ত্র্যহস্পর্শ।
চলতি অর্থবর্ষে ৮ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়ার লক্ষ্যকে কিছুটা হলেও অনিশ্চিত করে দিল প্রথম তিন মাসের বৃদ্ধির হার। এপ্রিল-জুন ত্রৈমাসিকে তা দাঁড়াল ৭.১%। জানুয়ারি-মার্চ ত্রৈমাসিক (৭.৯%) কিংবা আগের বছরের এই একই সময়ের (৭.৫%) তুলনায় তো বটেই, গত ছয় ত্রৈমাসিকের মধ্যেও এই হার সব থেকে ঢিমে।
কেন্দ্রের উদ্বেগ বাড়িয়ে অর্থ বছরের প্রথম চার মাসে (এপ্রিল-জুলাই) বাজেট লক্ষ্যমাত্রার সাপেক্ষে বেড়েছে রাজকোষ ঘাটতির অনুপাতও। দেখা যাচ্ছে, পুরো অর্থবর্ষের জন্য সম্ভাব্য রাজকোষ ঘাটতি হিসেবে যা ধরে রাখা হয়েছে, প্রথম চার মাসেই ওই অঙ্ক পৌঁছেছে তার ৭৩.৭ শতাংশে। আগের বার এই একই সময়ে যা ছিল ৬৯.৩%। চোখে পড়ার মতো বেড়েছে ভর্তুকির পরিমাণও। এপ্রিল-জুন ত্রৈমাসিকে গত বারের একই সময়ের তুলনায় এক লাফে তা বেড়েছে ৫৩%।
কেন্দ্রীয় আর্থিক বিষয়ক সচিব শক্তিকান্ত দাসের অবশ্য দাবি, এক ধাক্কায় ভর্তুকির পরিমাণ ৫৩% বেড়ে যাওয়াই টেনে নামিয়েছে বৃদ্ধি হারকে। এবং তা হয়েছে এ বার কেন্দ্র প্রথম ত্রৈমাসিক থেকেই খাদ্য, পেট্রোপণ্য, সার ইত্যাদি খাতে ভর্তুকির খতিয়ান দিতে শুরু করায়। তাঁর দাবি, ভাল বর্ষা আর সপ্তম বেতন কমিশনের সুপারিশ কার্যকর করার দৌলতে আগামী দিনে বৃদ্ধির পালে হাওয়া লাগবে। কঠিন হবে না বছরের শেষে ৮ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়াও।
তবে কেন্দ্রের এই আশ্বাস সত্ত্বেও অর্থনীতির হাল নিয়ে দুশ্চিন্তা স্বাভাবিক ভাবেই উধাও হয়নি। বুধবার কেন্দ্রের প্রকাশিত পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, আলোচ্য তিন মাসে সরাসরি উৎপাদন কমে গিয়েছে খনন শিল্পে। ভাল হয়নি কৃষি উৎপাদনও। কল-কারখানায় উৎপাদন ৯.১% বেড়েছে ঠিকই। কিন্তু সে বিষয়ে সংশয়ী বিশেষজ্ঞমহলের একাংশ। যেমন, ইন্ডিয়া রেটিংস অ্যান্ড রিসার্চের মুখ্য অর্থনীতিবিদ দেবেন্দ্র কুমার পন্থের প্রশ্ন, বিনিয়োগ এবং বাজারে চাহিদা দু’ই যেখানে কম, সেখানে উৎপাদন শিল্পে বৃদ্ধির হার এত ভাল কী ভাবে, তা স্পষ্ট নয়। অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য সেই ভাল বৃষ্টি আর সপ্তম বেতন কমিশনের প্রভাবের উপরই আস্থা রাখছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে বেসরকারি বিনিয়োগ খুব তাড়াতাড়ি লাফিয়ে বাড়ার বিষয়ে এখনও তেমন আশাবাদী নন তাঁরা।
পরিকাঠামো শিল্পে বৃদ্ধিও কমল। জুলাই মাসে ৮টি পরিকাঠামো শিল্পে উৎপাদন বৃদ্ধির হার ৩.২%। তবে জুনের ৫.২ শতাংশের থেকে তা অনেকটাই কম বলে এ দিন প্রকাশিত সরকারি পরিসংখ্যান থেকে জানা গিয়েছে। তেল শোধন ক্ষেত্রে অবশ্য উৎপাদন বেড়েছে ১৩.৭%, আগের বছরের হার ২.৯%। কয়লা উৎপাদন বেড়েছে ৫.১ শতাংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy