সার্বিক ভাবে অর্থনীতিতে ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষণ দেখা গেলেও, তার সুবিধা মূলত সমাজের উপরতলার মানুষের মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে বলে সতর্ক করলেন অর্থনীতিবিদ তথা কেন্দ্রের প্রাক্তন মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা কৌশিক বসু। তাঁর মতে, দেশের তলার দিকের অর্ধেক মানুষ মন্দার মধ্যে জীবন কাটাচ্ছেন। করোনার আগেই তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বেকারত্বের হার ছুঁয়েছিল ২৩%। শ্রমিক, কৃষক এবং ছোট শিল্পেরও আয় কমছে। অথচ গত কয়েক বছর ধরে মূলত বড় শিল্পের দিকে তাকিয়েই বিভিন্ন নীতি এনেছে সরকার, যা দুঃখজনক। তাই বর্তমান অবস্থা পাল্টাতে খতিয়ে দেখে ঠিকঠাক নীতি আনার পক্ষে সওয়াল করেছেন তিনি। একই সঙ্গে গরিব, এমনকি মধ্যবিত্তের একাংশের হাতে ত্রাণ তুলে দেওয়ার পক্ষেও যুক্তি দিয়েছেন।
করোনার আবহেই চলতি অর্থবর্ষে ৯ শতাংশের বেশি হারে আর্থিক বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিচ্ছে কেন্দ্র, রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক-সহ বিভিন্ন মহল। এ দিকে, গত কয়েক মাস ধরে অস্বস্তিজনক জায়গায় রয়েছে খুচরো ও পাইকারি মূল্যবৃদ্ধি। এই অবস্থায় অর্থনীতিতে যে অসাম্য বাড়ছে, তা নিয়ে বহু দিন ধরেই সতর্ক করছে বিশ্ব ব্যাঙ্ক-সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান।
কৌশিকবাবুরও মতে, ‘‘১৫ বছর আগেও মূল্যবৃদ্ধি ১০% ছাড়িয়েছিল। কিন্তু তার তুলনায় এখনকার পরিস্থিতি আলাদা। সে সময়ে দেশের প্রকৃত বৃদ্ধি ছিল প্রায় ৯%। ফলে মূল্যবৃদ্ধি সত্ত্বেও গড়ে পরিবার পিছু আয় ৭% বা ৮% হারে বাড়ছিল।’’ কিন্তু গত দু’বছরে গড় মূল্যবৃদ্ধি ৫ শতাংশের কাছাকাছি রয়েছে। অথচ কমছে প্রকৃত আয়। তার উপরে গত অর্থবর্ষের ৭.৩% জিডিপি সঙ্কোচন হয়েছে। এ বছর কেন্দ্রের পূর্বাভাস ৯.২% হারে বৃদ্ধির। কিন্তু তাতেও প্রকৃত অর্থে গত দু’বছরে গড় বৃদ্ধি দাঁড়াবে ০.৬%। যা অবস্থাকে আরও সঙ্কটজনক করে তুলছে।