Advertisement
E-Paper

ভাল-মন্দের মধ্যে দিশা খুঁজছে বাজার

গত সপ্তাহেই অস্থিরতা ফের গ্রাস করেছে সূচককে। ৩৫ হাজারের মায়া কাটিয়ে সেনসেক্স ফিরেছে ৩৪ হাজারে। মেদ ঝরেছে বহু মাঝারি মাপের সংস্থা (মিড-ক্যাপ) এবং ছোট মাপের সংস্থার (স্মল-ক্যাপ) শেয়ারের।

অমিতাভ গুহ সরকার

শেষ আপডেট: ২১ মে ২০১৮ ০২:৫৯

এক দিকে কিছু ভাল। অন্য দিকে কিছু মন্দ। তার মধ্যে দাঁড়িয়ে স্পষ্ট দিশার খোঁজ করে চলেছে বাজার। ভালর পাল্লা ভারী হলে কখনও সূচক এগিয়ে যাচ্ছে বেশ খানিকটা। আবার মন্দ চোখ রাঙালে একটানা পড়ে গিয়ে রক্তচাপ বাড়াচ্ছে লগ্নিকারীর।

এই যেমন গত সপ্তাহেই অস্থিরতা ফের গ্রাস করেছে সূচককে। ৩৫ হাজারের মায়া কাটিয়ে সেনসেক্স ফিরেছে ৩৪ হাজারে। মেদ ঝরেছে বহু মাঝারি মাপের সংস্থা (মিড-ক্যাপ) এবং ছোট মাপের সংস্থার (স্মল-ক্যাপ) শেয়ারের। এর কারণ দেশ-বিদেশের বেশ কিছু প্রতিকূল খবর। এগুলির মধ্যে অন্যতম—

• দক্ষিণের রাজ্য কর্নাটকে সরকার গড়া নিয়ে একের পর এক নাটক।

• বিশ্ব বাজারে ক্রমাগত বেড়ে চলা অশোধিত তেলের দর।

• তেল আমদানি খাতে খরচ বাড়ায় চওড়া হতে থাকা বাণিজ্য ঘাটতি।

• ডলারে টাকার দাম পড়তে থাকা।

• ডলারের দাম বাড়ায় আমদানি নির্ভর শিল্পে বিরূপ প্রভাব।

তবে সব থেকে চিন্তায় ফেলেছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির বিপুল অনুৎপাদক সম্পদ। অনেকে আবার তাতে সংস্থান করতে গিয়ে গত অর্থবর্ষের চতুর্থ ত্রৈমাসিকে ও পুরো বছরে লোকসানে পড়েছে। কারও ক্ষেত্রে কমেছে নিট মুনাফা (সঙ্গের সারণিতে দেওয়া হল অনুৎপাদক সম্পদ ও ক্ষতির পরিমাণ)। সরকার এই ব্যাঙ্কগুলিতে মোটা টাকা ঢাললেও, তা নিমেষে তলিয়ে যাচ্ছে।

বাজারকে অস্থির করে তুলছে আমেরিকা, চিন, ইরান এবং দুই কোরিয়ার মধ্যে সম্পর্কের উত্থান-পতনও। এখনও আতঙ্ক না-ছড়ালেও, দেশে খুচরো ও পাইকারি, দুই বাজারেই মূল্যবৃদ্ধির হার বেড়েছে এপ্রিলে। এতে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সুদ কমার সম্ভাবনাও কমেছে। বরং পণ্যমূল্য বাড়তে থাকলে সুদ বাড়ানোর পথে হাঁটতে পারে তারা। শিল্প এবং বাজারের পক্ষে এটা মোটেও ভাল খবর নয়।

বাজারের পক্ষে সুখের কথাও অবশ্য আছে। যার মধ্যে অন্যতম—

• এপ্রিলে ৫.২% রফতানি বৃদ্ধি।

• সোনা আমদানি ৩৩% কমা।

• ভাল বর্ষার আশা।

• সে আশায় ভর করে দেশের বেশ কিছু বড় সংস্থার মূলধনী পণ্যে (ক্যাপিটাল গুডস) লগ্নির পরিকল্পনা।

• গ্রামে ভোগ্যপণ্যের চাহিদা বাড়া। বছরটি ভোগ্যপণ্য সংস্থার পক্ষে ভাল যাবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।

গত সপ্তাহে বেরিয়েছে কিছু বড় সংস্থার আর্থিক ফল। ভাল করেছে আইটিসি। টাটা স্টিল, হিন্দুস্তান ইউনিলিভার ইত্যাদির মতো কিছু সংস্থা। তবে ২,১৮৯ কোটি টাকার লোকসানের খবর প্রকাশ করেছে বেসরকারি অ্যাক্সিস ব্যাঙ্ক। বিভিন্ন দিক থেকে এতগুলি ভাল এবং মন্দের চাপে বাজার কোনও স্পষ্ট দিশা দেখাতে পারছে না। তবে আশা, বড় মেয়াদে তা ভাল করবে।

এক দিকে ব্যাঙ্ক সুদে পতন এবং অন্য দিকে অস্থির শেয়ার ও বন্ড বাজার মানুষকে ধন্দে ফেলেছে লগ্নি করার সিদ্ধান্ত নিয়ে। যে কারণে এসআইপি-র পথে ফান্ডে লগ্নি মার্চে নজির গড়ে ৭,১১০ কোটি টাকা ছুঁলেও, এপ্রিলে নামে ৬,৬৯০ কোটিতে। বন্ড ফান্ডগুলির বৃদ্ধি নেমেছে তলানিতে। এই পরিস্থিতিতে মানুষ খুঁজছে এমন জায়গা, যেখানে কিছুটা হলেও নিশ্চয়তা আছে। আর তার সুযোগ নিতেই আকর্ষণীয় সুদে বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে বাজারে হাজির হতে চলেছে কয়েকটি সংস্থা।

চলতি সপ্তাহে বন্ড ইস্যু নিয়ে আসছে এক বেসরকারি গৃহঋণ সংস্থা। ইস্যুর আকার ছুঁতে পারে ১২,০০০ কোটি টাকা। ‘AAA’ রেটিং পেয়েছে এই ইস্যু। বিভিন্ন মেয়াদে এই বন্ডে সুদ ৮.৮%-৯.১%। প্রবীণরা পাবেন বাড়তি ১০ বেসিস পয়েন্ট। এ বছরে সংস্থাটি বাজার থেকে তুলতে চায় ৫০,০০০ কোটি। গত বছরের সংগ্রহ ছিল ৩৫,০০০ কোটি। বাজারে বন্ড ছাড়বে কিছু ব্যাঙ্ক নয় এমন আর্থিক প্রতিষ্ঠানও (এনবিএফসি)।

Indian Econom Finance Sensex Share Market
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy