তিন ঘণ্টার মধ্যেই চেক ভাঙাতে হবে— ব্যাঙ্কগুলিকে নির্দেশ দিয়েছিল রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। খাতায় কলমে ওই নিয়ম চালু হয়ে গিয়েছে গত ৪ অক্টোবর থেকেই। কিন্তু বহু গ্রাহকের অভিযোগ, বাস্তবে তিন ঘণ্টা তো দূরের কথা, অনেক ক্ষেত্রে পুরনো নিয়মের থেকেও বেশি সময় লাগছে চেক ক্লিয়ার হতে। আগে যে দিন চেক জমা দেওয়া হত, তার পরের দিনই তা ভাঙিয়ে নগদ করে দিতে ব্যাঙ্কগুলি। এ মাসে নতুন ব্যবস্থা শুরুর পরে অনেক ক্ষেত্রে চেক নগদ হওয়ার পরে গ্রাহকের নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে জমা পড়তে লেগে যাচ্ছে ৩-৪ দিন। চেক ভাঙানো নিয়ে সমস্যার অভিযোগ উঠেছে রাষ্ট্রায়ত্ত এবং বেসরকারি, সব ধরনের ব্যাঙ্কেই।
ব্যাঙ্কিং মহল সূত্রের দাবি, নতুন ব্যবস্থা ঠিক মতো কাজ না করার জন্য দায়ী মূলত ব্যাঙ্কগুলিতে এবং চেক ক্লিয়ারিংয়ের দায়িত্বে থাকা ‘ন্যাশনাল পেমেন্ট কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়ার’ (এনপিসিআই) প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো এখনও ঠিক মতো তৈরি হতে না পারা। তার উপর তিন ঘণ্টার মধ্যে চেক ভাঙিয়ে নগদ করার প্রক্রিয়া কার্যকর করার জন্য বহু ক্ষেত্রেই ব্যাঙ্ক কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ। এআইবিইএ অনুমোদিত ব্যাঙ্ক অব বরোদা এমপ্লয়িজ় ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রনীল মিত্র অভিযোগ করেন, ‘‘প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো তৈরি না করেই তড়িঘড়ি নতুন ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।’’
স্টেট ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ আবার দায় চাপিয়েছেন গ্রাহকদের উপরে। তাঁদের বক্তব্য, এনপিসিআইয়ের কিছু সমস্যা হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু গ্রাহকও চেক জমা দিতে দেরি করছেন। কথা ছিল সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টের মধ্যে যে সব চেক জমা পড়বে, সেগুলি তিন ঘণ্টার মধ্যে ক্লিয়ার হবে। কিন্তু অনেকে ৪টের পরে চেক জমা করছেন।
ব্যাঙ্ক কর্তাদের বড় অংশ অবশ্য বলছেন, ‘‘যে কোনও নতুন নিয়ম চালুর পরেই প্রাথমিক কিছু সমস্যা হয়। উৎকৃষ্ট এবং উন্নত ব্যবস্থা কার্যকর হওয়ার পরেও কিছু দিন যে সঙ্কট তৈরি হয়, তার উপরে কারও হাত থাকে না। এমনটা নতুন নয়। চেক ক্লিয়ারিং-এও সেটাই হয়েছে।’’ তাঁদের আশা, চলতি সপ্তাহের মধ্যেই সমস্যা কেটে গিয়ে নতুন ব্যবস্থাটি ঠিক মতো কাজ করতে শুরু করবে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)