার আশঙ্কা। বিশেষত, গৌতম এবং সাগর যেহেতু সব সংস্থার পরিচালনাতেই জড়িয়ে ও গোষ্ঠীর ট্রাস্ট্রের সদস্য। এই ঘটনার তদন্তে নজর রাখছে তারা। খেয়াল রাখছে সংস্থা মাঝারি মেয়াদে ঋণ নিতে পারে কি না, বেশি ধার করতে হয় কি না ইত্যাদিতেও। তবে ১২-১৮ মাসের মধ্যে বড় ঋণ শোধের বিষয় না থাকায়, এখনই ওই দুই সংস্থার আর্থিক স্বাস্থ্যে প্রভাব পড়বে না বলেই ধারণা।

এরই মধ্যে আদানিদের কিছুটা আশার আলো দেখাচ্ছে আমেরিকায় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আদৌ কত টিকবে, সেই প্রশ্ন। ২০ জানুয়ারি ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার পরে এই ঘটনা তদন্তযোগ্য মনে না করলে অভিযোগ তোলা হতে পারে। যা সত্যি হলে স্বস্তি পাবেন গৌতম। আপাতত জল কতদূর গড়ায়, সে দিকেই নজর সকলের।


(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Adani Bribery Case Gautam Adani Sagar Adani Gautam Adani in Bribery Case

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy