একদিনে ২১৫০ টাকা বেড়ে গেল খুচরো পাকা সোনার (১০ গ্রাম, ২৪ ক্যারাট) দাম। মঙ্গলবার কলকাতায় তা নজির গড়ে পৌঁছল ১,১৪,৭৫০ টাকায়। জিএসটি যোগ করে ১,১৮,১৯২.৫০ টাকা। শিখরে পৌঁছেছে গয়নার সোনাও। হলমার্ক সোনা ১,০৯,০৫০ টাকা ছুঁয়ে ফেলেছে, কর নিয়ে ১,১২,৩২১.৫০ টাকা।
সংশ্লিষ্ট পক্ষের দাবি, সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন মধ্যবিত্ত ক্রেতা। বিয়ের গয়না কেনার চাপ থাকলেও এত খরচ করার সাধ্য নেই অনেকেরই। তার উপর রুপোও ছুটছে। কেজি প্রতি খুচরো রুপো ১,৩৫,৩৫০ টাকা হয়েছে। সোনার বিকল্প হিসেবে তার দিকে পা বাড়ানো কঠিন। অনেকেরই মতে, ব্যাঙ্ক বা আর্থিক সংস্থার থেকে ধার করা গেলে এই সমস্যার সমাধান হতে পারে। তাই অবিলম্বে সোনা, রুপো বা সেগুলির গয়না কেনার জন্য কিস্তিতে টাকা মেটানোর সুবিধা চালু করা উচিত। স্বর্ণ শিল্পমহল জানাচ্ছে, ক্রেতার অভাবে ইতিমধ্যেই পাড়ার বহু ছোট সোনার দোকানে তালা ঝুলেছে। পুজোর মুখে গয়নার কারিগরদের অনেকে কর্মহীন হয়েছেন। কারণ, বরাত তলানিতে ঠেকেছে। এই পরিস্থিতিতে সোনায় জিএসটি মকুবের দাবিও উঠছে।
অল ইন্ডিয়া জেম অ্যান্ড জুয়েলারি ডোমেস্টিক কাউন্সিলের ডিরেক্টর সমর দের দাবি, জিএসটির নতুন হার বিভিন্ন পণ্যের বহু ক্রেতার মুখে হাসি ফুটিয়েছে। কিন্তু গয়নার ক্রেতাদের ক্ষেত্রে হয়েছে ঠিক উল্টোটা। প্রতিদিনই প্রায় হাজার বা তার বেশি টাকা দাম বাড়ছে সোনার। তা কার্যত সাধারণ মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে বেরিয়ে গিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘এই কারণে সোনায় জিএসটির ৩% হার তুলে নেওয়া বা কমানোর আর্জি জানিয়েছিলাম আমরা। কিন্তু সরকার সেটা মানেনি। এ বার অন্য বেশ কিছু ভোগ্যপণ্যের মতো ঋণ শোধের মাসিক মাসিক কিস্তিতে (ইএমআই) গয়না কেনার সুবিধা দিলে, দিওয়ালির মরসুমে ক্রেতা-বিক্রেতারা স্বস্তি পাবেন। হাঁফ ছাড়বেন ব্যবসায়ীরাও।’’
স্বর্ণঋণ সংস্থা আইআইএফএলের আঞ্চলিক কর্তা নিলয় ঘোষ বলেন, ‘‘দাম বৃদ্ধি সোনা বন্ধক রেখে ঋণ নেওয়ার প্রবণতা দ্বিগুণ বাড়িয়েছে। গত অর্থবর্ষের এপ্রিল থেকে এখনও পর্যন্ত শুধু ব্যাঙ্ক থেকেই ২.৯৪ লক্ষ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে। তার আগের অর্থবর্ষে (২০২৩-২৪) যা ছিল ১.০২ লক্ষ কোটি।’’
রাখালচন্দ্র দে জুয়েলার্সের ডিরেক্টর নবীনচন্দ্রের দাবি, শুধু গ্রাহকের জন্যে নয়, গয়না শিল্পের স্বার্থেও ইএমআই চালু জরুরি। শুধু এ রাজ্যেই এই শিল্পের সঙ্গে কারিগর-সহ প্রায় দেড় কোটি মানুষের রুটিরুজি জড়িয়ে। ছোট এবং মাঝারি দোকানগুলিতে বিক্রিবাটা তলানিতে চলে গিয়েছে। বেশির ভাগ ক্রেতার মুখ ফেরানোর ফল ভুগছেন কারিগরেরাও।
সমস্যা
বহু মানুষের পক্ষে সোনা কেনা কঠিন হয়েছে।
অনেকে বাধ্য হচ্ছেন ঘরের সোনা বিক্রি করতে।
ক্রেতার অভাবে বিপাকে ছোট ব্যবসায়ী, গয়নার কারিগরেরা।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)