বাগান বন্ধ আজ বহু দিন। অন্তত বছর দুয়েক আগে বাতিল হয়েছে লিজ-ও। উত্তরবঙ্গের এমন পাঁচটি চা বাগানকে ফের চাঙ্গা করতে যৌথ ভাবে উদ্যোগী হচ্ছে কেন্দ্র ও রাজ্য।
সরকারি সূত্রের খবর, এ জন্য পুনরুজ্জীবন প্রকল্প তৈরির কথা ভাবছে তারা। কোন পথে হাঁটলে নতুন মালিক মিলবে, তা নিয়ে নিজের-নিজের মতো করে প্রাথমিক চিন্তাভাবনাও শুরু করেছে টি বোর্ড এবং রাজ্যের শিল্প দফতর। তবে বিষয়টি প্রাথমিক স্তরে থাকায় এখন এ নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন কর্তারা।
ঢেকলাপাড়া, বান্দাপানি, রেডব্যাঙ্ক, সুরেন্দ্রনগর ও ধরণীপুর। এই পাঁচ বাগানের মধ্যে ঢেকলাপাড়া (২০০৬) ছাড়া বাকি সব ক’টিরই লিজ বাতিল হয়েছে ২০১৪ সালে। সরকারি সূত্রের খবর, ওই বছরই সুরেন্দ্রনগর (জানুয়ারি), বান্দাপানি (অক্টোবর), রেডব্যাঙ্ক ও ধরণীপুর (নভেম্বর) বাগানের দখল নেয় রাজ্য। বাগানগুলি আরও অনেক আগে থেকে বন্ধ। ঢেকলাপাড়া বাগানকে আবার ২০১২ সালের মে মাসে কলকাতা হাইকোর্ট নিযুক্ত লিকুইডেটর নিলামে তুললেও, ক্রেতা মেলেনি। অথচ পাঁচ বাগানে মোট শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় পাঁচ হাজার।
উত্তরবঙ্গের চা বলয়ে শ্রমিক মৃত্যুর ঘটনার আঁচ লেগেছিল রাজ্য রাজনীতিতে। বাগানগুলির একাংশের দুর্দশা নিয়ে রাজ্যের তোপের মুখে পড়ে কেন্দ্র। এর পর লিজ বাতিল হওয়া ওই পাঁচ বাগান খুলতে রাজ্য কেন উদ্যোগী হচ্ছে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে কেন্দ্র ও চা শিল্পমহলের একাংশ। কারণ, জমির মালিকানা রাজ্যেরই। তাই লিজ বাতিল হলে, সেই বাগান নতুন মালিকের হাতে তুলে দেওয়া তাদের পক্ষে সহজ।
সরকারি সূত্রে খবর, নতুন মালিক পেতে মূল সমস্যা বাগানগুলির দুরবস্থা। এই পরিস্থিতিতে কী পদক্ষেপ করলে বাগানগুলি সম্ভাব্য ক্রেতাদের কাছে আকর্ষণীয় হতে পারে, তা গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাঙ্কের কাছে আগের কর্তৃপক্ষের ঋণের সমস্যা কী ভাবে মেটানো যায়, দেখা হবে তা-ও। অনেক সময়ে শিল্পকে ঋণের দায়ের কিছুটা ছাড় অথবা কিস্তিতে মেটানোর সুযোগ দেওয়া হয়। যা ঋণ পুনর্গঠন প্রকল্প হিসেবে পরিচিত। খতিয়ে দেখা হবে সেই সম্ভাবনা। কথা বলা হতে পারে ব্যাঙ্কগুলির সঙ্গেও।
তবে একই সঙ্গে একটি বিষয়ে তাঁরা বাড়তি সতর্ক। তা হল, পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে যাতে কম দরে বন্ধ বাগান কেনার সুবিধা কেউ না পান। তা ছাড়া, অন্য কোনও রুগ্ণ বাগানের কর্তৃপক্ষ শুধু সরকারি সুবিধা পাওয়ার আশায় এই সব বাগান হাতে নিলে, তার পরিচালনা ঠিক মতো না-ও হতে পারে বলে অনেকের আশঙ্কা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy