—প্রতীকী চিত্র।
কেন্দ্র বারবার বেসরকারি ক্ষেত্রকে লগ্নিতে আহ্বান জানালেও, গত কয়েক বছরে তাদের তরফে হাত খুলে খরচের প্রবণতা দেখা যাচ্ছিল না। যে কারণে করোনার পরে অর্থনীতিকে টেনে তুলতে সরকারি খরচের উপরেই ভরসা রেখেছিল অর্থ মন্ত্রক। যার হাত ধরে গত তিন বছরে ৭ শতাংশের বেশি বৃদ্ধির মুখ দেখেছে দেশ। এ বছর বাজেটেও সেই মূলধনী ব্যয়ের ধারা বজায় থাকবে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞেদের। তবে তাঁদের মতে, এ বার কমতে পারে বরাদ্দ বৃদ্ধির গতি। বিশেষ নজর দেওয়া হতে পারে পরিকাঠামো ক্ষেত্রের উপরে।
২০১৮-১৯ সালে অর্থনীতির ঝিমুনির সময়ে বেসরকারি ক্ষেত্রকে চাঙ্গা করতে একপ্রস্থ দাওয়াই দিয়েছিল মোদী সরকার। নতুন কারখানা গড়ায় সুবিধা থেকে শুরু করে আয়করে সুরাহার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। তা ফল দেওয়ার আগেই থাবা বসায় অতিমারি। যার জেরে বেসরকারি ক্ষেত্র তো বটেই, সমাজের সব স্তরেই থমকে যায় আর্থিক কর্মকাণ্ড। প্রভাব পড়ে অর্থনীতিতে। এই পরিস্থিতিতে বৃদ্ধির চাকায় গতি আনতে করোনা পরবর্তী একের পর এক বাজেটে সরকারের মূলধনী ব্যয় বরাদ্দ বাড়িয়েছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।
মূল্যায়ন সংস্থা ইক্রার মতে, এ বছরের বাজেটেও সেই বরাদ্দের গতি বজায় থাকার সম্ভাবনা। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে তা হতে পারে ১০.২ লক্ষ কোটি টাকা। যা চলতি অর্থবর্ষের তুলনায় প্রায় ১০% বেশি। তবে এর আগের বছরগুলিতে বৃদ্ধির হার ছিল ২০ শতাংশের বেশি। সে দিক থেকে দেখতে গেলে আর্থিক কর্মকাণ্ড তথা জিডিপি-র হারে তার প্রভাব পড়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না তারা।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরে এপ্রিল-নভেম্বরে বাজেট লক্ষ্যমাত্রার ৫৮.৫% (প্রায় ৫.৯ লক্ষ কোটি টাকা) মূলধনী ব্যয় হয়েছে। বৃদ্ধির হারের দিক থেকে তা গত অর্থবর্ষের এই সময়ের তুলনায় বেশি হলেও, অক্টোবরের হিসাবে খরচের গতি কমেছে। গড় হিসাবে ২০২৩-২৪ সালে তা দাঁড়িয়েছে ৭৩,২১০ কোটি টাকা। যদিও কেন্দ্রের লক্ষ্য ছুঁতে মাসে ৮৩,৪০০ কোটি টাকা ব্যয় হওয়া প্রয়োজন।
এমাকি গ্লোবাল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেসের গবেষণা বিভাগের প্রঝান শেষাদ্রি সেনের মতো বিশেষজ্ঞদের অবশ্য বক্তব্য, বেসরকারি ক্ষেত্রে সাম্প্রতিককালে গতি এসেছে। লগ্নি দেখা যাচ্ছে ইস্পাত, সিমেন্ট, তেলে। তবে এখনও পরিকাঠামোর দিক দিয়ে অনেকটাই পিছিয়ে ভারত। আর সেই ঘাটতি মেটানোর ক্ষেত্রে সরকারের মূলধনী ব্যয় চালু থাকারই সম্ভাবনা। শুধু তা-ই নয়। সেই লগ্নি হতে পারে আরও দ্রুত হারে। যা উৎপাদনশীলতা বাড়াবে, তৈরি করবে চাহিদা, বাড়বে রফতানি ও গতি আসবে কর্মসংস্থানে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy