প্রতীকী ছবি
বিশ্ব বাজারে ক্রমাগত পড়ে চলেছে অশোধিত তেলের দর। মাস দু’য়েক আগেও ব্যারেল প্রতি যে অশোধিত তেল ৫৫ ডলার ছিল, তা-ই এখন নেমেছে ৩৬ ডলারের আশেপাশে। বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, গতি হারানো অর্থনীতির পালে হাওয়া দিতে এই পরিস্থিতি আদতে নতুন সুযোগ খুলে দিল ভারতের সামনে। একে ঠিক ভাবে কাজে লাগাতে পারলে কমতে পারে চলতি খাতে ঘাটতি, মূল্যবৃদ্ধির হার। আবার তেলের আমদানি বিল কমার ফলে বিভিন্ন খাতে ব্যয় বরাদ্দ বাড়াতে পারে সরকার।
আর সাধারণ মানুষ? জ্বালানি খাতে খরচ কমার সুযোগ কি পাবেন তাঁরা? বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, নাগরিকদের সেই সুযোগ দিচ্ছে না কেন্দ্র। বিশ্ব বাজারে তেলের দাম বাড়লে দেশে যে ভাবে পেট্রল-ডিজেলের দাম বৃদ্ধি হয়, তেলের দাম কমার ক্ষেত্রে সে ভাবে কমে না দাম।
বস্তুত, এই প্রসঙ্গেই বুধবার প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী বলেছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী, আপনি নির্বাচিত কংগ্রেস সরকারকে অস্থির করতে ব্যস্ত বলে হয়তো খেয়াল করেননি, বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম ৩৫% পড়েছে। আপনি কি পেট্রলের দাম লিটারে ৬০ টাকার নীচে নামিয়ে মানুষকে সুবিধা দিতে পারেন না? এতে থমকে থাকা অর্থনীতিও চাঙ্গা হবে।’’ সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির যুক্তি, ‘‘অশোধিত তেল অনেকটাই কমেছে। এর সুবিধা মানুষকে দিতেই হবে।’’
কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা হিসেব কষে দেখাচ্ছেন, ডলারের নিরিখে টাকার দর কমেছে ঠিকই। কিন্তু ২০১৪ সালে মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার সময়ে অশোধিত তেল আমদানির খরচ ছিল ব্যারেল প্রতি ৬৩১৮.৭৬ টাকা। এখন ডলারের বিনিময় মূল্য ৭৩.৯৬ টাকা ধরলেও তা ২৭৯৯ টাকায় নামার কথা।
পরিস্থিতি কী
• করোনাভাইরাসের জেরে বিশ্ব বাজারে তেলের দাম কমেছে।
• উৎপাদন ছাঁটার ব্যাপারে বোঝাপড়ায় আসতে পারেনি ওপেক ও তার সহযোগী দেশগুলি।
• ফলে আরও কমছে তেল।
• করোনার প্রভাব শুরুর পরে দর কমেছে প্রায় ৪৫%।
• বুধবার রাতে ব্যারেলে ব্রেন্ট ক্রুড ছিল প্রায় ৩৬ ডলার।
• উৎপাদন বৃদ্ধির প্রভাবে ক’মাস তেলের দর নীচের দিকে থাকতে পারে বলে অনুমান বিশেষজ্ঞদের।
ভারতের সুবিধা
• তেলের দাম কমায় তার আমদানির খরচ কমবে। সুযোগ মিলবে চলতি খাতে ঘাটতি কমানোর।
• তেল ১০ ডলার কমলে চলতি খাতে ঘাটতি কমবে জিডিপির ৫০ বেসিস পয়েন্ট বা ১৫০০ কোটি ডলার।
• কমতে পারে মূল্যবৃদ্ধির হার। ১০ ডলার হ্রাসে প্রায় ৩০ বেসিস পয়েন্ট।
• তেল আমদানির ব্যয় কমায় অন্য খাতে খরচ বাড়াতে পারবে কেন্দ্র। ফলে বাড়বে মানুষের সঞ্চয় ও লগ্নি।
• মিলবে বৃদ্ধিকে ঘুরিয়ে দাঁড় করানোর সুযোগও।
• সুবিধা হতে পারে গাড়ি, বিমান, সিমেন্ট, গ্যাস শিল্পের। কমবে ভোগ্যপণ্য প্যাকেজিংয়ের খরচও।
অসুবিধা কাদের
• অশোধিত তেলের দাম খুব কমে গেলে সমস্যায় পড়তে পারে তেল উত্তোলন সংস্থা।
• পেট্রোপণ্যের ভ্যাট সংগ্রহ কমতে পারে রাজ্যের।
সাধারণ ক্রেতা?
• পেট্রোপণ্যের দাম কমলে সুবিধা সাধারণ মানুষের।
• কিন্তু বিরোধীদের অভিযোগ, বিশ্ব বাজারে তেলের দাম কমার যথেষ্ট সুবিধা ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে না কেন্দ্র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy