Advertisement
E-Paper

আরও ফিকে সোনা, পড়ল সূচক, টাকাও

বিশ্ব বাজারে দামের ঔজ্জ্বল্য আরও খোয়ালো সোনা। একই ছবি কলকাতা-সহ দেশের বাজারে। সপ্তাহের শেষ লেনদেনের দিন ভাল কাটল না শেয়ার বাজার বা টাকারও। পতন অব্যাহত দু’য়েরই। শুক্রবার কলকাতায় প্রতি ১০ গ্রাম পাকা (২৪ ক্যারাট) সোনার দর আরও ৩২৫ টাকা কমে হয়েছে ২৫,১৭৫ টাকা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৫ ০২:৪৫
Share
Save

বিশ্ব বাজারে দামের ঔজ্জ্বল্য আরও খোয়ালো সোনা। একই ছবি কলকাতা-সহ দেশের বাজারে। সপ্তাহের শেষ লেনদেনের দিন ভাল কাটল না শেয়ার বাজার বা টাকারও। পতন অব্যাহত দু’য়েরই।

শুক্রবার কলকাতায় প্রতি ১০ গ্রাম পাকা (২৪ ক্যারাট) সোনার দর আরও ৩২৫ টাকা কমে হয়েছে ২৫,১৭৫ টাকা। গয়নার সোনার (২২ ক্যারাট) দরও পড়েছে ৩১০ টাকা। নেমে গিয়েছে ২৩,৮৮৫ টাকায়। এর মূল কারণ অবশ্য বিশ্ব বাজারে সোনার দামের নিম্নমুখী দৌড় জারি থাকা। এ দিন প্রতি ট্রয় আউন্স সোনার (৩১.১ গ্রামের বার) দর ০.৭% কমে এসে ঠেকেছে ১,০৮৩.৩৩ ডলারে। পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে নীচে।

সপ্তাহ শেষে ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি সেনসেক্সও। পড়েছে ২৫৮.৫৩ পয়েন্ট। বাজার বন্ধের সময়ে থিতু হয়েছে ২৮,১১২.৩১ অঙ্কে। সেই সঙ্গে ধাক্কা খেয়েছে টাকা। ডলারের সাপেক্ষে তার দর এ দিন পড়েছে ২৭ পয়সা। এক ডলারের দাম পৌঁছেছে ৬৪.০৪ টাকায়। গত পাঁচ সপ্তাহে যা সর্বোচ্চ।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘরে-বাইরে নানা ঘটনাই এই তিন পতনের কারিগর। মার্কিন অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বলে দাম বাড়ছে ডলারের। সাধারণত মার্কিন মুদ্রার দর পড়লে, সোনার দাম বাড়ে। কারণ, তখন লগ্নির নিরাপদ গন্তব্য হিসেবে ওই ধাতুতে টাকা ঢালেন বিনিয়োগকারীরা। কিন্তু এখন ডলারের দর বাড়ছে। তার উপর আবার এ বছরই সুদ বাড়ানোর কথা বলেছে মার্কিন শীর্ষ ব্যাঙ্ক ফেডারেল রিজার্ভ। বিশেষজ্ঞদের মতে, মূলত এই দুই কারণে সোনায় টাকা ঢালতে আগ্রহ কমেছে লগ্নিকারীদের। যার ফল হিসেবে তার দাম কমছে বিশ্বজুড়ে। কলকাতায় প্রায় প্রতিদিন তা পড়ছে ২৫০-৩০০ টাকা।

ডলারের দর বৃদ্ধি এ দিন প্রভাব ফেলেছে শেয়ার বাজারেও। কারণ, তার সাপেক্ষে পড়েছে টাকার দাম। মার্কিন মুদ্রার দর উঠেছে ৬৪ টাকার উপরে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এতে কিছুটা হলেও টোল খেয়েছে লগ্নিকারীদের আস্থা।

তবে এটি অবশ্য সেনসেক্সের পতনের প্রধান কারণ নয়। বরং বিশেষজ্ঞদের মতে, বাজারকে চেপে ধরেছে রাজনৈতিক কাজিয়ায় সংসদের বাদল অধিবেশন পুরোপুরি ধুয়ে যাওয়ার আশঙ্কা। এবং সেটিই এ দিন সূচকের পতনের সবচেয়ে বড় কারণ। তাঁদের কথায়, জমি-বিল, পণ্য-পরিষেবা কর (জিএসটি) বিলের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিলগুলি এই অধিবেশনে পাশ হয় কি না, সে দিকে সাগ্রহে তাকিয়েছিল শিল্পমহল। কিন্তু যা পরিস্থিতি, তাতে এই অধিবেশনে সংসদে কাজ আদৌ কতটা হবে, তা নিয়ে সন্দিহান তাঁরা। শিল্পমহলের আশঙ্কা, জমি-বিল তো দূর অস্ত্‌, এমনকী তীরে এসে তরী ডুবতে পারে পণ্য-পরিষেবা করের বিল পাশের ক্ষেত্রেও। শাসক-বিরোধীদের লড়াইয়ে তিন দিন কোনও কাজই হয়নি। এরপর অধিবেশনের বাকি দিনগুলিও এ ভাবে নিষ্ফলা হলে, সংস্কারের কর্মসূচি থমকে যাবে বলে আশঙ্কা সকলের। উল্লেখ্য, শুধু গত তিন দিনে মোট ৬৫০ পয়েন্টেরও বেশি পড়েছে সেনসেক্স।

সংসদে অচলাবস্থার পাশাপাশি প্রথম ত্রৈমাসিকে অধিকাংশ সংস্থার আর্থিক ফলাফল খুশি করেনি বাজারকে। সূচকের পতনে ইন্ধন জুগিয়েছে চিনের উৎপাদন শিল্পের খারাপ পরিসংখ্যানও। বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ অর্থনীতির দেশে কল-কারখানায় উৎপাদন নেমে গিয়েছে পনেরো মাসের মধ্যে সব থেকে নীচে। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই তার প্রভাব পড়েছে ভারতের বাজারে।

অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, এই মুহূর্তে দুষ্টচক্রের কবলে পড়েছে টাকা আর শেয়ার বাজার। ডলারের সাপেক্ষে টাকার দর কমলে, তা সূচকের পতনে ইন্ধন জোগাচ্ছে। আবার শেয়ার বাজারের পতন বিরূপ প্রভাব ফেলছে বিদেশি মুদ্রা বাজারে। সমস্যার এই জাল কেটে বেরোতে আপাতত সংসদের অধিবেশন চালুর দিকেই নজর সকলের।

global cues Gold prices Delhi jewellers shop

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}