Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

রাজনীতির সংঘাতে সিঁদুরে মেঘ দেখছে শিল্প

তিক্ততার পারদ চড়ছিল ভোট প্রচারের সময় থেকেই। কিন্তু নির্বাচনের ফল প্রকাশের পরে এ রাজ্যে তৃণমূল বনাম বিজেপি সংঘাত যে জায়গায় পৌঁছেছে, তাতে এখানে শিল্পায়ন এবং লগ্নি আসা ব্যাহত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে শিল্পমহল।

যুযুধান: নরেন্দ্র মোদী ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই দ্বৈরথই আশঙ্কার কারণ শিল্প মহলের কাছে। ফাইল চিত্র

যুযুধান: নরেন্দ্র মোদী ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই দ্বৈরথই আশঙ্কার কারণ শিল্প মহলের কাছে। ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০১৯ ০১:৪৪
Share: Save:

তিক্ততার পারদ চড়ছিল ভোট প্রচারের সময় থেকেই। কিন্তু নির্বাচনের ফল প্রকাশের পরে এ রাজ্যে তৃণমূল বনাম বিজেপি সংঘাত যে জায়গায় পৌঁছেছে, তাতে এখানে শিল্পায়ন এবং লগ্নি আসা ব্যাহত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে শিল্পমহল।
এ শহরের একাধিক বণিকসভার মতে, ভোট ময়দানে কথার লড়াই হবেই। দু’পক্ষই হাঁটবে তীব্র আক্রমণের পথে। সে দিক থেকে নরেন্দ্র মোদী বনাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিংবা বিজেপি বনাম তৃণমূলের লড়াই নিতান্তই স্বাভাবিক। কিন্তু এ রাজ্যে সমস্যা হল, ভোট মেটার পরেও সেই উত্তাপ কমার কোনও লক্ষণ নেই। বরং দিন দিন তা ঊর্ধ্বমুখী। ফলে তার আঁচ পড়ছে কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্কে। প্রধানমন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রীর দলের মধ্যে বিরোধের সুর এত চড়া তারেই বাঁধা থেকে গেলে, বিনিয়োগ আসার পথ আরও বন্ধুর হবে বলে আশঙ্কা তাদের। এমনিতেই বড় শিল্পের খরায় ভোগা রাজ্যের পক্ষে যা চিন্তার। আর সেই কারণেই দ্রুত এই বিরোধ মেটানোর আর্জি জানাচ্ছে ওই বণিকসভাগুলি।
মঙ্গলবার ভারত চেম্বার অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট সীতারাম শর্মা বলেন, ‘‘রাজ্য ও কেন্দ্রের মধ্যে সম্পর্ক ক্রমশ যে জায়গায় চলে যাচ্ছে, তা পশ্চিমবঙ্গের শিল্পায়নের পক্ষ শুভ নয়। রাজনীতিবিদদের উচিত আগে রাজ্য ও দেশের স্বার্থ মাথায় রাখা।’’
মার্চেন্ট চেম্বার অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট বিশাল ঝাঝারিয়া বলেন, ‘‘ভোট মেটার পরে রাজ্য ও কেন্দ্রের মধ্যে সম্পর্কে যে তিক্ততা তৈরি হয়েছে, তা অবিলম্বে দূর হওয়া জরুরি। নইলে রাজ্যের শিল্পায়নের অগ্রগতিতে প্রশ্ন চিহ্ন ঝুলতে পারে।’’
অনেকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ভোট ময়দানে টক্কর দিয়েও ভাল সম্পর্ক বজায় রাখার ফসল হিসেবেই সম্প্রতি বিধ্বংসী ঘুর্ণি ঝড়ের পরে ৬,০০০ কোটি টাকার ত্রাণ সাহায্য পেয়েছে ওড়িশা। কারও আবার দাবি, এ রাজ্যের শিল্প সম্মেলনে (বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিট) মোট যত লগ্নি প্রস্তাব এসেছে, তার অনেকটাই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার। ওই সব লগ্নি প্রস্তাব বাস্তবায়নে কেন্দ্র-রাজ্য বিরোধ যাতে বাধা হয়ে না দাঁড়ায়, তা নিশ্চিত করতে মোদীর কাছে আর্জি জানিয়েছে ভারত চেম্বার। রাজ্যের উন্নতির জন্য কেন্দ্রের কী কী করণীয়, সে সম্পর্কে কিছু প্রস্তাব দিয়ে ‘অ্যাজেন্ডা পেপার’ও সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়েছে তারা।
তবে একই সঙ্গে ভারত চেম্বারের দাবি, রাজ্যের শিল্পায়নের জন্য সবার আগে উদ্যোগী হতে হবে রাজ্য সরকারকেই। শর্মার মতে, এ জন্য বণিকসভাগুলির সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর সরাসরি আলোচনা হওয়া জরুরি। এ বিষয়ে রাজ্যের গাফিলতি উল্লেখ করে তিনি জানান, ‘‘রাজ্যে শিল্পায়ন ত্বরান্বিত করতে ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের শিল্পপতি-সহ সমস্ত সংশ্লিষ্ট পক্ষকে নিয়ে একটি বিশেষ কমিটি (কোর কমিটি) গঠন করেছিলেন। প্রথমে মাঝেমধ্যে আলোচনা হলেও, গত দু’বছরেরও বেশি সময়ে ওই কমিটির কোনও বৈঠকই আর হয়নি।’’ অথচ শিল্পের ছবি বদলাতে নিয়মিত ওই ধরনের বৈঠক জরুরি বলে তাঁর দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Politics Trade Industry TMC BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE