Advertisement
০৪ মে ২০২৪

শালপাতায় পাত পাততে কোমর বাঁধছে উত্তরবঙ্গও

কাঁচামালের এই জোগানের হাত ধরেই ওয়েস্ট বেঙ্গল খাদি অ্যান্ড ভিলেজ ইন্ডাস্ট্রি বোর্ডের উদ্যোগে উত্তরে বিকল্প আয়ের পথ খুলবে। আলিপুরদুয়ার ও বাগডোগরা কেন্দ্রে।

দেবপ্রিয় সেনগুপ্ত
শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৮ ০১:৪৫
Share: Save:

ফুচকাওয়ালা বা মিষ্টির দোকান থেকে বিয়েবাড়ি বা পিকনিকের ভুরিভোজ— সবেতেই শালপাতার থালা-বাটির ব্যবহার বরাবর। পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের মতে, দূষণ ছড়ায় না বলে এগুলির কদর আরও বাড়ছে। সেই সুযোগকেই কাজে লাগাতে চাইছে খাদি পর্ষদ। দক্ষিণবঙ্গের পরে তাই উত্তরবঙ্গেও শালপাতা থেকে থালা-বাটি তৈরির ব্যবসাকে সংগঠিত রূপ দেওয়ার কাজে নেমেছে তারা। বিশেষত উত্তরের জঙ্গল জুড়ে অজস্র শাল গাছ থাকায় কাঁচামাল যেখানে অঢেল। মূলত ওই পাতা জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার হয় সেখানে। অল্পস্বল্প থালা-বাটি তৈরিও করেন অনেকে। কিন্তু সংগঠিত উদ্যোগ তেমন নেই। ফলে বিপুল অংশ পড়ে নষ্ট হয়।

কাঁচামালের এই জোগানের হাত ধরেই ওয়েস্ট বেঙ্গল খাদি অ্যান্ড ভিলেজ ইন্ডাস্ট্রি বোর্ডের উদ্যোগে উত্তরে বিকল্প আয়ের পথ খুলবে। আলিপুরদুয়ার ও বাগডোগরা কেন্দ্রে।

এখন শালপাতার থালা-বাটি তৈরির মূল ঘাঁটি দক্ষিণবঙ্গ। ঝাড়গ্রামে এই ব্যবসাকে সংগঠিত রূপ দিয়েছে খাদি বোর্ড। তাদের দাবি, আগে দক্ষিণে বছরে ২-৩ লক্ষ শালপাতার থালা তৈরি হলেও এখন হয় প্রায় ৭ লক্ষ। কর্মীদের আয় বেড়েছে চার গুণ। পাতা শুকোনোর ব্যবস্থা ও প্রেসিং বা সেলাই মেশিনের মতো পাত্র তৈরির যন্ত্র জুগিয়েছে পর্ষদ। দিয়েছে প্রশিক্ষণও। তাদের দাবি, এই মডেলেই উত্তরবঙ্গে থালা-বাটি তৈরির কাজে নামবেন প্রায় ৩০০ স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলা সদস্যরা। পর্ষদের সিইও মৃত্যুঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘দূষণ ঠেকাতে শালপাতার পাত্রের ব্যবহার বাড়ছে। সেই বাজার ধরার চেষ্টা চলছে উত্তরবঙ্গে। পুজোর আগেই প্রশিক্ষণ শুরু হতে পারে।’’

বস্তুত, চা চাষ ও পর্যটনই উত্তরের বাসিন্দাদের অন্যতম প্রধান দুই জীবিকা। শালপাতার পাত্র বানানোর কাজ ততটা বড় পরিসরের না হলেও, তাতে সংগঠিত ভাবে বিকল্প কাজের সুযোগ খুলবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল। সরকারি সূত্রের দাবি, উত্তরবঙ্গ পর্যটন কেন্দ্র হওয়ায়, তেমন ভাবে প্রচার চালালে দ্রুত পণ্যের চাহিদাও বাড়ানো যাবে।

ঝাড়গ্রামের সংশ্লিষ্ট সব স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে নিয়ে হয়েছে ফেডারেশন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে হয়েছে এই শিল্পের উৎকর্ষ কেন্দ্র। প্রায় ১৫ লক্ষ থালা-বাটি মজুত থাকবে সেখানে। উত্তরবঙ্গেও সেই ধরনের কিছু করার বিষয়টি খতিয়ে দেখছে খাদি পর্ষদ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Sal leaf plate North Bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE